মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেছেন, সুষ্ঠু শারীরিক, বুদ্ধিবৃত্তিক, সামাজিক ও আবেগীয় বিকাশের জন্য শিশুদের জীবনের প্রথম আট বছর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে শিশুর শিক্ষা ও বিকাশের ভিত্তি রচিত হয়। শিশুর সঠিক প্রারম্ভিক বিকাশ মেধাসম্পন্ন জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ। জ্ঞান ও মেধাভিত্তিক জাতি গড়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শিশুবান্ধব সরকার শিশুর খাদ্য, পুষ্টি, স্বাস্থ্যসেবা, সুরক্ষা ও শিক্ষা নিশ্চিত করছে। গর্ভাবস্থা থেকেই মা ও শিশুর পুষ্টি নিশ্চিত করতে সরকার মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচি চালু করেছে। সমাজভিত্তিক সমন্বিত শিশু যত্ন কেন্দ্রের মাধ্যমে পাঁচ লাখ ষাট হাজার শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশ ও সুরক্ষা সুবিধা প্রদান করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী আজ (মঙ্গলবার) সকালে খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে বিভাগীয় প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর আয়োজিত মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচির বিভাগীয় পর্যায়ের অবহিতকরণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা সংবিধানে শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ১৯৭৪ সালে শিশু আইন প্রণয়ন করেন। দেশ স্বাধীনের পর পরই শিশুদের জন্য অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। শিশুমৃত্যু ও মাতৃমৃত্যু রোধ এবং প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র উদ্যোগ ও কার্যক্রম বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হচ্ছে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ৭ লাখ ৭০ হাজার দরিদ্র মা’র জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতা ও ২ লাখ ৭৫ হাজার কর্মজীবি মা’র জন্য ল্যাক্টেটিং মা ভাতা কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। সরকারের পনেরটি মন্ত্রণালয় শিশুকেন্দ্রিক বাজেট বাস্তবায়ন করছে।
খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মোঃ জিল্লুর রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ হাসানুজ্জামান কল্লোল ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফরিদা পারভীন। এসময় জাতীয় মহিলা সংস্থার নির্বাহী পরিচালক আবেদা আকতার, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফরিদা পারভীন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মোসাঃ ফেরদৌসী বেগম, নার্গিস খানম ও খুলনার জেলা প্রশাসক মোঃ মনিরুজ্জামান তালুকদার উপস্থিত ছিলেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সচিব মোঃ হাসানুজ্জামান কল্লোল বলেন, সরকার গর্ভাবস্থা থেকে মা ও শিশুর পুষ্টি ও সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে ভাতা প্রদান করছে। মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচিকে উন্নত ও মেধাসম্পন্ন জাতি গঠনে সরকারের একটি বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
কর্মশালায় জানানো হয়, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচির মাধ্যমে দেশের ১২ লাখ ৫৪ হাজার মা প্রতিমাসে ৮০০ টাকা হিসেবে ভাতা পাবেন। আগামীতে ভাতাভোগীর সংখ্যা ৬০ লাখে উন্নীত হবে। এ কর্মসূচির উপকারভোগী বাছাইয়ে শতভাগ স্বচ্ছতা রক্ষার চেষ্টা করা হয়।
কর্মশালায় খুলনা বিভাগের পাঁচ জেলায় কর্মরত জেলা প্রশাসন, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, সমাজসেবা অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, শিক্ষা ও কৃষি দপ্তরের কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।
পরে প্রতিমন্ত্রী বাগেরহাটের হযরত খানজাহান আলী (র:) এর মাজার জিয়ারত এবং নাগেরবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কিশোর-কিশোরী ক্লাব পরিদর্শন করেন।
খুলনা গেজেট/ টি আই