সাতক্ষীরায় গত ২৪ ঘন্টায় করোনা অত্রান্ত হয়ে একজন ও উপসর্গ নিয়ে দুই জনসহ তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২ ফেব্রুয়ারি তার মৃত্যু হয়। এ নিয়ে জেলায় ৩ ফেব্রুয়ারি বুধবার পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৮৯ জন এবং করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন মোট ৮০২ জন।
করোনা অক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তি হলেন, সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার রামনগর গ্রামের মৃত নাসির উদ্দিন সরদারের স্ত্রী হালিমা খাতুন (৭০) ও উপসর্গে মৃতরা হলেন, শ্যামনগর উপজেলার গোমনতলি গ্রামের মৃত হাসিম মোল্যার ছেলে আব্দুল গফুর (৮০) ও কালিগঞ্জ উপজেলার ভাড়াশিমলা গ্রামের বাছের আলীর ছেলে মুনসুর আলী (৮০)।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, করোনা আক্রান্ত হয়ে হালিমা খাতুন ও জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ করোনার নানা উপসর্গ নিয়ে আব্দুল গফুর এবং মুনসুর আলী গত ১ ফেব্রয়ারি সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২ ফেব্রুয়ারি ভোর রাত পৌনে ৬টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টার মধ্যে তাদের মৃত্যু হয়।
এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় সাতক্ষীরায় নতুন করে আরো ৮২ জন করোনা পজেটিভ সনাক্ত হয়েছে। এসময় র্যাপিড এন্টিজেন কীট ও সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালের আরটি পিসিআর ল্যাবে মোট ১৭০ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। শনাক্তের হার ৪৮ দশমিক ২৩ শতাংশ। এর একদিন আগে শনাক্তের হার ছিল ৪১ দশমিক ২৬ শতাংশ।
সামেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ করোনার নানা উপসর্গ নিয়ে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে মোট ৭১ জন রোগী। এর মধ্যে ২৩ জনের করোনা পজেটিভ ও বাকি ৪৮ জন সন্দেহজনক (সাসপেক্টেড)। নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (আইসিইউ) ভর্তি আছে ৮ জন।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডাঃ হুসাইন সাফায়াত জানান, গত ২৪ ঘন্টায় সাতক্ষীরা সামেক হাসপাতালের আরটি পিসিআর ল্যাবে ৭৩ টি নমুনা পরীক্ষা করে ৩৪ জনের করোনা সনাক্ত হয়। এছাড়া সদর হাসপাতাল সহ বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে র্যাপিড এন্টিজেন কীটে ৯৭ টি নমুনা পরীক্ষা করে আরো ৪৮ জনের করোনা সনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৪৮ দশমিক ২৩ শতাংশ।
তিনি আরো বলেন, জেলায় ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭ হাজার ৫৭১ জন। জেলায় মোট সুস্থ হয়েছেন ৬ হাজার ৯১২ জন। গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ্য হয়েছে ২২ জন। বর্তমানে জেলায় করোনা রোগী রয়েছে ৫৭০ জন। এর মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি করোনা রোগীর সংখ্যা ২৩ জন। বাড়িতে হোম আইসোলেশনে আছেন ৫৪৭ জন।
জেলায় প্রথম থেকে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৮৯ জন এবং উপসর্গে মারা গেছেন আরো ৮০২ জন। জেলায় গড় সংক্রমনের হার ২০ দশমিক ৮৫ শতাংশ।
সিভিল সার্জন আরো জানান, গত ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেলায় ১ লক্ষ ৬৩ হাজার ৩৯২ জন এস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন। আর দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ৯৪ হাজার ৯১৩ জন।
এদিকে সেনোফর্ম ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ৯ লক্ষ ১৫ হাজার ৫১৯ জন এবং দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ৮ লক্ষ ৫ হাজার ৭৭৩ জন। ফাইজার ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ২ লক্ষ ২৩ হাজার ৪৯ জন। দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ২৪ হাজার ৬৫০ জন। সিনোভ্যাক ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ১ লক্ষ ২৫ হাজার ৪৫০ জন। সিনোভ্যাক ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ৮ হাজার ১১৪ জন। এছাড়া এস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের বুষ্টার ডোজ গ্রহণ করেছেন ২৪ হাজার ৭২৮ জন এবং ফাইজার ভ্যাকসিনের বুষ্টার ডোজ গ্রহণ করেছেন ৯১ জন।
তিনি আরো জানান, সাতক্ষীরা জেলায় এপর্যন্ত প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে ১৪ লক্ষ ২৭ হাজার ৪১০ জনকে। দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে ৯ লক্ষ ৩৩ হাজার ৪৫০ জনকে এবং তৃতীয় ডোজ ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়েছে ২৪ হাজার ৮১৯ জনকে।
খুলনা গেজেট/এনএম