যশোরের বিভিন্ন এলাকায় ইজিবাইক, রিকসা ও ভ্যান চুরির ঘটনায় রবিউল সিন্ডিকেট জড়িত। সংঘবদ্ধ ওই চোর সিন্ডিকেটের অব্যাহত চুরিতে দিশেহারা মানুষের অভিযোগে বিভিন্ন সময় পরিচালিত পুলিশি অভিযানে ৬ বার আটক হয়েছে সিন্ডিকেট প্রধান শহরতলীর ডাকাতিয়ার রবিউল ইসলাম। এ সিন্ডিকেটের ডাকাতিয়া নুরপুরে কয়েকটি ডেরা ও তার বাড়িতে আরো কয়েকটি ডেরায় অভিযান চালিয়ে রিকসা, ভ্যান, ইজিবাইক, ব্যাটারি ও যন্ত্রাংশ উদ্ধার হয়েছে।
থানা, ডিবি পুলিশসহ বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, গত দুই বছরে যশোর সদর উপজেলাসহ জেলার বিভিন্ন স্পটে রিকসা, ভ্যান, ইজিবাইক, নসিমন করিমন মিলিয়ে দেড় শতাধিক চুরি সংঘটিত হয়। এর মধ্যে শতাধিক অভিযোগ জমা পড়ে বিভিন্ন থানায়। ডজন খানেক চুরি সংঘটিত হয় যশোর সদরের কাশিমপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে। ৮ নম্বর ওয়ার্ড ডাকাতিয়া গ্রামের আব্দুল মালেক পালোয়ানের বাড়িতে চুরি হয়, ডাকাতিয়ার সৈনিক বেলাল হোসেনের বাড়ি চুরি হয়। একই গ্রামের সংবাদকর্মী মোজাম্মেল হোসেন সোহাগের বাড়িতে চুরি হয়। নুর আলীর বাড়ির জানালার গ্রিল কেটে চুরি হয়। চোরেরা নিয়ে যায় এক ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন। গ্রামের এক বিধবা নারীর বাড়িতে গ্রিল কেটে দুই লাখ টাকার মালামাল চুরি হয়। ডাকাতিয়া দক্ষিণপাড়া কাঁঠালতলা জামে মসজিদের দুটি মোটর চুরি হয়। নরেন্দ্রপুর ইউনিয়নের একটি বাড়ি থেকে ৫টি গরু নিয়ে যায় চোরেরা। ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের শ্রীপদ্দি ঘোড়াগাছা গ্রামের রফিকুল ইসলামের বাড়ি থেকে গরুগুলো চুরি হয়। এ ঘটনায় রফিকুল ইসলামের ছেলে রায়হান উদ্দিন যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
এ ঘটনায় চোর রবিউল সিন্ডিকেটের দিকে নজরদারি শুরু করে পুলিশ। বছর খানেক আগে সিন্ডিকেটের ডাকাতিয়ার ডেরা ও রবিউলের বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। রাত দুটো থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত চলে অভিযান। এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে পরিচালিত অভিযানে এসআই ফজলুর রহমান রিকসা ভ্যান, ইজিবাইক ব্যাটারি, যন্ত্রাংশ মিলিয়ে ৫ লাখ টাকার চোরাই মাল উদ্ধার করেন রবিউলের ডেরা থেকে। ওই সময় একদফা ও এর আগে আরো ৪ দফা পুলিশের হাতে আটক হয় চোর রবিউল।
থানা ও ডিবি সূত্র জানিয়েছে, যশোরের এখন সংঘবদ্ধ চোরাই মালামাল বিক্রি সিন্ডিকেটের প্রধান রবিউল ইসলাম ও তার ভাই বিল্লাল চক্র। চোরাই ভ্যান, মোটর সাইকেল, ইজিবাইক চুরি ও বিকিকিনিই এই রবিউল চক্রের ব্যবসা। আগাম টাকা দিয়ে চোরদের চুরি করতে বলে। রাতের আঁধারে ওই ইজিবাইক, মোটরসাইকেল ও চুরি করা মালামাল অন্য জেলায় পাঠিয়ে দেয়। যন্ত্রপাতি খুলে একটির মালামাল অন্যটিতে লাগিয়ে আমূল পরিবর্তন আনে রিক্সা-ভ্যান ইজিবাইকে। অনেক সময় যাত্রী সেজে চালককে কিছু কিনতে পাঠায়। আর দোকানে গেলে গাড়ি চুরি করে সটকে পড়ে। জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলেও চুরি করে এই সিন্ডিকেটের সদস্যরা। বাঘারপাড়ায় চুরির অভিযোগে ৭ নভেম্বর রাতে তাকে আটক করে বাঘারপাড়া থানা পুলিশ। তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ৮ নভেম্বর আদালতে চালান দিয়েছে পুলিশ।
বাঘারপাড়া থানার এসআই সালাউদ্দিন জানিয়েছেন, চোর রবিউল ইসলামকে নুরপুর এলাকা থেকে আটক করা হয়। তার দেয়া তথ্যে মণিরামপুরের রাজগঞ্জ এলাকা থেকে ৩টি চোরাই ভ্যান উদ্ধার করা হয়। আসামির সহযোগীদের আটকের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
খুলনা গেজেট/কেডি