যশোর ডা. আব্দুর রাজ্জাক মিউনিসিপ্যাল কলেজের ছাত্র রাকিবুল ইসলামকে হত্যা করা হয়নি। মাথা ঘুরে ইটের উপর পড়ে আঘাতজনিত কারনে তার মৃত্যু হয়েছে। মামলার তদন্ত শেষে এসআই আনছারুল হক এ তথ্য দিয়ে আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার চর কালনা গ্রামের আনিসুর রহমান মনার ছেলে রাকিবুল ইসলাম যশোর ডা. আব্দুর রাজ্জাক মিউনিসিপ্যাল কলেজের মার্কেটিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল। সে শহরের খড়কি কারবালা পুকুর পাড়ের মাইনুর রহমান মিলনের ছাত্রাবাসের চতুর্থতলায় অন্যান্য ছাত্রদের সাথে থাকতো। চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি বেলা ১১টার দিকে ছাত্রবাস থেকে রাজু নামে এক ছাত্র রাকিবুলের গ্রামের চাচা আব্দুল জলিল মোল্লার মোবাইল ফোন করে তার অসুস্থতা ও তাকে হাপাতালে নেয়া হচ্ছে বলে জানান। এ সংবাদ পেয়ে রাকিবুলের মা রূপালী বেগম কয়েকজনকে সাথে নিয়ে দুপুরে যশোর জেনারেল হাসপাতালে পৌঁছান। অসুস্থ রাকিবুলকে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে খুজে না পেয়ে মর্গে গিয়ে রাকিবুলের লাশ শনাক্ত করেন।
এসময় হাসপাতালে ছাত্রাবাসের কোন ছাত্র ও মালিক কাউকে পাওয়া যায়নি। এরপর হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে রাকিবুলের মৃত্যুর সনদপত্র সংগ্রহ করে লাশ বাড়ি নিয়ে যায়। রাতে মরদেহের গোসল করানোর সময় মাথার পিছনে আঘাতের চিহ্ন দেখে ৯৯৯ এ কল করে পুলিশে সংবাদ দেয়া হয়। পরদিন লোহাগাড়া থানা পুলিশ এসে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি ও ময়না তদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালে পাঠায়।
এ ব্যাপারে ৩০ জানুয়ারি নিহতের মা রূপালী বেগম লোহাগড়া থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ যশোর কোতোয়ালি থানায় মামলা করার পরামর্শ দেয়। ৩১ জানুয়ারি তিনি কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দিলে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয় থানা পুলিশ। ১৬ ফেব্রুয়ারি নিহত রাকিবুলের মা রুপালী বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে আদালতে হত্যা মামলা করেন।
অভিযোগের ভেতর হত্যাকান্ডের সাথে ছাত্রাবাসের পরিচালক, রাধুনী ও চতুর্থতলায় বসবাসকারী ছাত্র সাজ্জাদ, নুরুল আহাদ, নুর আলম, রিয়াদ, কামরুল আলম ও রাজুসহ অপরিচিত আরও কয়েকজন জড়িত থাকতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়।
আদালতের বিচারক অভিযোগটি গ্রহণ করে কোতয়ালি থানার ওসিকে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার আদেশ দেন। আদালতের আদেশে ২৪ ফেব্রুয়ারি অভিযোগটি কোতয়ালি থানায় নিয়মিত মামলা হিসেবে রেকর্ড হয়। এ মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে এজাহারে উল্লেখিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যার কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। একই সাথে ঘটনার দিন বেলা ১১টার সময় রাকিবুল মাথা ঘুরে ইটের উপর পড়ে আঘাতজনিত কারনে অথবা শারীরিক অসুস্থতার কারনে তার মৃত্যু হওয়ায় শনিবার আদালতে এ চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
খুলনা গেজেট / আ হ আ