যশোরে হত্যা ও মাদকের দুটি মামলায় দুই আসামির যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও অর্থদন্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার যশোরের পৃথক দুটি আদালত দুই আসামির বিরুদ্ধে এ রায় ঘোষণা করেন। একই সাথে একজনকে খালাস প্রদান করা হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালের ১৩ জুলাই সকালে বেনাপোল পুটখালী রহমতপুর গ্রামের একটি কবরস্থান থেকে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালক হাবিবুর রহমান হবির ক্ষত বিক্ষত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। হাবিবুর পাটবাড়ি গ্রামের সাজ্জাদ আলীর ছেলে। এ ঘটনায় অজ্ঞাত আসামি করে বেনোপাল পোর্ট থানায় মামলা করেন হাবিবুরের ভাই আনোয়ার হোসেন। মামলায় উল্লেখ করেন, ১২ জুলাই রাত ১০টার পর বাড়ি থেকে বের হন হাবিবুর, এরপর তার কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি।
মামলার তদন্তে উঠে আসে, হবির পালক সন্তান বেনাপোল পাটবাড়ি গ্রামের আবুল কালামের ছেলে রানা ও রানার শ্যালক পরিকল্পিতভাবে হবিকে খুন করে। আটক রানার আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিতে উঠে আসে, রানার স্ত্রীকে হাবিবুর রহমান হবি প্রায় কুপ্রস্তাব দিতেন। এতে রাজি না হওয়ায় হবি ক্ষতির চেষ্টা করতে থাকেন। সর্বশেষ ১২ জুলাই সকালে রানা বাড়িতে না থাকার সুযোগে তার স্ত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। পরে রানা বাড়িতে এসে তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন। এরই জেরে রানা ও জসিম পরিকল্পিতভাবে হবিকে ডেকে নিয়ে হত্যা করে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বেনাপোল পোর্ট থানার এসআই ওমর শরীফ ২০০৯ সালের ৩১ জানুয়ারি ওই দু’জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন।
এ মামলায় স্পেশাল জজ মোহাম্মদ সামছুল হক রানাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদন্ডের আদেশ দেন। এছাড়া অপর আসামি জসিমকে খালাশ প্রদান করেন। রায় ঘোষণার সময় আদালতের স্পেশাল পিপি সাজ্জাদ মোস্তফা রাজা উপস্থিত ছিলেন। সাজাপ্রাপ্ত রানা বর্তমানে পলাতক রয়েছেন।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ২৮ অক্টোবর সকাল সাড়ে সাতটায় ডিবি পুলিশ মণিরামপুরে অবস্থানকালে জানতে পারেন যোগীপোল গ্রামে এক ব্যক্তি হেরোইন বিক্রি করছে। ডিবি পুলিশ তাৎক্ষনিক ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে যোগীপোল গ্রামের মৃত নওয়াব আলীর ছেলে শহিদকে আটক করে। এসময় তার দেহ তল্লাশি করে হাতে থাকা একটি প্লাস্টিকের ব্যাগ থেকে ৫শ’ গ্রাম হোরোইন উদ্ধার করে। এ ঘটনায় মণিরামপুর থানায় মামলা করেন ডিবির এসআই সেকেন্দার আবু জাফর। মামলাটি তদন্ত করে ২০১৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর ডিবির এসআই আবুল খায়ের মোল্লা আদালতে চার্জশিট জমা দেন।
মঙ্গলবার এ মামলার রায় ঘোষনা করে আদালত। অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবু বকর সিদ্দিকি আসামি শহিদকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও পাঁচ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেন। এসময় অতিরিক্ত পিপি নজরুল ইসলাম বকুল উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়া হয়।