সাতক্ষীরা পৌরসভার কামালনগর দক্ষিণপাড়া আহলে হাদিস জামে মসজিদের জমি সংক্রান্ত পুর্বের বিরোধ ও মসজিদের নামকরণ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব অব্যাহত রয়েছে। এক পক্ষের দাপটে মসজিদের জদিদাতা মোক্তার আলী এখন ওই মসজিদে নিয়মিত নামাজ আদায় করতে পারেন না। বিষয়টি সুষ্ঠু সমাধানের দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
এব্যাপারে মসজিদের জমিদাতা ও সাবেক কোষাধ্যক্ষ মোক্তার আলী বলেন, আমার দেওয়া জমিতে কামালনগর দক্ষিণপাড়া আহলে হাদিস জামে মসজিদ প্রতিষ্ঠাতা করা হয়। আহলে হাদীস যুব সংঘ সাতক্ষীরা জেলা শাখার সাবেক সভাপতি আলহাজ¦ মাওঃ আব্দুল মান্নানসহ নেতৃবৃন্দ মসজিদটি উদ্বোধন করেন এবং কমিটিতে কোধাষ্যক্ষ হিসেবে আমি ছিলাম। পরবর্তীতে কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবু হোসেন গোপনে মসজিদের নামকরণ তাদের ব্যবসায়ি প্রতিষ্ঠানের নামে আল বারাকা জামে মসজিদ করার চেষ্টা করতে থাকেন। বেশ কিছুদিন পর মসজিদের নামের ব্যাপারে কয়েকজন এলাকাবাসী আমার কাছে জানতে চায়, এটা কি আল বারাকা মসজিদ? তাদের জবাবে আমি বলি, এটা কামালনগর দক্ষিণপাড়া আহলে হাদিস জামে মসজিদ। এরপর আমি মসজিদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে নামের ব্যাপারে জানতে গেলে আবু হোসেন বলেন, আল বারাকা নামে হয় হোক। তাকে সমস্যা কোথায়? তখন আমি প্রতিবাদ করলে সেখান থেকে আবু হোসেন ভাই আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় অশ্লীল কথাবার্তা বলতে থাকে। এক পর্যায় আবু হোসেন ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রফিকুল আমাকে মসজিদ থেকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেয় এবং আমার বিরুদ্ধে নানান ষড়যন্ত্র শুরু করে। এখন আমি স্থানীয় অন্য মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়ি।
স্থানীয়দের মধ্যে আব্দুর রশিদ বলেন, এই মসজিদের পাশেই আমার বাসা। মোক্তার ভাই এই মসজিদের জমিদাতা ও প্রতিষ্ঠাতা। বর্তমানে মসজিদ কমিটির সভাপতি রফিকুল মাস্টার ও সাধারণ সম্পাদক আবু হোসেন মোক্তার ভাইকে মসজিদের প্রবেশ করতে দেয় না। তিনি আরো বলেন, একদিন মাগরিবের আজানের সময় মাইকে হট্রগোলের শব্দ শুনে এসে দেখি আজান দেওয়ার মাইক্রোফোন নিয়ে ধস্তাধস্তি করছে। এসময় রফিকুল মাস্টার ও আবু হোসেন মোক্তারকে আজান দিতে দেবে না এবং এই মসজিদের নামাজ পড়তে দেবেনা।
শিক্ষক আব্দুর রহমান বলেন, আমি এই মসজিদের নিয়মিত মুসুল্লি। বর্তমানে এই মসজিদের প্রধান সমস্যা হচ্ছে কতৃত্ব নিয়ে প্রতিযোগিতা। মসজিদের জামিদাতা মোক্তার আলী একজন নিরীহ ব্যক্তি। মসজিদে নামাজ আদায় করতে তাকে বাধা দেয়া হয়। এটা খুবই দুঃখজনক।
স্থানীয় সিরাজুল ইসলাম বলেন, মসজিদের জমিদাতার কোন স্বাধীনতা নেই। জমিদাতা মোক্তার ভাইকে এই মসজিদে আজান দিতে দেয় না এবং নামাজ পড়তেও বাঁধা দেওয়া হয়।
কামালনগর দক্ষিণপাড়া আহলে হাদিস জামে মসজিদের সভাপতি রফিকুল মাস্টার বলেন, এই মসজিদ নির্মাণের ব্যাপারে মোক্তার হোসেনের অবদান সবার চেয়ে বেশি। মসজিদে নামাজ পড়তে তার কোন বাঁধা নেই। আজান দেওয়ায় বাঁধা দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, মসজিদে আজান দেওয়ার জন্য মুয়াজ্জিন আছে। তিনি জোর করে আজান দিতে গেলে তখন আমরা বাঁধা প্রদান করি। কমিটিতে থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আবার যখন নতুন কমিটি হবে সকলের আলোচনার মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হবে।
মসজিদের সাধারণ সম্পাদক আবু হোসেন বলেন, মসজিদ করার সময় আমরা জমি কিনে নিয়েছিলাম। রেজিস্ট্রি খরচ বাঁচানোর জন্য দানপত্র করে জমি রেজিস্ট্রি করা হয়। এরপর মসজিদ কমিটি গঠন করে তাকে কোষাধ্যক্ষ রাখা হয়। বিভিন্ন সমস্যার কারণে এক পর্যায়ে মসজিদের পুরো দায়িত্ব মোক্তারকে দেওয়া হলেও সে চালাতে ব্যর্থ হয়। পরবর্তীতে উল্টোপাল্টা কার্যকলাপের জন্য তাকে কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়। এ বিষয়ে কয়েকবার বসাবসি হলেও মোক্তারের অভিযোগগুলো মিথ্যে বলে প্রমাণিত হয়।
খুলনা গেজেট/ টিএ