সাতক্ষীরায় গত ২৪ ঘন্টায় করোনা উপসর্গ নিয়ে তিন নারীসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালেচিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩ ফেব্রুয়ারি তাদের মৃত্যু হয়। এনিয়ে
জেলায় ৪ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারাগেছে ৮৯ জন এবং করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন মোট ৮০৬জন।
করোনা উপসর্গে মৃত ব্যক্তি হলেন, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ধুলিহরগ্রামের মৃত মোছাববর মোড়লের স্ত্রী ফাতেমা খাতুন(৬৫), কালিগঞ্জউপজেলার বরোয়া গ্রামের বিধান চন্দ্র দাসের স্ত্রী কনিকা মন্ডল(৪৪), আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া গ্রামের আহম্মদ আলীর স্ত্রী আছিরন
বিবি(৬০) ও শ্যামনগর উপজেলার গুমানতলী গ্রামের মৃত নাসিরউদ্দিীনেরছেলে কামরুজ্জামান(৫৫)। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, করোনা আক্রান্ত হয়ে হালিমা খাতুন
ও জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ করোনার নানা উপসর্গ নিয়ে গত ৩জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তারা সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ(সামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩ ফেব্রুয়ারি ভোর রাত পৌনে ১টা থেকে রাত সোয়া ৯টার মধ্যে মধ্যে বিভিন্ন সময় তাদের মৃত্যু হয়।এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় সাতক্ষীরায় নতুন করে আরো ৮৪ জন করোনা
পজেটিভ সনাক্ত হয়েছে। এসময় র্যাপিড এন্টিজেন কীট ও সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালের আরটি পিসিআর ল্যাবে মোট ১৫৯ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। শনাক্তের হার ৩০ দশমিক ১৯ শতাংশ। এর একদিন আগে শনাক্তের হার ছিল ৪৮ দশমিক ২৩ শতাংশ।
সামেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ করোনার নানা উপসর্গ নিয়ে ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে মোট ৬১ জন রোগী । এর মধ্যে ১৯ জনের করোনা পজেটিভ ও বাকি ৪২ জন সন্দেহজনক (সাসপেক্টেড)। নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (আইসিইউ) ভর্তি আছে ৮ জন।সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডাঃ হুসাইন সাফায়াত জানান, গত ২৪ ঘন্টায় সাতক্ষীরা সামেক হাসপাতালের আরটি পিসিআর ল্যাবে ৯৪ টি
নমুনা পরীক্ষা করে ২২ জনের করোনা সনাক্ত হয়। এছাড়া সদর হাসপাতাল
সহ বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে র্যাপিড এন্টিজেন কীটে ৬৫ টি নমুনা পরীক্ষা করে আরো ২৬ জনের করোনা সনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের
হার ৩০ দশমিক ১৯ শতাংশ।
তিনি আরো বলেন, জেলায় ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট করোনা আক্রান্ত
রোগীর সংখ্যা ৭ হাজার ৬১৯ জন। জেলায় মোট সুস্থ হয়েছেন ৬ হাজার
৯৩৭ জন। গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ্য হয়েছে ২৫ জন। বর্তমানে জেলায়
করোনা রোগী রয়েছে ৫৯৩ জন। এরমধ্যে হাসপাতালে ভর্তি করোনা
রোগীর সংখ্যা ১৯ জন। বাড়িতে হোম আইসোলেশনে আছেন ৫৭৪ জন।
জেলায় প্রথম থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে
মারা গেছে ৮৯ জন এবং উপসর্গে মারা গেছেন আরো ৮০৬ জন।
জেলায় গড় সংক্রমনের হার ২০ দশমিক ৮৫ শতাংশ।
সিভিল সার্জন আরো জানান, গত ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেলায় ১ লক্ষ
৬৩ হাজার ৯৬৫ জন এস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ
করেছেন। আর দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ৯৫ হাজার ৫৫৫ জন।
এদিকে সেনোফর্ম ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ৯ লক্ষ ১৬
হাজার ৬৩১ জন এবং দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ৮ লক্ষ ৭ হাজার ২৯৩
জন। ফাইজার ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ২ লক্ষ ২৩ হাজার
৪৯ জন। দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ২৪ হাজার ৮০০ জন।সিনোভ্যাক ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ১ লক্ষ ২৫ হাজার৪৫০ জন। সিনোভ্যাক ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ১৪হাজার ৯৮ জন। এছাড়া এস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের বুষ্টার ডোজ গ্রহণ করেছেন ২৬ হাজার ২৭৩ জন এবং ফাইজার ভ্যাকসিনের বুষ্টারডোজ গ্রহণ করেছেন ৯১ জন।
তিনি আরো জানান, সাতক্ষীরা জেলায় এপর্যন্ত প্রথম ডোজ
ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে ১৪ লক্ষ ২৯ হাজার ৯৫ জনকে। দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে ৯ লক্ষ ৪১ হাজার ৭৪৬জনকে এবং তৃতীয় ডোজ ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়েছে ২৬ হাজার ৩৬৪ জনকে।