খুলনার পাইকগাছায় বৈরী আবহাওয়ায় কপোতাক্ষ নদ ও শিবসা নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে ঝুঁকিপূর্ণ ভেড়িবাঁধ ভেঙ্গে মাহমুদকাটির জেলেপল্লীসহ বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে কয়েকশত ছোটবড় মৎস্য ঘের। বহু বসত বাড়িতে ঢুকে পড়েছে লোনা পানি। রোববার (১৪ আগস্ট) দুপুরে শিবসার প্রবল জোয়ারে উপজেলার সোলাদানা ইউনিয়নের পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২৩নং পোল্ডারের বয়ারঝাঁপা এলাকার ভাঙ্গাহাড়িয়া নামক স্থানে প্রায় ৩০ ফুট ওয়াপদার বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে।
অন্যদিকে কপোতাক্ষের জোয়ারের পানিতে রামনাথপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানির চাপে ভাঙন আতংকে নির্ঘুম রাত কাটছে ওই এলাকার মানুষদের। স্থানীয়দের দাবি গত ২/৩ বছরে আগ্রাসী কপোতাক্ষের দফায় দফায় ভাঙনের মুখে বহু পরিবার হারিয়েছে শেষ সম্বল ভিটে মাটি। অনেকেই আবার বাধ্য হয়ে অন্যত্র চলে গেছে।
এ ব্যাপারে হরিঢালী ইউনিয়নের ৭নম্বর ওয়ার্ড সদস্য শংকর বিশ্বাস জানান, রোববার প্রবল জোয়ারের লোনা পানিতে মাহমুদকাটির জেলে পল্লীসহ রামনাথপুর এলাকার বহু ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়ে মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে।
সোলাদানা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, বৈরী আবহাওয়ায় রোববার দুপুরে জোয়ারের সময় শিবসা নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়ে বাধঁ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে কয়েকশত ছোটবড় মৎস্য ঘের তলিয়ে গেছে। আমরা এলাকাবাসী বাঁধের পাশে অপেক্ষা করছি, ভাঁটার সময়ে বাঁধ নির্মানের কাজে নেমে পড়বো।
তিনি খুলনা গেজেটকে বলেন, বাঁধ নির্মাণ সম্ভব না হলে রাতের জোয়ারে এ ইউনিয়নের প্রায় ৫ গ্রাম লোনা পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশংকা করছেন স্থানীয়রা।
সোলাদানা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান গাজী খুলনা গেজেটকে জানান, তার ইউনিয়ানাধীন শিবসা নদীর তীরবর্তী বয়ারঝাঁপার ভাঙ্গাহাড়িয়া নামক স্থানে ওয়াপদার দূর্বল ভেড়িবাধটি ভেঙে গিয়ে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তাৎক্ষণিক ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন তিনি। রাতে ভাটার সময় উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধায়নে তিনিসহ স্থানীয় এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে ক্ষতিগ্রস্থ ভেড়িবাধটির মেরামত করবেন এমন প্রস্তুতি নিয়েছেন তারা।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ রাজু হাওলাদার খুলনা গেজেটকে জানান, ওয়াপদার বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার খবরে পেয়ে তিনি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। সর্বশেষ উপজেলা প্রশাসনের তত্বাবধায়নে স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে সরবরাহকৃত প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি ব্যবহার করে ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধটি প্রাথমিকভাবে মেরামত করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ বেগম খুলনা গেজেটকে জানান, বৈরী আবহাওয়ায় শিবসা নদীর প্রবল জোয়ারের উগরে দেওয়া পানিতে পাউবোর ঝুঁকিপূর্ণ ওয়াপদার ভেড়িবাঁধ ভেঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধটির সংস্কারে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি পাঠানো হয়েছে। রাতে ভাঁটার সময় স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে বাঁধটির সংস্কারে কাজ শুরু করা হবে বলেও নিশ্চিত করেছেন তিনি।
খুলনা গেজেট/এমএম