যশোরে ধর্ষণ চেষ্টা ও যৌন নীপিড়নের পৃথক তিনটি মামলায় তিনজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার পৃথক রায়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-১ এর বিচারক টিএম মুসা এ সাজা দিয়েছেন।
সাজাপ্রাপ্তরা হলো, যশোর শহরতলীর শেখহাটি জামরুলতলার ইবাদুলের ছেলে নয়ন, সদরের ভেকুটিয়া গ্রামের ইয়াছিন আলীর ছেলে ইসমাইল হোসেন ও পদ্মবিলা গ্রামের মজিদের ছেলে আলামিন। সরকার পক্ষে মামলাগুলো পরিচালনা করেন বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট সেতারা খাতুন।
মামলা সূত্রে জানাগেছে, শহরতলীর শেখহাটি বাবলাতলার কলেজ পড়ুয়া এক ছাত্রীর সাথে প্রেম ছিল আসামি নয়নের। নয়ন তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন স্থানে বেড়াতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। এরপর নয়ন তাকে বিয়ে করতে অস্বীকার করে। এরপর ২০১৬ সালের ২৮ জানুয়ারি ধর্ষণের অভিযোগে নয়নকে আসামি করে কোতয়ালি থানায় মামলা করা হয়। এ মামলার তদন্ত শেষে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়ায় তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই বিপ্লব হোসেন আসামি নয়নকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন। এ মামলার দীর্ঘ স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামি নয়নের বিরুদ্ধে ধর্ষণ অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে ছয় বছর সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন বিচারক। সাজাপ্রাপ্ত নয়ন বর্তমানে পলাতক রয়েছে।
এদিকে, যশোর সদরের ভেকুটিয়া গ্রামের এক প্রবাসীর স্ত্রীকে বিভিন্ন সময় কুপ্রস্তাব দিত আসামি ইসমাইল হোসেন। বিষয়টি ওই গৃহবধূ তার পরিবারের সদস্যদের জানিয়ে দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ইসমাইল হোসেন গৃহবধূর ক্ষতি করার ষড়যন্ত্র করতে থাকে। ২০১৪ সালের ৬ ডিসেম্বর রাতে গৃহবধূ তার ঘরে টিভি দেখছিলেন। এসময় আসামি ইসমাইল হোসেন ঘরে ঢুকে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। গৃহবধূর চিৎকারে বাড়ির লোকজন এগিয়ে আসলে ইসমাইল পালিয়ে যায়। এ ব্যাপারে ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে কোতয়ালি থানায় ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন। এ মামলার স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামি ইসমাইল হোসেনের বিরুদ্ধে যৌন নিপিড়নের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড, পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন। সাজাপ্রাপ্ত ইসমাইল হোসেন পলাতক রয়েছে।
এছাড়া সদরের বানিয়ারগাতি গ্রামের মিল শ্রমিক কিশোরীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে একই মিলের শ্রমিক পদ্মবিলা গ্রামের আলামিন। এরপর গত ২০১৫ সালের ১৬ আগস্ট ও ১৭ আগস্ট রাতে আলামিন মিলের গোডাউনে নিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে। বিষয়টি কারখানার লোকজন বুঝতে পেরে কিশোরীর পরিবারকে জানিয়ে দেয়। ১৮ আগস্ট ওই কিশোরীর মা ধর্ষণের অভিযোগ এনে আলামিনকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। এ মামলার দীর্ঘ স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামি আলামিনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। সাজাপ্রাপ্ত আলামিনও পলাতক রয়েছে।
খুলনা গেজেট/এ হোসেন