সাতক্ষীরা শহরের সাত্তার, কবির ও মনির গংদের বিরুদ্ধে জাল দলিল সৃষ্টি করে ভূমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (১১মার্চ) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে শহরের রসুলপুর এলাকার মোকছেদ আলীর ছেলে অধ্যাপক ডাঃ সহিদুর রহমান এই অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি দীর্ঘকাল ধরে সাতক্ষীরা জেলাসহ ঢাকায় গনমানুষের চিকিৎসা প্রদান করে আসছি। আমি ১৯৯৪ সালে আমার গ্রামে শহীদ স্মৃতি কলেজ ও নারী শিক্ষার প্রসারের লক্ষে বি.কে বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করি। ইসলামী শিক্ষা ও সাধারণ শিক্ষার সমন্বয়ে ক্যাডেট মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছি। ‘৭১ মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছি। আমি ২০১০ সালে সাতক্ষীরা শহরের রসুলপুর মৌজায় ২১৮, ২২৪, ২১৫, খতিয়ানে ২৬২ ও ২৬৩ নং দাগে ৩১ শতক সম্পত্তির মধ্যে ১৯শতক সম্পত্তি ক্রয় করি। এরপর থেকে স্থানীয় একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ আমার ক্রয়কৃত সম্পত্তি জালিয়াতির মাধ্যমে দখল করে রাস্তা তৈরির পায়তারা চালিয়ে যাচ্ছে। অথচ জমি ক্রয়ের দলিল এ বর্ণনা মতে উক্ত ৩১ শতক জমির মধ্যে মজিবুর রহমানের কাছ থেকে সাড়ে ১১ শতক ও আমার কাছে ১৯ শতক জমি বিক্রয় করে নিঃশর্ত হয়েছেন ইফতেখার জালাল গং। আধা শতক জমি তারা রাস্তায় দিয়েছেন যা দলিলে প্রমানিত রয়েছে। ইফতেখার জালালসহ ৪ ভাই এবং তাদের মা মোমেনা খাতুন ওই জমি বিক্রি করেন। আমি জমি ক্রয়ের ১ মাস পর গত ১১ বছর আগে ইফতেখার জালাল পাটিশান মামলা করেন। আদালতে তিনি নিষেধাজ্ঞা চেয়েছেন। আদালত কোন আদেশ দেই নাই। ইফতেখার জালাল সাতক্ষীরা সদর থানায় দায়েরকৃত অভিযোগে উল্লেখ করেছে ২১৮, ২২৪, ৫১৫ দাগ নং ২৬২ ও ২৬৩ জমির পরিমান ২৩ শতক যার মধ্যে মজিবর রহমানের কাছ ২ শতক ও আমার নিকট ১৯ শতক জমি বিক্রি করে। এটিও অসত্য তথ্য। তিনি বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছেন।
ডাঃ সহিদুর রহমান আরো বলেন, গত ২মার্চ সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে তিনি সংবাদ সম্মেলন করে জমি সংক্রান্ত যে তথ্য দিয়েছে তা অসত্য। বাস্তবতা বর্জিত। তিনি কোন জমির মালিক না। অথচ আদালতে পার্টিশান মামলা করেছেন। মামলাটি চলমান। এতে যদি রায় তার পক্ষে যায় তবে তিনি মালিক হবেন। এখন তিনি কোন পরিমান জমির মালিক না তাহলে তারা কিভাবে রাস্তার জন্য আমার জমি দখল করেন। বিষয়াটি তারা প্রতারনার পর্যায়ে নিয়ে আইন ও শান্তি শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন। আমার সম্পত্তি দখলের উদ্দেশ্যে গত ১৫ জানুয়ারি সকাল ৮টার দিকে উল্লেখিত ইফতেখার জালাল, ময়নুল আরেফিন, সাত্তার, কবির, মনির ভাড়াটিয়া বাহিনী নিয়ে জোরপূর্বক আমার ভূমিতে প্রবেশ করে প্রাচীর ভেঙ্গে এবং সীমান পিলার তুলে রাস্তা তৈরি করেছেন। এছাড়া গত ১৭ ফেব্রুয়ারি পুনরায় আমার সীমানা প্রাচীর ভাংচুর করেন। এপর গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সেই সংঘবদ্ধ চক্রটি সশস্ত্র অবস্থায় আমার সীমানার মধ্যে ঢুকে আমার বাসায় অবস্থানরত নজরুল ইসলাম মিলটন ও তার স্ত্রীর উপর হামলা চালায়। তাকে শারিরীকভাবে লাঞ্চিত করেন এবং খুন জখম করতে উদ্যাত হন। পাশে থাকা তার স্ত্রীর উপর চড়াও হন এবং তাকে ধর্ষন করার হুমকি প্রদর্শন করতে থাকেন। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। এছাড়া আমাকেসহ আমার লোকজনের হত্যাসহ মিথ্যে মামলায় জড়িয়ে হয়রানির হুমকি প্রদর্শন করেন। তাদের চলাচলের রাস্তা দিতে হবে এতে আমি কখনো আপত্তি করিনি। তাদের কাছে আমি ক্ষতি পূরণ চেয়েছি। আমার ক্রয়কৃত বৈধ সম্পত্তি পূরন করে দিতে বলেছি। এর কোনটাই তারা মানতে নারাজ, আমার ক্রয়কৃত ১৯ শতক জমির মধ্যে তারা ২ শতক দখল করে রেখেছেন।
তিনি এ সময় ওই ভূমিদস্যুদের কবল থেকে তার ক্রয়কৃত ১৯ শতক সম্পত্তি বুঝে পেতে এবং উক্ত চক্রান্তকারীদের হাত থেকে রক্ষা পেতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।