যশোরে স্ত্রী হত্যা মামলায় স্বামীর যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। বুধবার স্পেশাল জজ (জেলা জজ) মোহাম্মদ সামছুল হক এ আদেশ দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মোফাজ্জেল হোসেন মন্টু শার্শা উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের গোলাম হোসেনের ছেলে। নিহত স্ত্রী সাফিয়া খাতুন একই গ্রামের হযরত আলীর মেয়ে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের স্পেশাল পিপি সাজ্জাদ মোস্তফা রাজা।
আদালত সূত্র জানায়, ২০০০ সালে আসামি মোফাজ্জেল হোসেন মন্টু ফুসলিয়ে সাফিয়া খাতুনকে বিয়ে করেন। যা সাফিয়ার পরিবারের লোকজন জানতেন না। প্রথমে তাদের বিয়ে মেনে না নিলেও এক পর্যায়ে সাফিয়ার পরিবার বিয়ের বিষয়টি মেনে নেয়। এদিকে, বিয়ের কয়েকদিনের মাথায় সাফিয়ার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে মন্টু। পরে সাফিয়া তার পরিবারকে বিষয়টি জানায়। এ বিষয়ে মেয়ের পরিবার নিষেধ করলেও মন্টু সাফিয়ার উপর নির্যাতন অব্যাহত রাখেন। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে সালিশ হলেও মন্টু একই কাজ করতে থাকেন। এরইমাঝে ২০০২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে সাফিয়ার পরিবার জানতে পারে তার মেয়ে মারা গেছেন। তাৎক্ষনিক তারা মন্টুর বাড়িতে গেলে তাদেরকে জানানো হয় সাফিয়া নিজে আত্মহত্যা করেছেন। পরে তার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। পরে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উঠে আসে সাফিয়া আত্মহত্যা করেনি, তাকে মারপিট ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার পরই সাফিয়ার মা কদবানু বাদী হয়ে ২০০২ সালের ৫ ডিসেম্বর জামাই মন্টুর বিরুদ্ধে শার্শা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলাটি তদন্ত করেন এসআই লিয়াকত হোসেন। তার তদন্তেও উঠে আসে সাফিয়াকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি ২০০২ সালের ২০ ডিসেম্বর আদালতে মন্টুকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট জমা দেন। সর্বশেষ বুধবার এ মামলার রায় ঘোষণা করেন বিচারক। এতে সাক্ষ্য প্রমাণে হত্যা প্রমাণিত হওয়ায় আদালত আসামি মন্টুকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন। দণ্ডপ্রাপ্ত মন্টু পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।