খুলনার উপকূলীয় অঞ্চল কয়রায় জ্বর, নিউমোনিয়া, অ্যাজমা ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। আক্রান্ত শিশুদের অধিকাংশের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ভর্তির পরামর্শ দিচ্ছেন ডাক্তাররা। তবে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোন শিশু বিশেষজ্ঞ না থাকায় মেডিকেল অফিসার দিয়েই চলছে চিকিৎসা সেবা। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিশু বিশেষজ্ঞ না থাকায় অধিকাংশ অভিভাবক শিশুকে নিয়ে ছুটছেন ১’শ কিলোমিটার দূরে খুলনা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে। ফলে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে জরুরি রোগী ও অভিভাবকেরা।
দুই মাসের শিশুকে ডায়রিয়া জনিত কারণে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এসেছেন উপজেলার কয়রা গ্রামের নুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, সপ্তাহে একদিন খুলনা থেকে একজন শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ সারাফাত হোসেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে রোগী দেখেন। তার কাছে চিকিৎসা নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ভর্তি করেছি। কিন্তু এখানে কোন শিশু বিশেষজ্ঞ নাই।
খাদিজা আক্তার বাগালি ইউনিয়নের বগা গ্রাম থেকে তার সন্তানের ডায়রিয়া জনিত কারণে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছেন। তার বাচ্চার শারীরিক অবস্থা আগের থেকে উন্নতি হয়েছে তবে এখানে কোন শিশু বিশেষজ্ঞ না থাকায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে তাকে।
মাহমুদা আক্তার তার বাচ্চার ডায়রিয়া জনিত কারণে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছেন। তিনি মহারাজপুর ইউনিয়নের শিমলার আইট গ্রাম থেকে এক সপ্তাহ ধরে তার বাচ্চাকে নিয়ে রয়েছেন। এখানে কোন শিশু বিশেষজ্ঞ না থাকায় তার বাচ্চার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি। তাই সে খুলনা থেকে আসা শিশু বিশেষজ্ঞ শারাফাত হোসেনকে দেখিয়ে হাসপাতালে রেখেছেন। তাকেও চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সুদীপ বালা খুলনা গেজেটকে বলেন, শিশু বিশেষজ্ঞ না থাকায় আমরা মেডিকেল অফিসার দিয়ে শিশুদের সেবা দিচ্ছি। তবে শিশুদের জটিল কোন সমস্যা হলে খুলনাতে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে অভিভাবকদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। তবে আমি আমার উদ্ধতন কতৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি এখানে শিশু বিশেষজ্ঞ দেওয়ার জন্য। তারাও চেষ্টা করছে।
খুলনা জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ সুজাত আহম্মেদ খুলনা গেজেটকে বলেন, প্রতিটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিশু বিশেষজ্ঞ দেওয়ার চেষ্টা করছি। দ্রুত শিশু বিশেষজ্ঞ দেওয়া হবে। তবে আমাদের যারা শিশুদের উপর প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত আছে তাদেরকে দিয়ে শিশুদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
খুলনা গেজেট/ এস আই