খুলনা, বাংলাদেশ | ৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ৭ দিনের জন্য আন্দোলন স্থগিত করেছেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা
  ইউনাইটেড হাসপাতালের চেয়ারম্যানসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
  ৪০তম ব্যাচের ক্যাডেট এসআইদের সমাপনী কুচকাওয়াজ স্থগিত
বিএনপির ২৮ নেতাকর্মী আটক

যশোরে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অমিতের গাড়ি ও বাড়ি ফের ভাঙচুর

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

যশোরে বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের বাড়িতে রোববার বিকেলে ফের হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। বিএনপির অভিযোগ বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে যুবলীগের কতিপয় সদস্য ও পুলিশের উপস্থিতিতে এ হামলা চালানো হয়। এসময় তার বাসভবনের সামনে থেকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। হামলা চলাকালে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত ও তার মা যশোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক নার্গিস বেগম বাড়িতে ছিলেন।

এর আগে শহরের প্রাণকেন্দ্র দড়াটানায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের গাড়িতে হামলা চালানো হয়। বিকেল চারটার কিছু পরে দড়াটানা ভৈরব চত্বরে পুলিশের উপস্থিতিতে এ হামলার ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের মাইক্রোবাসটি ভাঙচুর করে। একইসাথে সাংবাদিক আনোয়ারুল কবীর নান্টুর মোটরসাইকেলটিও ভাঙচুর করা হয়। এসময় হামলাকারীদের হাতে হকিস্টিক, ক্রিকেট স্ট্যাম্প, জিআই পাইপ ও রামদা ছিল বলে বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে শহরের লালদীঘির পাড়ে অবস্থিত জেলা বিএনপির কার্যালয়ও।

বিকেল চারটায় প্রেসক্লাব যশোরে নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন বিএনপি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। কিন্তু পুলিশ সংবাদ সম্মেলন করতে দেয়নি বলে জানিয়েছে বিএনপি। ওইসময় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ব্যাপক সংখ্যক নেতাকর্মী প্রেসক্লাব অবরুদ্ধ করে রাখে। এ কারণে বিএনপি নেতাকর্মীরা দীর্ঘ সময় প্রেসক্লাবে অবস্থান করতে বাধ্য হন।

এদিকে, শনিবার সদর উপজেলার রূপদিয়ায় সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির ৫৪ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। শনিবার রাতে মামলাটি করেন নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য ও সদর উপজেলার বলরামপুর গ্রামের এসএম আকরাম হোসেনের ছেলে ফারুক হোসেন। মামলার পর শনিবার গভীর রাতে থানা পুলিশ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিএনপির ২৮ নেতাকর্মীকে আটক করে।

