খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  কক্সবাজারের টেকনাফ সমুদ্র সৈকতে গোসলে নেমে নিখোঁজ দুই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
  সাবেক আইজিপি মামুনের ফের ৩ দিনের রিমান্ড

সাতক্ষীরায় খাস জমির ঘর ভেঙ্গে দেওয়ায় প্রতিকার চেয়ে আবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরায় কুড়ি বছর যাবত সরকারি খাস জমিতে ঘর বানিয়ে বসবাসকারী শ্যামনগরের ইসমাইলপুর গ্রামের রোকেয়া খাতুন তার ঘরটি ভেঙ্গে দেওয়ার প্রতিকার দাবি করেছেন। একইসাথে তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়ে তাকে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এসব ঘটনার প্রতিকার দাবি করে তিনি সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।

জেলা প্রশাসকের দপ্তরে দেওয়া লিখিত বক্তব্যে ইসমাইলপুর ভূমিহীন পল্লীর সাবুর আলীর বিধবা স্ত্রী রোকেয়া খাতুন বলেন, তিনি ও তার মতো দেড় শতাধিক ভূমিহীন পরিবার ওই এলাকায় সরকারি খাস জমিতে বসবাস করে আসছেন। এরই মধ্যে সরকার তাকে সহ অন্য অনেক ভূমিহীনকে আশ্রয়ন প্রকল্পে ঘর দিয়েছেন। আমার ঘরের লাগোয়া আগের ঘরটিতে আমার মেয়ে ও জামাই থাকে। নতুন ঘরটি এখনও ব্যবহার উপযোগী না হওয়ায় সেখানে আমি মাথা গুজে থাকি। তিনি জানান, গত ১৮ জুলাই ইসমাইলপুর ভূমিহীন পল্লীতে খুনের দায়ে চাকুরি থেকে বরখাস্তকৃত সাবেক সহকারী ভূমি অফিসার দেবাশীষ মুখার্জী ভূমিহীন এলাকায় যেয়ে চাঁদাবাজি করতে থাকে এবং চাঁদা দিলে আমাদেরকে ঘর দেওয়ার কথা বলে।

রোকেয়া খাতুন বলেন, তিনি শ্যামনগরের ইউএনও’র বাসায় গৃহকর্মী হিসাবে কাজ করতেন। কিন্তু করোনা উপসর্গ দেখা দেওয়ায় ইউএনও তাকে বাড়িতে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেন। এর কয়েকদিনের মাথায় ইউএনও নিজেই করোনা আক্রান্ত হন এবং তিনি আমাকে গৃহকর্মী হিসাবে সেবা দেওয়ার কথা বলেন। আমি করোনার আতংকে সে কাজে যেতে রাজী হইনি। এতে তিনি ক্ষুব্ধ হন।

রোকেয়া তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, গত ২৪ জুলাই তিনি কাজের জন্য ইউএনও’র বাসায় গেলে তাকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। পরদিন ২৫ জুলাই সকালে শ্যামনগরের ভূমি অফিসার মোহাম্মদ আলী ও বরখাস্তকৃত সহকারী ভূমি অফিসার দেবাশীষ মুখার্জী ১০-১২ জন লোককে নিয়ে দা, কোড়াল, খন্ত কোদাল নিয়ে আমার পুরনো ঘরটি ভেঙ্গেচুরে দেয়। এমনকি তারা আমার বৈদ্যুতিক সংযোগও বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে চলে আসে।

তিনি আরো জানান, ইউএনও ব্যক্তিগত আক্রোশে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। এসবের পরও ইউএনও’র পক্ষে শ্যামনগর থানায় আমার বিরুদ্ধে একটি জিডি করা হয়েছে। এই জিডির সূত্র ধরে ২৬ জুলাই রাতে একজন পুলিশ কর্মকর্তা আমার বাসায় যেয়ে আমাকে হুমকি দিয়ে বলেছেন, ‘তুমি ইউএনও’র কাছে গিয়ে ক্ষমা চাও, অন্যথায় মামলায় তোমাকে জেল খাটতে হবে’। অপরদিকে বরখাস্ত হওয়া সহকারী ভূমি কর্মকর্তা দেবাশীষ মুখার্জীও আমাকে হুমকি দিয়ে বলেছেন, ইউএনও সাহেব তোমার বিরুদ্ধে মামলা দেবেন। তোমাকে জেলে যেতে হবে। তুমি এসব বিষয় সাংবাদিকদের কেন বলেছো?

রোকেয়া খাতুন এসব কারনে আতংকিত উল্লেখ করে তিনি সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর দুটি পৃথক আবেদন করে এর প্রতিকার দাবি করেছেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শ্যামনগর থানার এ.এসআই শাহাবুল ইসলাম জানান, তিনি জিডির বিষয়টি জানানোর জন্য রাত ১০টায় রোকেয়াদের বাড়িতে গিয়েছিলেন। তাকে ইউএনও’র সঙ্গে সাক্ষাত করতে বলে এসেছেন।

তবে রোকেয়াকে উচ্ছেদের ঘটনায় শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুজার গিফারি বলেন, তাকে বসবাসের জন্য প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় একটি ঘর বরাদ্দ দেওযা হয়েছে। তা সত্ত্বেও তিনি সরকারের খাস জমির একাংশ দখল করে থাকায় সেখানকার ঘরটি ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে।

 

খুলনা গেজেট/এমএইচবি

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!