আপনার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, আমি জামিন করিয়ে দেব। চুয়াডাঙ্গা জেলার এক আসামিকে এ ধরণের চিঠি পাঠিয়েছেন যশোরের এক আইনজীবী সহকারী। কিন্তু এ কাজে শেষমেষ তিনি ধরা খেয়েছেন। রোববার জেলা আইনজীবী সমিতি এ ঘটনায় তাকে শোকজ করেছেন। তাকে তিনদিনের মধ্যে চিঠির জবাব দিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও শোকজে উল্লেখ করা হয়।
জেলা আইনজীবী সমিতির সূত্র জানায়, যশোর সদর উপজেলার তফসীডাঙ্গা গ্রামের শেখ ফজলুর রহমানের ছেলে নজরুল ইসলাম। অভিযোগ রয়েছে, তিনি পেশায় আইনজীবী সহকারী হলেও আইনজীবীর চাইতেও তার ক্ষমতা বেশী বলে বিভিন্ন মহলে রয়েছে প্রচারণা। তার নজর বাইরের জেলার মামলার উপর। বিভিন্ন আদালতে দায়ের করা মামলার আসামিদের ঠিকানা নিয়ে তাদের কাছে চিঠি পাঠানো তার প্রধান কাজ বলে আইনজীবী, শিক্ষানবীশ আইনজীবী ও আইনজীবী সহকারীদের অভিযোগ। চিঠিতে নিজের মোবাইল নম্বরও দিয়ে দেন তিনি। এরপর চিঠি পাওয়া মাত্রই আসামিরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। এরপর তারা নজরুলের সাথে যোগাযোগ শুরু করে। এ সুযোগে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেন নজরুল। এ ধরণের অভিযোগ এনে সিনিয়র আইনজীবী তাজমিলুর রহমান স্বপন গত ২ ফেব্রুয়ারি আইনজীবী সমিতিতে অভিযোগ দেন। সমিতি বিষয়টি আমলে নিয়ে সাধারণ সম্পাদক শাহানুর আলম শাহীন স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়।
সেখানে উল্লেখ করা হয়, শার্শা আমলী আদালতে প্রিয়াংকা নামে এক নারী মামলা করেন। মামলাটি দাখিল করেন আইনজীবী স্বপন। মামলায় আসামি করা হয় চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থানার আমতলা গ্রামের রাজুকে। এরপরই অভিযুক্ত নজরুল এ বিষয়ে রাজুকে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে চিঠি পাঠান। একই সাথে জামিন করিয়ে দেয়ারও আশ্বাস দেন। বিষয়টি প্রফেসনাল মিস কনডাক্ট, অসদাচরণ, সুনাম ক্ষুন্ন ও গঠনতন্ত্র বিরোধী কাজ উল্লেখ করে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রেরণ করেন। একই সাথে কেন তার আইনজীবী সহকারী সনদ বাতিল হবে না তার জবাব তিনদিনের মধ্যে দিতে বলা হয়েছে।
এদিকে, সাধারণ আইনজীবী, শিক্ষানবীশ আইনজীবী ও আইনজীবী সহকারীদের ভাষ্য, নজরুল আদালতের ইদ্রিস সিন্ডিকেটের একজন সক্রিয় সদস্য। এছাড়া এ চক্রের আরো কয়েকজন সদস্য রয়েছেন। তানিয়া নামে এক নারী সদস্য কয়েকদিন আগে পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন। এসব সদস্যরা বিভিন্ন আমলি আদালতে যেয়ে মামলা হলেই আসামিদের ঠিকানা সংগ্রহ করে নানা ধরণের প্রতারণার আশ্রয় গ্রহণ করেন।