অতিদরিদ্র শ্রমজীবী মানুষের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে পাচারকালে নারী ও শিশুসহ ৫৯ জনকে উদ্ধার করেছে র্যাব-৬। বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে র্যাব-৬ এর পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, খুলনা জেলার পাইকগাছা থানায় বসবাসরত দরিদ্র ও অসহায় খেঁটে খাওয়া সাধারণ মানুষের অসহায়ত্ব ও দারিদ্রতাকে পুঁজি করে একদল অতিলোভী ও দূষ্কৃতিকারী দেশের বিভিন্ন স্থানে মহাজনের নিকট শ্রমিকদের অমতে ব্যক্তিগত লাভের আশায় বিক্রি করে দেয়। বুধবার (২৬ অক্টোবর) রাতে একটি মানবপাচার চক্র পাইকগাছা থেকে নারী ও শিশুসহ ৫৯ জন দরিদ্র ও অসহায় মানুষকে নড়াইল জেলায় একটি ইটের ভাটায় কাজ দেওয়ার কথা বলে কৌশলে একটি বাসে আরোহণ করায়। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী শ্রমিকদের জিম্মি করে বাসটি নড়াইলে না গিয়ে খান জাহান আলী সেতু, খুলনা অতিক্রম করলে শ্রমিকরা বুঝতে পারে তাদের ফাঁকি দিয়ে অন্যত্র কোথাও নিয়ে যাচ্ছে। এক পর্যায়ে তারা জানতে পারে তাদেরকে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এবং অন্য মহাজনের নিকট বিক্রি করে দেওয়া হবে।
এ অবস্থায় অচেনা ইটের ভাটা এবং ওই এলাকার নিষ্ঠুর ও নির্মম অত্যাচারের কথা ভেবে তারা ভয় পেয়ে যায়। তারা প্রতিকূল স্থানে যেতে চায়না বিধায় বাসে অবস্থানরত নারী ও শিশুরা আতঙ্কিত হয়ে ডাক ও চিৎকার শুরু করে। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন বাসের ভিতরে চিৎকার ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির ব্যাপারে র্যাবকে খবর দিলে র্যাব-৬, খুলনার একটি আভিযানিক দল তড়িৎ গতিতে গাড়িটিকে অনুসরণ করে বাসটির গতিরোধ করলে এই মানব পাচার চক্রের ২ জন ব্যক্তি আটকসহ ভিকটিমদের উদ্ধার করা হয়।
ভিকটিমদের বক্তব্য এবং আটককৃত ব্যক্তিদের অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ করলে ঘটনার সত্যতা এবং ঘটনার সাথে আটককৃত ব্যক্তিদের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যায়। এই প্রেক্ষিতে গত ২৬ অক্টোবর রাত আনুমানিক সাড়ে ৭টার দিকে মানবপাচার চক্রের মূলহোতা মোঃ লিটন গাজী(৫৪) এবং অপর সহযোগী মোঃ সোহাগ গাজীকে(১৯) আভিযানিক দলটি গ্রেপ্তার করে। এই সময় আসামীদের কর্তৃক কৌশলে উচ্চ মুজুরিতে কাজ দেওয়ার নাম করে অসাধু উদ্দেশ্যে পাচারের প্রাক্কালে ১৯ জন নারী, ১৮ জন শিশুসহ মোট ৫৯ জন ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়।