খুলনা, বাংলাদেশ | ৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  টাঙ্গাইলে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে ৪ জন নিহত
  শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলায় বেরোবির সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম গ্রেপ্তার
  নিউইয়র্কে ছুরিকাঘাতে নিহত ২
১০ জেলার যানবাহন নিয়ন্ত্রণে থাকবে ৫০০ ফোর্স, ১০টি পার্কিং স্পট নির্ধারণ

যশোরে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় ৫ লাখ মানুষ সমাগমের টার্গেট

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

যশোরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় ৫ লাখ মানুষের সমাগমের টার্গেট করেছে জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। এ লক্ষ্যে ৮টি উপ কমিটির নেতৃবৃন্দ নানামুখি কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে বিশাল এ গণজমায়েতের জন্য বাস, প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস মিলিয়ে ৫ হাজার যানবাহন আসা ও পাকিংয়ের জন্য স্থান নির্ধারণ করেছে জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে ট্রাফিক বিভাগ। এরমধ্যে ৪ হাজার গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য ১০টি স্পট নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে এমপি মন্ত্রীদের জন্য ৪টি স্পট, অন্য ভিআইপিদের জন্য ১টি স্পট ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদের বাস, প্রাইভেট ও মাইক্রো পার্কিংয়ের জন্য আরো ৫টি পার্কিং এলাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

আর ৮ দিন পর যশোরে আসছেন প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। তাকে স্বাগত জানাতে ব্যাপক প্রস্তুতি ও কর্মযজ্ঞ চলছে দলীয় ফোরামে এবং প্রশাসনে। তাকে এক নজর দেখতে এবং তার কথা শুনতে অধির আগ্রহে থাকা যশোরাঞ্চলের গণমানুষ সভাস্থলে আসতেও প্রস্তুতি নিচ্ছেন। যশোরে একদিকে এগিয়ে চলেছে সভাস্থল সজ্জার কাজ। আবার নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা নিয়েও বসছে দফায় দাফায় সভা। জনসভা উপলক্ষে যশোর শহরের বাইরে থেকে আসা গাড়িগুলো অনুষ্ঠানের দিন সকাল থেকেই পার্কিংয়ে অবস্থান করতে পারে সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। সভার দিন শহরে স্বচ্ছ ট্রাফিক ব্যবস্থা এবং পরিচ্ছন্ন পার্কিং কার্যক্রম তদারকি ও শৃঙ্খলার জন্য অফিসার মিলিয়ে ট্রাফিক সংশ্লিষ্ট ৫শ’ ফোর্স কাজ করবে দিনব্যাপি। তবে ২৪ নভেম্বরের আগে প্রয়োজনে পার্কিং এলাকা আরো বাড়তে পারে, কিংবা পার্কিং স্পট রদবদল হতে পারে বলেও ট্রাফিক বিভাগ সূত্র জানিয়েছে।

আওয়ামী লীগ দলীয় সূত্র জানিয়েছে, এ বিশাল গণজমায়েত নিয়ে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্ট উপ কমিটি যানবাহন নিশ্চিত করতে কাজ করছে। জেলা আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় ৫ লাখ মানুষ সমাগমের টার্গেট করেছে। আর এ গণমানুষের সিংহভাগ আসবে শহরের বাইরে থেকে। যশোরের ৮টি উপজেলাসহ খুলনা বিভাগের ১০ জেলা থেকে আসবে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনগুলোর নেতাকর্মী এবং সমর্থকরা। এর জন্য প্রায় ৫ হাজার গাড়ি যশোরে আসার টার্গেট করা হয়েছে। এসব যানবাহনগুলো শৃঙ্খলার সাথে পার্কিংয়ের জন্য ট্রাফিক বিভাগ কাজ শুরু করেছে।

যশোর টাফিক পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ছোট বড় মিলিয়ে ১০টি পার্কিং এলাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তাদের প্রাথমিক তালিকা অনুযায়ী প্রতিমন্ত্রীদের গাড়ি যশোর ঈদগাহ বাদশা ফয়সল ইসলামী ইন্সটিটিউট, পূর্ণ মন্ত্রীদের গাড়ি মুসলিম একাডেমি স্কুল মাঠে পার্কিং করবেন। এছাড়া আগত গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীগণের গাড়ি এমএম কলেজের দক্ষিন গেট দিয়ে প্রবেশ করিয়ে কলেজ মাঠে পার্কিং করতে পারবেন। গাড়ি রেখে তারা স্টেডিয়ামের পেছনের এমএম কলেজের গেট দিয়ে সভাস্থলে যেতে পারবেন। এমপিদের গাড়ির জন্য যশোর টাউন হল মাঠ নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া যশোর শহরের দক্ষিণাঞ্চল থেকে আসা ভিআইপিদের গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য যশোর জেলা স্কুল মাঠ নির্ধারণ করা হয়েছে। সাধারণ নেতাকর্মীবাহী বাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার টামিনাল হয়ে শংকরপুর বাবলাতলার রাস্তায় পার্কিং করতে পারবে।

