অবৈধভাবে নিজেদের নামে দোকান বরাদ্দ নেওয়ার প্রতিবাদ করা ও দুর্নীতির প্রশ্রয় না দেওয়ায় সাতক্ষীরার পৌরসভার দুই বারের নির্বাচিত মেয়র এর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন দশ কাউন্সিলর। কাউন্সিলরদের দুর্নীতির প্রমান মেয়রের হাতে আসায় নিজেদের রক্ষায় মিথ্যে অভিযোগ দিয়ে মেয়রকে হয়রানি করা হচ্ছে। রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন সাতক্ষীরা পৌর মেয়র তাজকিন আহম্মেদ চিশতি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মেয়র তাজকিন আহম্মেদ চিশতি বলেন, আমি ২০২১ সালের ১০ মার্চ টানা দ্বিতীয় মেয়াদেও জন্য মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করি। আমি পৌরসভার সকল স্তরের দুর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধে কার্যকরি পদক্ষেপ নিয়েছি। মূলত এর ফলেই স্বার্থান্বেষী মহলের ইন্ধনে গত ১৩ জানুয়ারি পৌরসভার ১০ জন কাউন্সিলর একত্রে আমার বিরুদ্ধে বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অভিযোগ দাখিল করেছেন। যেটির তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। কাউন্সিলরগণের অভিযোগের মধ্যে অন্যতম ক্ষমতা অপব্যবহার করে পৌর কর, ট্রেড লাইসেন্স, পানির বিল মহকুফ, করোনা মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্থ আবেদনকারী পৌরবাসীর কর মহকুফের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ, বাজার ও ব্যবস্থাপনায় অনিয়মের মাধ্যমে আর্থিক সুবিধা গ্রহণ, বাজেট ছাড়াই টেন্ডার ও আর্থিক সাহায্য প্রদান ইত্যাদি।
মেয়র চিশতি তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানান, ইতিপূর্বে দায়িত্বে থাকা পৌর মেয়রগণ ক্ষতিগ্রস্থ পৌরবাসীর কর মহকুফের জন্য দাখিলকৃত আবেদন গ্রহণ করে বিধিমতে ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় আমিও বিধিমতে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদনকারীদের দরখাস্ত দপ্তরে প্রেরণ করেছি। এছাড়া প্রতিটি কার্য পরিচালনার জন্য টেন্ডার কমিটি রয়েছে। টেন্ডার কমিটির মাধ্যমে ইজারা বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। যার আহবায়ক পদাধিকার বলে প্যানেল মেয়র-১ ও সদস্য একজন সহকারী পরিচালক স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। যাদের লিখিত সুপারিশে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। তদন্ত কর্মকর্তার কাছে মিথ্যে অভিযোগের ভিত্তিতে আমি স্বপক্ষের কাগজপত্রসহ দাখিল করেছি।
তিনি আরো বলেন, আমি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছি, জনগণের উন্নয়নের কাজ করাটাই আমার লক্ষ্য। মেয়র হিসেবে পৌর কর, ট্রেড লাইসেন্স, পানির বিল মওকুফ ইতিপূর্বে যে সব মেয়র ছিলেন তারাও করেছেন। আমিও পৌর বিধি অনুযায়ী এবং পূর্বের মেয়রদের সাথে সামঞ্জতা রেখেই অনুদান এবং বিল মওকুফ করেছি। কোন ধরনের অনিয়ম আমাকে স্পর্শ করতে পারেনি। তবে পৌরসভার কাউন্সিলরবৃন্দ আমার কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা আদায় করতে না পেরে ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন। আমি মনে করি কাউন্সিলরবৃন্দ যে অভিযোগ করেছেন, সেটি মেয়রের বিরুদ্ধে করেনি। সাতক্ষীরা পৌরসভার জনগণের বিরুদ্ধে করেছেন, নিজেদের বিরুদ্ধে করেছেন। বিশেষ করে পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৈয়দ মাহমুদ পাপা অনৈতিকভাবে নিজের নামে ৬টি দোকান বরাদ্দ নিয়েছেন। তার ভাগ্নে ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হিমেল তার বাবা এবং মায়ের নামে অনৈতিকভাবে আরো ২টি দোকান বরাদ্দ রেখেছেন। এর প্রতিবাদ করায় তারা আমার উপর ক্ষুদ্ধ। এছাড়া ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পৌর প্যানেল মেয়র(১) কাজী ফিরোজ হাসান দীর্ঘদিন ধরে আমাকে সরিয়ে নিজে ভারপ্রাপ্ত মেয়র হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। যাতে তারা পৌরসভায় অনিয়ম দুর্নীতির রাজত্ব কায়েম করতে পারেন। সে কারণে আমার বিরুদ্ধে গভীর চক্রান্ত করছেন তারা। আমি মেয়র থাকতে পৌরসভায় কোন অনিয়ম হতে দেবো না। তিনি এবিষয়ে সাতক্ষীরায় কর্মরত সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন।