খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার শিশু তামিম মোল্লা (৭) হত্যাকান্ডের প্রায় ৯ মাস পর আসামি ওবাইদুল্লাহ ওরফে ওবাই শেখকে আটক করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গত ১৬ নভেম্বর বিকাল ৫টায় দিঘলিয়ার লাখোহাটি গ্রাম থেকে তাকে আটক করা হয়। বুধবার হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন ওবাই শেখ।
তিনি জানান, বলাৎকার করতে বাঁধা দেওয়া পানিতে চুবিয়ে তামিমকে হত্যা করা হয়। পরে তামিমের জামা-কাপড় দিয়ে হাত-পা বেধে লাশ বিলের মধ্যে ফেলে দেয়। খুলনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সাইফুজ্জামান এই জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
আটক ওবাইদুল্লাহ ওরফে ওবাই শেখ দিঘলিয়া উপজেলার লাখোহাটি গ্রামের আসলাম শেখের ছেলে। অন্যদিকে শিশু তামিম একই গ্রামের তরিকুল মোল্লার ছেলে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পিবিআই খুলনার পুলিশ পরিদর্শক আবদুুল্লাহ আল মামুন বিশ্বাস জানান, চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি বিকালে শিশু তামিম মোল্লা মাদ্রাসায় যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়। রাত সাড়ে ৮টায় তামিম ফিরে না আসায় তামিমের পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি ও মাইকিং করে। পরের দিন ২৬ ফেব্রুয়ারি লাখোহাটি গ্রামের গোয়ালাবাদ বিলের ভেতর হাত পা বাধা অবস্থায় তামিমের লাশ পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় তামিমের মা জাহানারা বেগম কলি বাদি হয়ে থানায় মামলা করেন। দিঘলিয়া থানা পুলিশ ওই সময় দুই জনকে আটক করলেও মামলার মূল রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি। থানা পুলিশের তদন্তে অগ্রগতি না হওয়ায় বাদির আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
পুলিশ পরিদর্শক আবদুুল্লাহ আল মামুন বিশ্বাস জানান, পিবিআই দায়িত্ব পাওয়ার পর অনুসন্ধান চালিয়ে ওবায়দুল্লাহ ওরফে ওবাইকে গত ১৬ নভেম্বর আটক করে। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ওবাই শেখ জানিয়েছে, ২৫ ফেব্রুয়ারি বিকালে এলাকায় ওবাই ও শিশুরা স্কুল মাঠে ফুটবল খেলছিলো। খেলার এক পর্যায়ে একজন ঢিল ছুড়লে ওবাই তাকে ধরতে বিলের দিকে দৌড় দেয়। শিশু তামিমও তার পিছু পিছু যায়। সেখানে গিয়ে ওবাই শেখ তামিমকে বলৎকারের চেষ্টা চালায়। তামিম চিৎকার করলে ওবাই শেখ বিলের মধ্যে তামিমকে পানিতে চুবিয়ে হত্যা করে। পরে মরদেহের মুখের মধ্যে কলাপাতা ঢুকিয়ে গায়ে থাকা কাপড় দিয়ে পেচিয়ে ডোবায় ফেলে দেয়। জিজ্ঞাসাবাদে ওবাই জানিয়েছে, এর আগে ৩টি ছাগলের সঙ্গে বলৎকার করে সেগুলো পানিতে ডুবিয়ে মেরে ফেলেছিল।
খুলনা গেজেট/ এস আই