রূপসা উপজেলার যুগিহাটি গ্রামের ভ্যান চালক এনামুল হত্যাকান্ডে ছেলে তানভীর ও প্রতিবেশী জুম্মানকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। তানভীরকে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির জন্য হাজির করা হলেও প্রাপ্ত বয়স না হওয়াতে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। হত্যাকান্ড নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, এনামুল মৃগী ব্যধিতে আক্রান্ত। তিন ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে যুগিহাটি গ্রামের শোলপুর এলাকায় বসবাস করত। এরমধ্যে স্ত্রী ছেড়ে চলে যায়। জুম্মান নিহতের প্রতিবেশী। একই সীমানায় উভয়ের বাড়ি হওয়ায় প্রায়ই কলহ বিবাদ লেগে থাকত তাদের। এক বছর আগে সে ভিকটিমকে মারধর করে।
এনামুলের অবর্তমানে জুম্মান নিয়মিত তানভীরের সাথে আড্ডা দিত। গত ৬ মে রাতে তাদের মধ্যে ঘনিষ্টতার বিষয়টি নিয়ে পিতা ও ছেলের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে সে জ্ঞান হারায়। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আসামি জুম্মান রাত পৌনে ১২ টার দিকে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। এরপর ভিকটিমের মাথার চুল ধরে ফ্লোরে আঘাত করতে থাকে। পরে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত পাথর দিয়ে মাথায় একাধিক আঘাত করা হয়। এ সময় তানভীর বাবার দু’পা চেপে রাখে। এরআগে ওই ট্যাংকির অনুকরণে আরও একটি ট্যাংকি নির্মাণ করা হয়। মৃত্যুর পর লাশ গুম করার জন্য ওখানে ফেলে দেওয়া হয়।
নিহতের বড় ভাই শেখ আলাউদ্দিন ভাইয়ের খোঁজ নিতে বাড়ি যান। তানভীরের কাছে জানতে পারেন ঢাকায় গেছে। এর আগে প্রচার হয় মায়ের মতো বাবাও তাদের ছেড়ে গেছে। ২৯ ডিসেম্বর বেলা ১২ টার দিকে ছোট ভাই নিয়ামুলে সাথে দ্বন্দ্ব বাঁধলে জুম্মানকে দিয়ে বাবার মতো হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেয়। এরপর ঘটনাটি এক কান থেকে দু’কান ও পরে এলাকার মানুষ বিষয়টি জানতে পারে। পুলিশকে জানানো হলে বৃহস্পতিবার জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তানভীরের দেখানো ট্যাংকি থেকে এনামুলের কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়। পরীক্ষার জন্য মর্গে পাঠনো হয়। সহযোগী হিসেবে জুম্মানকেও আটক করা হয়। আলাউদ্দিন দু’জনের নামে থানায় হত্যা মামলা করেন, যার নং ২৬।
শুক্রবার জুম্মানকে আদালতে হাজির করা হয়। তাকে ফাঁসানো হয়েছে এবং হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত নয় বলে দাবি করে সে।
রূপসা থানার অফিসার ইনচার্জ সরদার মোশারেফ হোসেন জানান, দু’জনই অভিযুক্ত। তানভীরের জবানবন্দি নেয়নি আদালত। বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দিচ্ছে সে। প্রকৃত আসামি জুম্মান। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কিছু স্বীকার করেনি। তবে রিমান্ডে নিলে মূল রহস্য জানা যাবে।
খুলনা গেজেট/ টি আই