খুলনা, বাংলাদেশ | ২৫ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১০ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  দেশে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১০৩৩
  কুষ্টিয়ায় বজ্রপাতে ৪ জনের মৃত্যু
  আরও এক মামলায় খালাস পেলেন ফখরুল-রিজভী-আমির খসরু
  ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে রেণু হত্যা : একজনের মৃত্যুদণ্ড, ৪ জনের যাবজ্জীবন
পাউবো ও স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বয়ের অভাবে ২০ বছরেও অবৈধ দখলমুক্ত হয়নি

ময়ূর নদের নিষ্কাশন খালের উপর অবৈধ স্থাপনা, বর্ষাকালে ডুবতে পারে খুবি ক্যাম্পাস!

নিজস্ব প্রতিবেদক

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব পাশে গল্লামারী থেকে ময়ূর ব্রিজ পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেঁড়িবাধ সড়কের কেসিসির লিনিয়ার পার্ক সংলগ্ন ময়ূর নদের সংযোগ নিষ্কাশন খাল অবৈধ দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। খুপড়ি থেকে এখন নতুন নতুন পাকা স্থাপনা গড়ে উঠেছে। এখন বহুতল ভবন তৈরির চেষ্টা করছে অবৈধ দখলদাররা। খাল ভরাট করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করায় জলাবদ্ধতা ও পরিবেশ দূষণের শিকার হচ্ছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। এবার আসন্ন বর্ষা মৌসুমে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসসহ গোটা এলাকা জলাবদ্ধতার কারণে ডুবে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বর্তমানে পানি নিষ্কাশন পুরোপুরি বন্ধ। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় অভ্যন্তরের লেকের পানি মারাত্মকভাবে দূষিত হয়ে পড়েছে। পরিবেশও দূষিত হচ্ছে। দূষণের মাত্রা এতোটাই তীব্র যে, এই পানিতে কেউ পা দিতে পারছে না। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকার লেকটির এ অংশের সংস্কারের উদ্যোগ নিলেও তীব্র দূষণের কারণে শ্রমিকরা কাজ করতে পারছে না বলে জানা যায়। গত ২০ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসনকে অবহিত করে আসলেও চূড়ান্তভাবে এই অবৈধ দখল আজও মুক্ত হয়নি। শেষ দফায় দু’বছর আগে প্রশাসনের সহযোগিতায় পানি উন্নয়ন বোর্ড গল্লামারী বাাজার সংলগ্ন বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা অবৈধ দখলমুক্ত করতে অভিযান পরিচালনা করলেও শেষ পর্যন্ত ওই স্থানটিতে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়নি।

সরেজমিনে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কয়েকবছর আগে কাঁচা-আধা পাকা ঘর থাকলেও এখন ওই খালের উপর অবৈধভাবে স্থায়ী পাকা ঘর তুলে দোকান ও ঘর ভাড়া দেওয়া হয়েছে। দোকানদের কাছে জিজ্ঞাসা করলে তারা জানান, শাহিন নামের এক ব্যক্তি এখানে এক পাশে দোকানঘর নির্মাণ করেছেন। এছাড়াও মো. জুয়েল ও সামাদ নামীয় আরও দু’জন স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। তাদের মধ্যে কে বা কারা খাস খালের উপর স্থাপনা নির্মাণ করেছেন তারা তা জানেন না। তাদের কাছে ওই ব্যক্তিদের মোবাইল নাম্বর বা ঠিকানা না পাওয়ায় তাদের মতামত তুলে ধরা সম্ভব হয়নি।

খান বাহাদুর আহছানউল্লাহ হলের একটি সূত্রে জানা যায়, ময়ূর নদের সংযোগ খালের নিষ্কাশন অংশ অবৈধভাবে দখল করে স্থায়ীভাবে দোকানসহ ঘরবাড়ি নির্মাণ করায় হলের পাশের এই খালে পানি আর নিষ্কাশিত হচ্ছে না। ফলে মারাত্মকভাবে পানি দূষিত হয়ে পড়েছে। হল কর্তৃপক্ষ পানি নিষ্কাশনের কোনো পথ খুঁজে পাচ্ছেন না। অথচ ১৫-২০ বছর আগেও এই খালটি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়সহ গোটা এলাকার বেশিরভাগ পানি নিষ্কাশিত হতো।

এ ব্যাপারে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, পানি নিষ্কাশনের সমস্যাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এখন খুবই প্রকট হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের লেক বলে পরিচিত খালের পানি পূর্ব পাশে ময়ূর নদে নিষ্কাশিত না হতে পারায় গোটা বিশ্ববিদ্যালয়ই বর্ষাকালে জলাবদ্ধতার হুমকির মুখে পড়েছে। বিগত কয়েকবছর অতিবৃষ্টির পানি নিষ্কাশিত না হতে পেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক অংশ জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে। এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনসহ কয়েকটি ডিসিপ্লিনের মাঠ গবেষণায় শিক্ষার্থীরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। রিসার্চ ফিল্ডে একটি গবেষণা কার্যক্রম একবার নষ্ট হয়ে গেলে ওই শিক্ষার্থীর শিক্ষাকোর্স সম্পন্ন করতে বিলম্ব হয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই খালের উপর অবৈধ স্থাপনা দখলমুক্ত করে জনস্বার্থে খালটি ময়ূর নদের সাথে সংযোগ কার্যকর করে নিষ্কাশনে স্বাভাবিক অবস্থা সৃষ্টির ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড এতদিনেও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে না পারায় অভিজ্ঞ মহল উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জনমনে এখন প্রশ্নের দেখা দিয়েছে, অবৈধ দখলদাররা কি এতোই প্রভাবশালী যে, পানি উন্নয়ন উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় প্রশাসন গত ২০ বছরেও সরকারি খালের জায়গা থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করতে পারেনি।

 

খুলনা গেজেট/এএ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!