যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে এবার ৩৫ জনের করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে। তাদের শরীরে ঠান্ডা, গলাব্যথা, মাংসপেশীতে ব্যথা ও হালকা জ্বর রয়েছে। রবিবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে যবিপ্রবির জনসংযোগ কর্মকর্তা আব্দুর রশিদের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, আজ যবিপ্রবির জিনোম সেন্টারে বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক ওমিক্রন শনাক্তের বিষয়টি প্রকাশ করেন। গবেষক দলটি গত ৩১ ডিসেম্বর হতে ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত মোট ৪১ জনের (২৬ জন পুরুষ ও ১৫ জন নারী) নমুনার স্যাঙ্গার সিকুয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে ৩৫ জনের প্রাথমিকভাবে ওমিক্রন শনাক্ত করেন। বাকিগুলো ডেল্টা ধরন বলে শনাক্ত করা হয়েছে।
গত ১২ জানুয়ারি জিনোম সেন্টারে তিন জনের নমুনা পরীক্ষায় ওমিক্রন শনাক্ত হয়। এ নিয়ে যবিপ্রবির জিনোম সেন্টারে মোট ৩৮ জনের ওমিক্রন শনাক্ত করা হলো।
জিনোম সেন্টারে ৩৮ জনের নমুনার আগেই তিনটি নমুনার পূর্ণাঙ্গ জীবন রহস্য উন্মোচন করা হয়। বাকি ৩৫ জনের স্পাইক প্রোটিনের স্যাঙ্গার সিকুয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে ১২ থেকে ১৩টি মিউটেশনের ওপর ভিত্তি করে ওমিক্রন শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের বয়স ২০ থেকে ৭১ বছরের মধ্যে।
যবিপ্রবির অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ও জিনোম সেন্টারের সহযোগী পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল কবীর জাহিদের নেতৃত্বে ওমিক্রন শনাক্ত করা হয়।
তিনি জানান, শনাক্তের বিচারে আক্রান্তদের এখনও গুরুতর উপসর্গ নেই। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এটাকে উদ্বেগের ধরন বলে আখ্যায়িত করেছে।
যবিপ্রবি উপাচার্য ও জিনোম সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, ওমিক্রন দ্রুত সংক্রমণশীল। এ কারণে যশোর অঞ্চলে এটা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে এবং ৩০ শতাংশের বেশি নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হচ্ছে। তাই সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের পাশাপাশি টিকা গ্রহণ ও মাস্ক ব্যবহারের কোনও বিকল্প নেই। ওমিক্রন শনাক্তের কাজটি জিনোম সেন্টারে অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, এর আগে করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরনটির স্থানীয় সংক্রমণের বিষয়ও যবিপ্রবির জিনোম সেন্টারে শনাক্ত করা হয়।
ড. ইকবাল কবীর জাহিদসহ গবেষক দলের অন্য সদস্যরা হলেন-বায়ো মেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান ড. হাসান মো. আল-ইমরান, অণুজীববিজ্ঞন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শোভন লাল সরকার, এএস এম রুবাইয়াতুল আলম, প্রভাষক শামিনুর রহমান, জিনোম সেন্টারের গবেষণা সহকারী প্রশান্ত কুমার দাস, আলী আহসান সেতু, তৌকির আহমেদ, আব্দুল্লাহ আল তারিক, আনজীর রুমি, নাজনীন সুলতানা সুমনা, বিথি খাতুন প্রমুখ।
এদিকে যশোর সিভিল সার্জন অফিস সূত্র জানিয়েছে, করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে যশোরেও সংক্রমণ বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় যশোরে ১৯৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। ৪০৬টি নমুনা পরীক্ষা করে তাদের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ৪৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ।