প্রথমে স্ত্রী ও বড় মেয়ের গলা টিপে ধরে। ধস্তাধস্তি দেখে ছোট মেয়েটি চিৎকার শুরু করে। পরে গামছা দিয়ে ছোট মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যা করে বাবু। শনিবার স্ত্রী ও দুই মেয়েকে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে এমনই জবানবন্দি দিয়েছেন ঘাতক জহিরুল ইসলাম বাবু।
তিনি জানিয়েছেন, পারিবারিক কলহের জের ধরে তিনি স্ত্রী ও দু’মেয়েকে হত্যা করেছেন। শনিবার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শম্পা বসু আসামির এ জবানবন্দি গ্রহণ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। ঘাতক জহিরুল ইসলাম বাবু সদর উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের বিশ্বাসপাড়ার মশিউর রহমান বিশ্বাসের ছেলে।
জহিরুল ইসলাম বাবু আরও জানিয়েছেন, তিনি পেশায় রডমিস্ত্রি ও মাদকাশক্ত। অভয়নগর উপজেলার সিদ্দিপাশা গ্রামের শেখ মুজিবর রহমানের মেয়ে সাবিনা ইয়াসমিন বিথীকে তিনি বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে বিথীর সাথে পারিবারিক ও দাম্পত্য কলহ চলছিল। বিথী তার পিতার বাড়িতে থাকতে পছন্দ করত। আড়াই মাস আগে বিথী তার দুই মেয়ে নিয়ে পিতার বাড়ি চলে যায়। অনিচ্ছা সত্বেও জহিরুল মাঝে মধ্যে তার শ্বশুর বাড়ি গিয়ে থাকতেন। এ নিয়ে সংসারে চরম অশান্তি চলছিল। শুক্রবার দুপুরে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে জহিরুল তার বাড়ির উদ্দেশ্যে শ্বশুর বাড়ি থেকে রওনা হন। পথে বিথীর সাথে জহিরুলের আবারো বাকবিতন্ডা হয়। এরই জের ধরে বাড়িতে আসার পর স্ত্রী ও বড় মেয়ের গলা চেপে ধরলে ছোট মেয়ে চিৎকার করছিল। এরপর তিনজনের গলায় গামছা পেচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে বলে জানিয়েছেন জহিরুল ইসলাম।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার দুপুরে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে আসছিলেন জহিরুল ইসলাম বাবু। চাপাতলা গ্রামে আব্দুস সবুরের বাড়ির পেছনে কলাবাগান ও ঘাসের জমিতে নিয়ে স্ত্রী বিথী ও বড় মেয়ে সুমাইয়া খাতুন এবং শেষে ছোট মেয়ে সাফিয়া খাতুনকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন বাবু। লাশ তিনটি সেখানে ফেলে বসুন্দিয়া গ্রামের বাড়িতে এসে পরিবারের লোকজনকে ঘটনাটি জানান বাবু। এসময় তার বড়ভাই মঞ্জুরুল ইসলাম বসুন্দিয়া পুলিশ ক্যাম্পে খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ বাড়িতে গেলে বাবু পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে। এ ঘটনায় নিহত বিথীর পিতা শেখ মুজিবর রহমান বাদী হয়ে অভয়নগর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই উত্তম কুমার মন্ডল আটক আসামি জহিরুল ইসলাম বাবুকে আদালতে সোপর্দ করেন। এরপর তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
খুলনা গেজেট / আ হ আ