দক্ষিণ জনপদের শিল্প ও বন্দর নগরী খুলনার গাঁ ঘেষে প্রবাহিত রূপসা নদীর পানির দূষণ কমছে না। নদীর দু’পাড়ে শিল্প কারখানার রাসায়নিক ও ক্ষতিকর পদার্থ মিশ্রিত অপরিশোধিত দূষিত বর্জ্য নদীতে পড়ায় পানি মারাত্মক দূষিত হচ্ছে। কাস্টমঘাট থেকে কাজীবাছা নদী পর্যন্ত ছয় কি:মি: পরিধির রূপসা নদী দিয়ে মংলা-নওয়াপাড়া পর্যন্ত প্রতিদিন পঞ্চাশ জলযানের বর্জ্য পানিতে পড়ছে।
কোরিয়া ভিত্তিক জার্নাল হিলন- এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে নগর কেন্দ্রিক নদীগুলোর ৪০ বছরের দূষণের চিত্রের রূপসা নদীর পানির এ অবস্থা ফুটে উঠেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্লাস্টিক বর্জ্য, গৃহস্থলী বর্জ্য, পয়:বর্জ্য, গ্রীজ, তেল ইত্যাদিতে পানি দূষিত হচ্ছে। খাদ্যের মাধ্যমে মাত্রাতিরিক্ত ভারী ধাতু মানবদেহে প্রবেশ করে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি সৃষ্টি করছে। শিল্প দূষণে জলজ প্রাণি ও উদ্ভিদের জন্য ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে বলে গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে। ফলশ্রুতিতে কেবল যে পরিবেশগত ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে তা নয়, বরং মানুষ সুপেয় পানির সংকটে পড়েছে। ব্যাহত হচ্ছে কৃষি ব্যবস্থা, হরিয়ে যাচ্ছে জলজ প্রাণি, মাছ ও জীব বৈচিত্র্য। নদীর দূষিত পানি পান করে গবাদী পশুর মৃত্যুর ঘটনাও ইতিপূর্বে ঘটেছে। দূষিত পানির মাছে জমাকৃত বিষাক্ত পদার্থ মানবদেহে প্রবেশ করে নানা রোগের সৃষ্টি করে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের এ প্রতিবেদন সম্পর্কে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি- বেলার আইনজীবী এস হাসানুল বান্না বলেন, বিষয়টি জাতীয় নদী কমিশনকে অবহিত করেছেন। জাতীয় নদী কমিশনের সচিব মঞ্জুরুল কাদের এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে খুলনা জেলা প্রশাসককে পরামর্শ দিয়েছেন। বেলার পক্ষ থেকে নদী দূষণকারী শিল্প মালিকদের আইনের আওতায় আনার দাবিও করেছে।
খুলনা গেজেট/ এসজেড