সাতক্ষীরায় ৩ মাস ৭দিন কারাবাসের পর কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন রোহিঙ্গা শরণার্থী মোঃ রফিক। কক্সবাজার উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প থেকে পালিয়ে অবৈধভাবে ভারতে গিয়ে আবার বাংলাদেশে ফেরার সময় বিজিবি’র হাতে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন তিনি।
সাতক্ষীরা জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াসমিন নাহারের আদালত দোষ স্বীকার করার পর বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) তাকে খালাস প্রদান করা হয়। পরে শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) সাতক্ষীরা জেলা কারাগার হতে তাঁকে ছাড়পত্র দেয়া হয়। তাকে সহায়তা করেছেন বাংলাদেশ লিগাল এইড এন্ড সার্ভিসেস সেন্টার (ব্লাস্ট)-এর সাতক্ষীরা সমন্বকারী ও সাতক্ষীরা মানবাধিকার সংগঠন ‘নিজ অধিকার’ নিবার্হী পরিচালক এ্যাডভোকেট ড. দিলীপ কুমার দেব।
আদালত সূত্র জানায়, এবছরের ২ জুন অবৈধ পথে ভারতের হায়দ্রাবাদ থেকে পায়ের চিকিৎসা শেষে বাংলাদেশে প্রবেশকালে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার ভাদিয়ালী সীমান্ত হতে বিজিবি রোহিঙ্গা শরণার্থী মোঃ রফিককে আটক করে। মোঃ রফিক (৪৯) কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প-এর একজন রোহিঙ্গা শরণার্থী। বিজিবি মোঃ রফিককে আটক করার পর তাঁকে কলারোয়া থানায় সোপার্দ পূর্বক তাঁর বিরুদ্ধে ১৯৭৩ সালের বাংলাদেশ পাসপোর্ট আইনের ১১(১)(গ) ধারা মতে মামলা দায়ের করেন।
কারাগার থেকে মুক্তির পর রোহিঙ্গা শরণার্থী মোঃ রফিক জানান, তাঁর নিজ দেশ ছিল মায়ানমারের আরাকান প্রদেশের আইকাপ জেলার রুক থানার তব্রæ গ্রামে। ১৯৯১ সালে ওই অঞ্চলের মুসলিম ও হিন্দু স¤প্রদায়কে বৌদ্ধ প্রধান মায়ানমারের সামরিক জান্তারা বিতাড়িত করে। তারপর থেকে বিতাড়িত আরাকান মুসলিম ও হিন্দু স¤প্রদায় কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প-এ বসাবাস করে আসছেন।
মোঃ রফিক আরো জানান, তাঁর বাবার ২ হাজার বিঘা ও তাঁর নানীর ৪ হাজার বিঘা (রোহিঙ্গা ভাষায় বিঘাকে কানি বলে) জমি ছিল। এছাড়া তাঁর বাবার ১৫০ টি গরু ও ২শ’ টি মহিষ ছিল। সেসব ছেড়ে তাঁদের জীবন বাঁচাতে কক্সবাজার আশ্রয় নিতে হয়েছে। পরে ২০০৫ সালে কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প-এ এক দাঙ্গায় পুলিশের গুলিতে রোহিঙ্গা শরণার্থী মোঃ রফিকের ডান পা বিনষ্ট হয়ে যায়। এই পায়ের চিকিৎসার জন্য তিনি গত ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর ভারতের হায়দ্রাবাদে ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য বিনা পাসপোর্টে গিয়ে ছিলেন। মোঃ রফিকের ৩ জন মেয়ে ও ১ জন ছেলে।
খুলনা গেজেট/ টি আই