বহুদিন আগে একটা কথা শুনেছিলাম। পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক দলের মিছিলে বেশি যায় নাকি সংখ্যালঘুরা, চাকুরিতে সংখ্যাটা নিতান্তই কম। পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক খুনোখুনির শিকার হন সংখ্যালঘু মুসলিমরা, উন্নয়ন হয় না তাদের । চতুর্থ দফার ভোটে পশ্চিমবঙ্গে সেই ঘটনাটিই ঘটল। চতুর্থ দফার ভোটে পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারালেন যে চারজন, তাদের চারজনই কিন্তু সংখ্যালঘু মুসলিম।
তাদের কী নাম? এই নিহত চারজনের নাম মনিরুল, সামিরুল, আমজাদ ও হামিদুল। এই এত বড় খুনের ঘটনায় নির্বাচন কমিশন তার সত্যতা স্বীকার করেছেন। সঙ্গে সঙ্গে এও সাফাই দিয়েছেন যে, তারা নাকি কেন্দ্রীয় বাহিনীর বন্দুক কেড়ে বুথ দখল করতে যায় । তাই আত্মরক্ষার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী গুলি চালাতে বাধ্য হয়। প্রশ্ন, বুথের মধ্যে তারা কীভাবে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বন্দুক কাড়তে গিয়েছিল? এটা কিন্তু লাখ টাকার প্রশ্ন। কেউ তাদেকে এই কাজে মদত দিয়েছিল? বিভিন্ন সংগঠন এই ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছে। ব্যস ঐ পর্যন্তই।
পশ্চিমবঙ্গে পঁচিশ বছরের কংগ্রেস জমানা, বামফ্রন্টের চৌত্রিশ বছরের জমানা বা তৃণমূল কংগ্রেসের দশ বছরের জমানাতে যাবতীয় খুনোখুনি ও রক্তারক্তির শিকার কিন্তু সেই সংখ্যালঘু মুসলিম ও সংখ্যালঘু মুসলিম এলাকা । কিন্তু কেন? এর আগের তিন দফা ভোটে পূর্ব মেদিনীপুরের কেশপুর, নন্দীগ্রাম, পাশকুড়া, হুগলির আরামবাগ, খানাকুল, গোঘাট, জাঙিপাড়া, দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার ক্যানিং, বাসন্তী, মগরাহাট, ডায়মন্ডহারবার কমবেশি হলেও সন্ত্রস্ত হয়েছে। এগুলো সবই মুসলিম এলাকা। অর্থাৎ রাজনৈতিক দলগুলো ময়দানে নামিয়ে দিয়ে পুরো সরে দাঁড়াতে চায়। তারপর এরা পুলিস, সিআরপিএফ, বিএসএফ, মিলিটারিদের বন্দুকের নলের শিকার হয়। আজকের শীতলকুচির ঘটনা তারই একটি জ্বলন্ত উদাহরণ। সংখ্যালঘু ভোটকে সওয়ার করে অনেক রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসে। রক্তাক্ত তারাই হয়। রক্তাক্ত হয় তাদের এলাকা। আর কাজের বেলা লবডঙ্কা। এটাই শেষ কথা।
খুলনা গেজেট/এনএম