যশোরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপদে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতের ব্যবস্থা করছে সরকার। যানবাহনপূর্ণ মহাসড়ক পার হয়ে স্কুলে যাবার জন্য ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করা হবে।
হাইওয়ের পাশে যেসব বিদ্যালয় রয়েছে সেখানে ব্রিজ নির্মিত হবে। এ জন্য যশোর জেলার ১০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামের তালিকা করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠিয়েছে জেলা যশোর শিক্ষা অফিস। এ ১০টি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণে ব্যয় হবে ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানিয়েছে, যশোর জেলার তিন উপজেলার মহাসড়কের পাশে স্থাপিত ১০ বিদ্যালয়ের ৩ হাজার ৯৮৪ খুদে শিক্ষার্থীর চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ। এসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তালিকা করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। এরমধ্যে যশোর সদরের ঢাকা-মাগুরা, যশোর-ঝিনাইদহ ও যশোর-খুলনা মহাসড়কের পাশে চারটি স্কুল রয়েছে। ঢাকা-মাগুরা সড়কের পাশে রয়েছে উপশহর শহীদ স্মরণী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বাহাদুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
এ দুটি স্কুলের পাশে ঢাকা-মাগুরা মহাসড়ক হওয়ায় শিক্ষার্থীরা একা আসা যাওয়া করতে পারে না। অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের স্কুলে দিয়ে যান ও নিয়ে যান। স্কুল ছুটি হলে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের শিক্ষকরা রাস্তা পার করে দেয়ার পর তারা বাড়ি যায়। এ দুটি স্কুলের পাশে ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০ মিটার করে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। একইভাবে চুড়ামনকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চাঁচড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০ মিটার করে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করা হবে।
এছাড়া, অভয়নগরের প্রেমবাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে ৩০ মিটার ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের সম্ভাব্য ব্যয় ৬০ লাখ টাকা, রাজঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে ৩০ মিটার ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের সম্ভাব্য ব্যয় ৬০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
ঝিকরগাছার লাউজানি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে ৫০ মিটার ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণে সম্ভাব্য ব্যয় ৫০ লাখ টাকা, ঝিকরগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে ৫০ মিটার ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণে সম্ভাব্য ব্যয় ৫০ লাখ টাকা, নাভারণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে ৫০ মিটার ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণে সম্ভাব্য ব্যয় ৫০ লাখ টাকা, নবীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে ৫০ মিটার ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণে ৫০ লাখ টাকা সম্ভাব্য ব্যয় হবে।
যশোর সদরের বাহাদুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসরিন জাহান বলেন, তার বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিবিঘ্নে রাস্তা পার হয়ে আসতে পারে না। স্কুলের সময় শিক্ষকরা রাস্তায় দাড়িয়ে দুই ধারে লাল ফিতা বেধে মাঝ খান দিয়ে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে নিয়ে আসে। ছুটি হলে একইভাবে শিক্ষার্থীদের রাস্তা পার করে দেয়া হয়। এ কারণে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করা হলে শিক্ষার্থীদের জন্য ভাল হবে। তারা নিবিঘ্নে স্কুলে আসতে পারবে।
উপশহর শহীদ স্মরণী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহাজাদ হোসেন বাবু বলেন, সরকারের এ উদ্যোগ ভাল। শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাতায়াত করতে কোন সমস্যা হবে না।
এ বিষয়ে জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আমজাদ হোসেন বলেন, যশোরের এ তালিকা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। যে বিদ্যালয়ের সামনে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা মনে করবে, সেখানে নির্মাণ করা হবে। শিক্ষা প্রকৌশল অফিস থেকে ফুটওভার ব্রিজের মাপ ও সম্ভাব্য ব্যয়ের হিসাব জানা গেছে।