সাতক্ষীরা শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের অতি দরিদ্রদের কর্মসৃজন কর্মসূচি প্রকল্পের ৩৫ লাখ টাকা হরিলুটের অভিযোগ উঠেছে। প্রতিকার চেয়ে এলাকাবাসীর পক্ষে শ্যামনগর উপজেলার সিংহড়তলী গ্রামের কাশেম গাজীর ছেলে গাজী জিয়াউর রহমান বাদি হয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের অতি দরিদ্রদের কর্মসৃজন কর্মসূচি প্রকল্পের আওতায় সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নে প্রথম দফায় ৪৪২ জন শ্রমিক ৪০ দিন কাজ করেন। এই ৪০ দিনের জন্য প্রতিটি শ্রমিকের মজুরি বাবদ ৮ হাজার টাকা করে বরাদ্দ। কিন্তু শ্রমিকদের দেয়া হয়েছে ৭ হাজার টাকা। দ্বিতীয় দফায় শ্রমিকদের দিয়ে কাজ না করিয়ে ভুঁয়া মাস্টার রোল তৈরি করে ৪৪২ জন শ্রমিকের জন প্রতি আট হাজার টাকা করে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা উত্তোলন করে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ প্রকল্প সভাপতি ইউপি সদস্য/সদস্যা এবং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা পরষ্পর যোগসাজসে আত্মসাৎ করেছেন। যা তদন্ত করলে প্রমাণিত হবে।
উল্লেখ্য, প্রথম দফায় কাজ শেষে শ্রমিকদের পেমেন্ট দেয়ার পর তাদের সকল জব কার্ড জমা নেন চেয়ারম্যানের কার্য সহকারি মোস্তফা সরদারসহ ইউপি সদস্যরা। ওই জব কার্ড ব্যবহার করে টাকা উত্তোলন করে সমুদয় টাকা আত্মসাৎ করেছেন উল্লেখিতরা। করোনাকালীন সময় অতি দরিদ্রদের কথা মানবিকভাবে বিবেচনা না করে সমুদয় টাকা আত্মসাতের বিরুদ্ধে সরেজমিনে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মুন্সিগঞ্জ এলাকাবাসী দাবি জানিয়েছেন।
চেয়ারম্যান দুর্নীতি দমন কমিশন বরাবর দেয়া অভিযোগের অনুলিপি বিভাগীয় কমিশনার খুলনা, জেলা প্রশাসক সাতক্ষীরা, সভাপতি/সম্পাদক জাতীয় প্রেসক্লাব ঢাকা, সভাপতি/সম্পাদক সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাব বরাবর ও প্রেরণ করা হয়েছে।
শ্যামনগর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ শাহিনুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, প্রত্যেক শ্রমিকের নামে ব্যাংকে একাউন্ট আছে। যার যার একাউন্টে টাকা জমা হয়। জব কার্ডের মাধ্যমে তারা ব্যাংক ম্যানেজারের মাধ্যমে নিজেরাই টাকা উত্তোলন করে থাকেন। একজনের টাকা অন্যজনের উঠানোর কোন সুযোগ নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুন্সীগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আবুল কাশেম মোড়ল বলেন, স্থানীয় মেম্বররা শ্রমিকদের জব কার্ডে আমার কাছ থেকে সত্যায়িত করে নেন। সুপারভাইজারের মাধ্যমে তারাই শ্রমিকদের হাজিরা মেইন্টেন করেন। উপজেলা ট্যাগ অফিসার এটি তদারকি করে থাকেন। হাজিরা অনুযায়ি শ্রমিকরা তাদের মজুরির টাকা ব্যাংকের একাউন্টের মাধ্যমে পেয়ে থাকে। কেউ কারো টাকা তুলতে পারে না। সামনে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষরা আমার বিরুদ্ধে এভাবে মিথ্যে অপপ্রচার করছে। আমি কোন ধরনের অনিয়মের সাথে যুক্ত নই। তারা অভিযোগ করলে তদন্ত হবে। তদন্ত হলে কোনটি সত্য কোনটি মিথ্যে তা প্রমাণিত হবে।
খুলনা গেজেট/এনএম