আর্থিকভাবে লাভবান হবার উদ্দেশ্যে এবং নেতৃত্ব দখলের জন্য পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয় যশোরের তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) আব্দুল কাদের ওরফে লাভলীকে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের এসআই মফিজুল ইসলামের তদন্তে উঠে এসেছে এসব তথ্য। তদন্ত শেষে পাঁচ জনকে অভিযুক্ত করে তিনি আদালতে এ চার্জশিট জমা দিয়েছেন।
অভিযুক্তরা হলেন, সদর উপজেলার দোগাছিয়া গ্রামের মৃত আনসার গাজীর ছেলে জিয়াউর রহমান, তার ছেলে শাকিল পারভেজ, ঝাউদিয়া গ্রামের শাহাজুল বিশ্বাসের ছেলে মেহেদী হাসান, খোলাডাঙ্গা গাবতলা গ্রামের শেখ মুজিবরের সন্তান তৃতীয় লিঙ্গের নাজমা ওরফে নাজমা হিজড়া ও মৃত লাল মিয়ার সন্তান সেলিম ওরফে সেলিনা হিজড়া। এরমধ্যে তৃতীয় লিঙ্গের নাজমা অভিযুক্ত জিয়াউর রহমানের দ্বিতীয় স্ত্রী।
মামলার তদন্তকালে ডিবি পুলিশ জানতে পারে, লাভলী হত্যাকান্ডের মাস্টারমাইন্ড নাজমা হিজড়ার স্বামী জিয়াউর রহমান। আর্থিকভাবে লাভবান হবার উদ্দেশ্যে এবং নেতৃত্ব দখলের জন্য পরিকল্পিতভাবে লাভলীকে হত্যা করা হয়। খোলাডাঙ্গা এলাকার হিজড়া সম্প্রদায়কে নেতৃত্ব দিতেন লাভলী এবং তিনি আয়কৃত অর্থের মোটা অংশ নিতেন। এ কারণে তাকে হত্যা করে স্ত্রী নাজমাকে তদস্থলে বসিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হতে চেয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। আর এ হত্যা পরিকল্পনার সাথে যুক্ত ছিলেন নাজমা ও সেলিনা।
মামলা সূত্রে জানা যায়, শহরের বেজপাড়ার মৃত আব্দুল করিমের সন্তান তৃতীয় লিঙ্গের লাভলী ধর্মতলা এলাকায় বসবাস করতেন। চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তিনি সঙ্গী নাজমা ও সেলিনাকে নিয়ে ইজিবাইকে করে ছুটিপুর সড়ক দিয়ে কায়েমখোলার দিকে যাচ্ছিলেন। পথে দেয়াড়া ইউনিয়নের নারাঙ্গালীতে পৌঁছালে লাভলীকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি চালায় সন্ত্রাসীরা। লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় তারা চাকু দিয়ে লাভলীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। পরে গলা কেটে লাভলীকে হত্যা করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ সেখান থেকে তার লাশ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় নিহতের বোন সেলিনা খাতুন কোতয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন। এরপর ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে জড়িত ৪ জনকে আটক করে। তাদের কাছ থেকে উঠে আসে লাভলী হিজড়াকে হত্যা করার জন্য জিয়াউর রহমানের ছেলে শাকিলকে একটি পিস্তল ও একটি চাকু দেয়। পিস্তল দিয়ে গুলি করার চেষ্টা করলে গুলি বের না হওয়ায় চাকু দিয়ে পিঠে ও গলায় পোচ দিয়ে লাভলীকে হত্যা করা হয় বলে আটককৃতরা স্বীকারোক্তি দেয়।
খুলনা গেজেট / আ হ আ