নড়াইল থেকে সাধারণ নেতাকর্মীদের বাস, প্রাইভেট মাইক্রোসহ অন্য যানবাহনগুলোর পাকিং হবে যশোর সরকারি সিটি কলেজ মাঠে। সেখানে জায়গা সংকুলান না হলে মণিহার থেকে খুলনামুখি মুড়লি পর্যন্ত চওড়া রাস্তার দুইপাশে পার্কিং করা হবে। আর খুলনার দিক থেকে আসা যানবাহনগুলো মণিহার এলাকা থেকে মুড়লির একই রাস্তায় পার্কিং করবে। এছাড়া ওই রুটের গাড়ি মুড়লি থেকে শংকরপুর টার্মিনাল হয়ে শংকরপুর বাবলাতলা রাস্তায় পার্কিং করতে পারবেন সরকারি মুরগি খামারের আগ পর্যন্ত। মাগুরা থেকে আসা যানবাহনগুলো খাজুরা বাসস্ট্যান্ডের আগে উপশহর এলাকায় পার্কিং করবে। উপশহর ডিগ্রি কলেজ মাঠ, উপশহর ঈদগাহ মাঠ এলাকার রাস্তাগুলো ব্যবহার করতে পারবে পার্কিংয়ের জন্য।

এছাড়া ঝিনাইদহ রুট থেকে আসা গাড়িগুলো ধর্মতলায় ও ছুটিপুর রাস্তায় জামতলা পর্যন্ত। ছুটিপুরসহ শহরের পশ্চিমাঞ্চলের নেতাকর্মীদের গাড়ি একস্থানে পার্কিং করতে হবে। এছাড়া যশোর শহর বিশেষ করে পৌরসভার মধ্যে সকল প্রকার যানবাহন আগের দিন থেকেই চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হবে। একইসাথে ট্রাফিক বিভাগ ও জেলা আওয়ামী লীগ বিশেষ সমন্বয় সভা করে এসব ব্যাপারে আগামি ২৪ নভেম্বরের আগেই আরো একটি চূড়ান্ত রুপরেখা প্রদান করবে।

এদিকে, যশোর শহরের বিমানবন্দর রোড, শিক্ষাবোর্ড রোড, দড়াটানা, নিউমার্কেট, মণিহার, চাঁচড়া চেকপোস্ট, ধর্মতলা, আরবপুরমোড়, পালবাড়ীমোড়, মুজিব সড়ক, গাড়ীখানা রোড, এম.কে রোড, আর এন রোড, রেলরোড, সদর হাসপাতাল রোড, চিত্রারমোড়, মণিহারমোড়, জজকোর্ট মোড়, জেলখানামোড়, কাঠেরপুল-বড়বাজার এলাকাসহ আরও কয়েকটি এলাকায় ট্রাফিক বিভাগ সভার দিন এবং সভার আগের দিন চেকপোস্ট বসিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোরভাবে জোরদার করবে। প্রধানমন্ত্রীর জনসভা উপলক্ষে গাড়ি পার্কিং এবং ট্রাফিক ব্যবস্থা সুশৃঙ্খল রাখতে অফিসারসহ ট্রাফিক সংশ্লিষ্ট ৫শ’ ফোর্স থাকবে।

এ ব্যাপারে যশোর সদর ট্রাফিক ইন্সপেক্টর শুভেন্দু ব্যানার্জী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জনসভার দিন প্রাথমিকভাবে ওই ১০টি পার্কিং এলাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরপরও জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সাথে তারা বসবেন। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে দুই হাজার বাস ও দুই হাজার প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস জনসভায় আসতে পারে। এছাড়া ভিআইপি, মন্ত্রী এমপি মিলিয়ে আরো ১ হাজার ধরলে মোট ৫ হাজার গাড়ি হতে পারে। সে হিসেবেই ওই ১০ পার্কিং এলাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখনও হাতে সময় আছে। প্রয়োজনে পার্কিং এরিয়া ও স্পট বাড়ানো হবে। তিনি বলেন, জনসভার দিন শহরে কোনো যানবাহন প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। শহরের অংশ পায়ে হেটেই সবাইকে চলাচল করতে হবে। আর পায়ে হেটে চলাচলের জন্যও একটি রোডম্যাপ করা হচ্ছে, যা পরে মিডিয়াকে জানানো হবে।

এ ব্যাপারে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আব্দুল মজিদ বলেন, তারা প্রধানমন্ত্রীর ঐতিহাসিক এই জনসভায় ৫ লাখ লোক সমাগমের টার্গেট করছেন। এর বেশিরভাগ লোকই আসবে শহরের বাইর থেকে। এর জন্য ৫ হাজার গাড়ি আসতে পারে। বৃহত্তর যশোরের ৪ জেলা ছাড়াও খুলনা বিভাগের ১০ জেলা থেকে কমবেশি মানুষ জনসভায় আসবেন। সেই আলোকে বাইরের জেলা থেকে আসা গাড়ি সুশৃঙ্খলভাবে রাখার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। যশোরে একটি শান্তিপুর্ণ ঐতিহাসিক জনসভা উপহার দেয়ার চেষ্টা করছে জেলা আওয়ামী লীগ।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!