যশোর সদরের মোমিনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি ও জালিয়াতির মামলায় আত্মসমর্পণকারী প্রধান শিক্ষক রেজাউল হক মালিথাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার আসামির জামিন আবেদনের শুনানি শেষে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ ইখতিয়ারুল ইসলাম মল্লিক এ আদেশ দেন। রেজাউল ইসলাম মালিথা ঝিনাইদহ সদরের গোপালপুর গ্রামের মৃত আইউদ্দিনে ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের পিপি অ্যাডভোকেট আশরাফুল আলম বিপ্লব।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, মোমিননগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে ২০২০ সালের ২ ফেব্রæয়ারি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলা করেছিলেন অভিভাবক সদস্য বোলপুর গ্রামের আব্দুল ওহাব আলী। মামলায় আসামি করা হয়েছিল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন ও প্রধান শিক্ষক রেজাউল হক মালিথাকে। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছিল, প্রধান শিক্ষক প্রথমে একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন স্থানীয় একটি পত্রিকায়। পরবর্তীতে তিনি কোন পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি না দিয়ে জালিয়াতি করে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি তৈরি করে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন।
আদালতে তৎকালিন বিচারক অভিযোগটি গ্রহণ করে দুর্নীতি দমন কমিশনকে তদন্তের আদেশ দিয়েছিলেন। এ মামলার তদন্ত শেষে দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তা সহকারী পরিচালক মোশাররফ হোসেন ৬ জনকে অভিযুক্ত ও একজনের অব্যাহতি চেয়ে গত ৪ জুলাই জেলা ও দয়রা জজ আদালতে চার্জশিট জমা দেন।
অভিযুক্ত আসামিরা হলো বিদ্যালয়ের প্রাধন শিক্ষক রেজাউল হক মালিথা, নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব জিলা স্কুলের তৎকালিন প্রধান শিক্ষক ফরিদুল ইসলাম, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কামরুজ্জামান মোঃ জাহাঙ্গীর হোসাইন মিঞা, মোমিননগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক ইসহক আলী, সহকারী প্রধান শিক্ষক নারায়ন চন্দ্র বিশ্বাস ও সহকারী শিক্ষক ইমদাদুল হক। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ না পাওয়ায় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের অব্যাহতির আবেদন করা হয় চার্জশিটে।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ চার্জশিটের উপর শুনানি শেষে শহিদুল ইসলামকে অব্যাহতি ও অপর আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট গৃহীত করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন। এ বিষয়টি জানার পর উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও জিলা স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক আদালতে আত্মসমর্পণ করে অন্তবর্তী জমিন নিয়েছেন। মঙ্গলবার প্রধান শিক্ষক রেজাউল ইসলাম মালিথা আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। বিচারক আসামির জামিন আবেদনের শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।