যশোরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় প্রথমবারের মত আসছে দেশের ঐতিহ্যবাহী কলরেডি কোম্পানির মাইক। জনসভার ভাষণ প্রচারে গোটা শহর জুড়ে থাকবে এ কোম্পানির প্রায় ৩শ’ মাইক। ১৯৭১ সালের ঐতিহাসিক ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে কোম্পানির মাইকে ভাষণ দিয়ে জাতিকে জাগ্রত করেছিলেন, সেই কলরেডির মাইকে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। নিখুঁত সাউন্ড সিস্টেম পেতে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে আওয়ামী লীগ নেতারা জানিয়েছেন।
আগামী ২৪ নভেম্বর যশোরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা। এখনো পর্যন্ত সম্ভাব্য ভেন্যু নির্ধারিত রয়েছে স্টেডিয়াম। মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের একাধিক এমপি ও জেলা নেতৃবৃন্দ স্টেডিয়ামে মঞ্চ নির্মাণ ও মাইক স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাই করেছেন। মাইক সেটআপের জন্য মাঠ পরিদর্শনে আসেন কলরেডির সত্বাধিকারী ত্রিনাথ ঘোষ সাগরসহ তার কোম্পানির কর্মকর্তারা। তাদের সাথে ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার এমপি।
ঐতিহ্যবাহী কোম্পানি কলরেডির মালিক ত্রিনাথ ঘোষ সাগর জানান, আয়োজকরা তাদেরকে জানিয়েছেন যশোরে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় পাঁচ থেকে সাত লাখ লোক সমাগম হবে। এটি মাথায় রেখেই কাজ করছে কলরেডি। সেই হিসেবে গোটা যশোর শহরে তাদের কোম্পানির ৩শ’ মাইক টাঙানো হবে বলে কলরেডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। যাতে সাউন্ড সিস্টেমের কোনো ত্রুটি না হয় সেই জন্য চুলচেরা যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। শব্দ নিখুঁত করতে নানা ধরণের যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হবে বলে কলরেডি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।
আওয়ামী লীগ দলীয় সূত্র জানায়, জনসভা উপলক্ষে সম্প্রতি যশোরে আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় আসেন বাগেরহাটের এমপি শেখ হেলাল। সভা শেষে তিনি জনসভাস্থল স্টেডিয়াম মাঠ পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি ভালো সাউন্ড সিস্টেমের তাগিদ অনুভব করেন। সেই তাগিদ থেকেই তিনি যশোরের নেতৃবৃন্দকে ঢাকা থেকে কলরেডিকে আনার পরামর্শ দেন। এমপি শেখ হেলাল উদ্দিনের পরামর্শে কলরেডিকে ইতিহাসের সাক্ষী হিসেবে প্রথমবারের মতো যশোরে আনা হচ্ছে। যা নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীসহ যশোরবাসীর আগ্রহ আরো বেড়েছে।
প্রতিষ্ঠানের বর্তমান মালিক ত্রিনাথ ঘোষ সাগর বলেন, যশোরে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় আসতে পেরে গর্বিত কলরেডি কর্তৃপক্ষ। ১৯৭১ সালের ঐতিহাসিক ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কলরেডির মাইকে ভাষণ দিয়েছিলেন। তার সেদিনের ভাষণে জাতি পরাধীনতার শেকল থেকে মুক্তির আলো দেখেছিল। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। এ কারণে কলরেডি ঐতিহাসিক হয়ে রয়েছে।
জনসভার প্রস্তুতির বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার এমপি বলেন, প্রস্তুতির সকল কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও ঢাকা থেকে এসব কাজ তদারকি করা হচ্ছে। কাজের প্রাথমিক সবকিছু শেষ হলে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে বক্তব্য দেবেন।
যশোর-৩ আসনের এমপি কাজী নাবিল আহমেদ জনসভাস্থল স্টেডিয়াম পরিদর্শন করার পর বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা পরবর্তী সময়ে ঢাকার বাইরে এবার সর্বপ্রথম যশোরে আসছেন। এ কারণে যশোরের মানুষ চাওয়া পাওয়া নিয়ে অনেক আগ্রহী। তার আগমনের খবর মানুষের মধ্যে ব্যাপকভাবে সাড়া পড়েছে। প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে সামনে রেখে সকল এমপি, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। জনসভাকে জনসমুদ্রে পরিণত করা তাদের লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন এমপি কাজী নাবিল আহমেদ।
এদিকে, জনসভাকে কেন্দ্র করে বুধবার সার্কিট হাউজে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ দলীয় নেতাকর্মী নিয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি লাইজু জামান।