মামলার আসামিরা হলেন, জেলা বিএনপির সদস্য গোলাম রেজা দুলু, চাউলিয়ার সোহেল রানা তোতা, বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম চৌধুরী মুল্লুক চাঁদ, জেলা যুবদলের সভাপতি এম তমাল আহম্মেদ, যুগ্ম সম্পাদক নাজমুল হোসেন বাবুল, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা আমির ফয়সাল, হামিদপুরের শফিকুল ইসলাম, শেখহাটির রাজ্জাক, মুড়লির বিহারী রাজু, চাউলিয়ার আব্দুস সালাম বিশ^াস, রামপুরের শিমুল হোসেন, গোপালপুরের হাসানুর রহমান শাকিল, রেজাউল ইসলাম রেজা, শ্রীপদ্দী গ্রামের আবু সাঈদ, বারীনগরের বুলবুল, দক্ষিণ ললিতাদহের হাফিজুর রহমান, লাউখালীর বাবলু, হাটবিলা জামতলার আফজাল হোসেন, রূপদিয়ার লাইস খান, মানিকদিহির শরীফ হোসেন, ঘোপের রেজাউল ইসলাম মোল্লা, কুয়াদার সিরাজ মোল্লা, মফিজুর রহমান টিটু, রাজারহাটের লিটন হোসেন, মুড়লির মারুফ হোসেন, রাজারহাটের রাজিব হাসান, রামনগরের জহির হাসান, মোজাহার, জাহাঙ্গীর, মনোহরপুরের দাউদ ইব্রাহিম, রামনগরের পারভেজ, ইমামুল, শেখহাটির বেনজির বিশ^াস, মথুরাপুরের পারভেজ, কচুয়ার আসলাম, গাইদগাছীর অহেদ মোড়ল, মনোহরপুরের আকরাম হোসেন, গাইদগাছির মশিয়ার রহমান, নরেন্দ্রপুরের ফারুকুজ্জামান রাসেল, হাটবিলার কামাল শেখ, ঘুরুলিয়ার আনোয়ার হোসেন, গাইদগাছির কাজী রাহী তনা, বলরামপুরের আব্দুল হালিম, গাইদগাছির অ্যাডভোকেট নুরুজ্জামান খান, ঘোপ জেলরোডের সৈয়দ আলী আশফাক, রূপদিয়ার মকবুল হোসেন, নরেন্দ্রপুরের জিলহাজ, গোপালপুরের ইমামুল ইসলাম তুহিন, নরেন্দ্রপুর বেলতলার সামাদ, ধোপাপাড়ার আলম, বানিয়ারগাতির শফিয়ার রহমান সফি, গোপালপুরের কামরুল ও বলরামপুরের জাহাঙ্গীর আলম। এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে জেলরোডের সৈয়দ আলী আশফাক, মনোহরপুরের দাউদ ইব্রাহিম, আকরাম হোসেন, গাইদগাছীর অহেদ মোড়ল, মশিয়ার রহমান, কাজী রাহী তনি, হাটবিলা জামতলার আফজাল হোসেন, লেবুতলার আব্দুল্লাহ আলামিন বাবু, শাহাবুদ্দিন খা, কোদালিয়ার টুকু, বিল্লাল হোসেন, লেবুতলার মামুন হোসেন, ঘুরুলিয়া মধ্যপাড়ার তরিকুল ইসলাম, কিসমত নওয়াপাড়ার রাজু আহম্মেদ, চাঁচড়া ভাতুড়িয়ার আসাদুজ্জামান, হাবিবুর রহমান, আবু সাঈদ বিশ^াস, চাঁনপাড়ার ওয়াদুদ, ওসমানপুরের শিমুল হোসেন, বানিয়ারগাতির আনোয়ার হোসেন, রিয়াদ হোসেন, মুনসেফপুরের আব্দুর রহমান, নরেন্দ্রপুরের মশিয়ার রহমান, ছাতিয়ানতলার মাসুদ, চুড়ামনকাটির দেলোয়ার হোসেন ওরফে শাহ আলম, নিজাম উদ্দিন, কোদালিয়ার রবিউল ইসলাম ও ওয়াসিম মেম্বারকে পুলিশ রোববার গভীররাতে আটক করেছে।

মামলায় বাদী উল্লেখ করেছেন, আগস্ট মাসে তারা বিভিন্ন এলাকায় শোকসভা, দোয়া মাহফিল ও গণভোজের আয়োজন করে আসছিলেন। এ উপলক্ষে নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদে শনিবার বেলা ১১টায় চেয়ারম্যান রাজু আহম্মেদকে নিয়ে তারা আলোচনা করছিলেন। একই সময় পাশের ইউনিয়ন কচুয়ায় বিএনপির সমাবেশ চলছিল। ওই সমাবেশ শেষে বিএনপির নেতাকর্মীরা বিভিন্ন বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ে রূপদিয়া বাজারের দিকে আসে। আসামিরা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে কয়েকটি ককটেল ফুটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে। ইউনিয়ন পরিষদ ভাঙচুর করে। এতে ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। পরিষদের গেটের সামনে চেয়ারম্যান রাজুর পাজেরো গাড়ি, একটি প্রাইভেটকার ও একটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে। এতে সাড়ে সাত লাখ টাকার ক্ষতি হয়। এছাড়া রাজুর গাড়িতে থাকা একলাখ ৩৫ হাজার টাকা তারা লুট করে নিয়ে যায়। ওইসময় চেয়ারম্যান রাজুসহ অন্যরা এগিয়ে আসলে আসামিরা রামদা, লোহার রড় ও দেশিয় অস্ত্র নিয়ে তার সাথে থাকা ১০ জনকে মারপিট করে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

এদিকে, মামলার পর তদন্ত কর্মকর্তা নাজমুল হাসান গভীররাতে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ২৮ জনকে আটক করে রোববার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করেন।

উল্লেখ্য, শুক্রবার রাতে অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ বিএনপির শীর্ষ চার নেতার বাড়ি ভাঙচুর করে সন্ত্রাসীরা।

খুলনা গেজেট/ টি আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!