খুলনা, বাংলাদেশ | ৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  নিউইয়র্কে ছুরিকাঘাতে নিহত ২

সাংবাদিকতার প্রলোভন দেখিয়ে দশম শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণ, অভিযুক্ত আটক

অভয়নগর প্রতিনিধি

যশোরের অভয়নগর উপজেলার বহুল আলোচিত সাংবাদিক পরিচয়দানকারী কথিত সাংবাদিক মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে এবার স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ করে চাঁদাবাজীর অভিযোগ পাওয়া গেছে। দাবিকৃত চাঁদার টাকা না পেয়ে মাহাবুব ওই ভিডিও ইন্টারনেটে ফাঁস করে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সাংবাদিকতার কার্ড করে দেয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ করেছে বলে ভুক্তভোগী স্কুল ছাত্রীর পরিবারের দাবি। এ ঘটনায় পুলিশ কথিত সাংবাদিক মাহবুবুর রহমানসহ অনিক বাঘা নামে অপর এক সহযোগিকে আটক করেছে।

জানা গেছে, সাংবাদিকতার কার্ড করে দেয়ার কথা বলে ১০ম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের পর ভিডিও ধারণ ও অর্ধ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে! দাবিকৃত টাকা না দেয়ায় ভিডিও ফাঁসের অভিযোগে কথিত সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়। এ ঘটনায় সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাতে অভয়নগর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে নওয়াপাড়া এলাকা থেকে অভিযুক্ত ২ জনকে আটক করেছে। এ নিয়ে মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে ভুক্তভোগী ওই স্কুল ছাত্রীর মা বাদী হয়ে অভয়নগর থানায় ধর্ষণ ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। যার মামলা নং- ০৭, তাং- ০৭/০৯/২০২১ ইং।

আটককৃতরা হলো অভয়নগর উপজেলার চলিশিয়া গ্রামের বাশার মোড়লের ছেলে মাহাবুবুর রহমান (৪০) ও গুয়াখোলা গ্রামের নাসির বাঘার ছেলে অনিক বাঘা (২৬)।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, তার মেয়ে নওয়াপাড়ার একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১০ম শ্রেণির ছাত্রী ও সঙ্গীত শিল্পী। ছোট থেকেই মেয়েটির সাংবাদিকতা করার শখ। এটা জানতে পেরে মাহাবুব তাকে সাংবাকিতার কার্ড করে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি ও জন্মনিবন্ধনের কার্ড নেয়। এ সময় মাহবুব ওই শিক্ষার্থীর ফেসবুক আইডি নেয়। প্রায়ই তার সাথে ফেসবুক মেসেঞ্জারে নানা বিষয় নিয়ে কথা হতো। হঠাৎ করেই মাহাবুব মেসেঞ্জারে ওই শিক্ষার্থীকে সাংবাদিকতার ফরম পূরণ করার জন্য তার বাড়িতে যেতে বলে। ওই শিক্ষার্থী বাড়িতে যেতে রাজি না হওয়ায় ভীষণ ব্যস্ততা দেখিয়ে তাকে চলিশিয়া গ্রামে তার ঘেরের বাসায় যেতে বলে।

গত ২১ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে বেলা দেড়টার দিকে ওই স্কুল ছাত্রী সাংবাদিকতার ফরম পূরণের জন্য লম্পট মাহাবুবের ঘেরের বাসায় গেলে তাকে সেখানে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে মোবাইলে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে। এ ঘটনা কাউকে জানালে ধারণকৃত ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয়। পরবর্তীতে ওই ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন সময় ব্লাকমেইলিং করে তার সাথে অপকর্ম করতে বিভিন্ন স্থানে যেতে বলে। কিছুদিন পর মেয়েটিকে ভিডিও ডিলিট করার কথা বলে নওয়াপাড়া বাজারস্থ কাঁচাবাজারের পেছনের একটি স’মিলে নিয়ে অনিক বাঘার সহযোগিতায় পুনরায় ধর্ষণ করে মাহাবুব।

এ সময় সে ওই স্কুল ছাত্রীর কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। মেয়েটি চাঁদার টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় ভিডিও মেয়েটির বাবা ও ছোট বোনের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে পাঠায় এবং টাকা না দিলে ফেসবুকে ফাঁস করার হুমকি প্রদান।

অভয়নগর থানার অফিসার্স ইনচার্জ কে এম শামিম হোসেন আটক ও মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ধর্ষণ ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আটক দেখিয়ে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে এবং সঠিক তদন্তপূর্বক আইনগত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, মাহাবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে সাংবাদিকতার নাম ভাঙ্গিয়ে এবং নিজেকে বড় মাপের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে চাকরি দেয়ার নামে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া অসংখ্য প্রতারণা ও চুরির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তাছাড়া কমিউনিটি ব্যাংকিংয়ের ফাঁদ পেতে উপজেলার বহু অসহায় দরিদ্র মানুষকে পথে বসানোর অভিযোগ রয়েছে মাহাবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে। নাম সর্বস্ব পত্রিকার কার্ড ব্যবহার করে সে উপজেলাব্যাপী এ সকল অপকর্ম করার সুযোগ পেয়েছে বলে স্থানীয়দের দাবি।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!