খুলনা, বাংলাদেশ | ৩০ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১৫ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ট্রাকচাপায় শিশুসহ নিহত ৩
  বুধবার থেকে ডিমের নতুন দাম কার্যকর হবে : ভোক্তা ডিজি
  দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কঠোর হবে সরকার : শ্রম উপদেষ্টা
  এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ; পাশের হার ৭৭.৭৮

যৌক্তিকতা ও বাস্তবায়নযোগ্যতা নিয়ে আলোচনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির ‘রাষ্ট্র মেরামত’র ২৭ দফা রূপরেখা নিয়ে নানা আলোচনা চলছে রাজনৈতিক মহলে। এগুলো কতোটা বাস্তবায়নযোগ্য এবং বাস্তবধর্মী তা নিয়ে চলছে বিশ্লেষণ। বিএনপি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় কেন দাবিগুলো বাস্তবায়ন করেনি, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সার্বিকভাবে রূপরেখা নিয়ে বিশিষ্টজনদের ভাবনা তুলে ধরছে খুলনা গেজেট।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার খুলনা গেজেটকে বলেন, বিএনপির রূপরেখা নাগরিক বান্ধব ও কল্যাণকামী। দেশের সবচেয়ে বড় সংকট যে নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা, সে বিষয়ে পরিষ্কার বক্তব্য এসেছে। সার্বিকভাবে বলা যায়, ২৭ দফা রূপরেখায় নাগরিক আকাংখার প্রতিফলন ঘটেছে।

কিন্তু মূল সমস্যা হচ্ছে প্রতিশ্রুতি দেওয়া সহজ, কিন্তু বাস্তবায়ন করা কঠিন। খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় বলেছিলেন, আমরা ন্যায়পাল নিয়োগ করবো, কিন্তু তিনি করেননি। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিলো ন্যায়পাল নিয়োগ, কিন্তু তারাও করেনি। এখন আবার বিএনপি বলছে। আসলে প্রতিশ্রুতি কতোটা বাস্তবায়ন হবে তার ওপরই এই রূপরেখার সফলতা বা ব্যর্থতা নির্ভর করবে।

বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ট্রেজারার অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মাজহারুল হান্নান বলেন, রূপরেখার বিষয়গুলো অত্যন্ত ইতিবাচক, সময়োপযোগি ও তাৎপর্যপূর্ণ। যে দল এটি দিয়েছে, তা বাস্তবায়নের জন্য আগে তাদের জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় যেতে হবে, এরপর বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিতে হবে। এখন তারা মুখে বলছে, কিন্তু তখন যদি বাস্তবায়ন না করে তাহলে জনগণ দারুণভাবে হতাশ হবে।

তিনি বলেন, ঘোষিত বিষয়গুলো বাস্তবায়নে তাদের জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে। সব দল ও মতের মানুষকে এক করতে হবে। জনগণকেও সম্পৃক্ত করতে হবে। অন্যথায় এগুলো শুধু পত্রিকার পাতায় থেকে যাবে।

সচেতন নাগরিক কমিটি খুলনার আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট কুদরত ই খুদা বলেন, রাষ্ট্র মেরামতের দাবিগুলো যৌক্তিক। রাজপথের প্রধান বিরোধী দল হিসেবে বিএনপি অতীতের বেশিরভাগ দাবি-দাওয়ায় জনসম্পৃক্ততা কম ছিল। কিন্তু ২৭ দফা রূপরেখা ভিন্ন। এতে চলমান সংকটের সব কথাই এসেছে।

তিনি বলেন, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য, সব কালাকানুন বাতিল সবারই দাবি, সবাই এগুলো চায়। কিন্তু শুধু চাইলে তো হবে না। এজন্য জনগণের সম্পৃক্ততা প্রয়োজন। জনগণ এখন নানা সংকটে রয়েছে। তারপরও রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর তাদের আস্থার সংকট প্রকট। বিএনপি বা বিরোধী জোট সরকার গঠন করলে এসব দাবি বাস্তবায়ন করবে- তা নিয়ে বেশিরভাগ মানুষের সংশয় রয়েছে। এসব সংশয় দূর করে দাবির সঙ্গে জনগণের সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে।

বিশিষ্ট সাংবাদিক, লেখক ও গবেষক গৌরাঙ্গ নন্দী বলেন, সার্বিক প্রস্তাবনা ভালো তবে ‘রাষ্ট্র মেরামত’শব্দটি নিয়ে আমার আপত্তি রয়েছে। ২৭ দফা রূপরেখা নতুন তেমন কিছু নেই, দীর্ঘদিন ধরে বক্তৃতায় দাবি জানিয়ে আসা বিষয়গুলোয় আনুষ্ঠানিকভাবে স্থান পেয়েছে।

তবে কিছু বিষয় অস্পষ্টতা রয়েছে। যেমন জাতীয় সরকার ব্যবস্থা কি ধরনের হবে ? সেখানে কি সব দলের অংশগ্রহণ থাকবে ? বিশেষ করে আওয়ামী লীগের ? বড় একটি দলকে বাদ দিয়ে তো সব দলের অংশগ্রহণের সরকার বলা যাবে না। আবার সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে দলের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয় নিয়ে দৃঢ়তার পরিচয় দিতে পারেনি। তারা বলছে, এটি তারা পরীক্ষা-নিরিক্ষা করবে।

তিনি বলেন, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের কথা বলা হলেও কাদের নিয়ে গঠন হবে সেটা পরিষ্কার করা হয়নি। তারা কি গ্রহণযোগ্য বা দল নিরপেক্ষ হবেন ? কাউন্সিলের সদস্যদের মাপকাঠি কি হবে সেটি স্পষ্ট করা দরকার। এছাড়া আইসিটি অ্যাক্ট ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল, বিচার বর্হিভূত হত্যা বন্ধের বিষয়টি কতোটা বাস্তবায়ন করতে পারবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

খুলনা গেজেট/ এসজেড




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!