খুলনা, বাংলাদেশ | ৮ মাঘ, ১৪৩১ | ২২ জানুয়ারি, ২০২৫

Breaking News

  থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক

মেডিকেলে চান্স পাওয়ায় মেয়ের পড়ার খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পিতা

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরার কলারোয়ায় মেয়ে নাদিয়া খাতুন মেডিকেলে চান্স পাওয়ায় তার লেখাপড়ার খরচ চালানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে দরিদ্র সবজি বিক্রেতা পিতা আবু বক্কার। অর্থনৈতিক অসচ্ছলতা ও দারিদ্রতার কারণে মেয়ের এমবিবিএস পাশ করানোর খরচ যোগাতে পারবেন কিনা সেই দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন অসহায় দরিদ্র পিতা।

নাদিয়া খাতুন সদ্য প্রকাশিত এমবিবিএস (মেডিকেল) ভর্তি পরীক্ষায় চাঁদপুর মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েছে। তার মেধাক্রম ৩৪১০। সে কলারোয়া উপজেলার বোয়ালিয়া মুক্তিযোদ্ধা ডিগ্রী কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ২০২৪ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ন হয়।

নাদিরা সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার কেঁড়াগাছি ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের ক্ষুদ্র সবজি বিক্রেতা আবু বক্কার ও গৃহিণী শামসুন্নাহারের তৃতীয় কন্যা। সে পিইসি, জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি সকল পাবলিক পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছিলো। নাদিরা কলারোয়ার পূর্ব বোয়ালিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, বোয়ালিয়া ইউনাইটেড হাইস্কুল ও বোয়ালিয়া মুক্তিযোদ্ধা ডিগ্রী কলেজের মেধাবী ছাত্রী ছিলেন।

নাদিরা জানান, ছোট বেলা থেকে তার ইচ্ছা ছিল মেডিকেলে পড়ার। দরিদ্র বাবার অভাবের সংসারে থেকে প্রয়োজনীয় সুবিধার অভাবে ভাল কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখার সুযোগ না পেলেও স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সে তার পড়া লেখা চালিয়ে গেছে। তার লক্ষ্য সফলতার সাথে এমবিবিএস পাশ করে অসহায়, দুস্থ ও অবহেলিত মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করা।

বোয়ালিয়া মুক্তিযোদ্ধা ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ ফারুক হোসেন জানান, তার কলেজের সদ্য প্রাক্তন ছাত্রী নাদিরা খাতুন অত্যন্ত মেধাবী। তার পিতা ও পরিবার আর্থিকভাবে অসচ্ছল হলেও শিক্ষাক্ষেত্রে তাদের অবদান অত্যন্ত উজ্জল। নাদিরার পিতা একজন ক্ষুদ্র সবজি দোকানদার। তার ভিটেবাড়ি ছাড়া তেমন কোনো জমি জায়গাও নাই। তবে তার চার মেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষের মত মানুষ করার চেষ্টা রেখেছেন তিনি। নিজে না খেয়ে মেয়েদেও পড়া লেখার প্রতি খেয়াল রেখেছেন তিনি।

অধ্যক্ষ আরো জানান, নাদিরা খাতুন চার বোনের তৃতীয়। তার বড় বোনের বিয়ে হয়ে গেছে, দ্বিতীয় বোন যশোর এমএম কলেজে বোটানিকে অনার্সে অধ্যায়নরত ও ছোট বোন বোয়ালিয়া ইউনাইটেড হাইস্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্রী। নাদিরার পড়া লেখার প্রতি সর্বাত্মক সহযোগিতা থাকবে বলে জানান তিনি।

নাদিরার পিতা সবজি দোকানী আবু বক্কার জানান, তার বাড়ির পাশে ছোট্ট একটি দোকানে বসে বিভিন্ন ধরনের সবজি বিক্রি করেন তিনি। এতে তার কোনরকম সংসার চলে। মেয়েরা মেধাবী হওয়ায় লেখাপড়া করাতে কখনো কার্পণ্য করেননি। তিনি জানান, তার তৃতীয় কন্যা নাদিরা এ বছর মেডিকেলে চান্স পেয়েছে, আল্লাহর কাছে হাজারো শুকরিয়া। তবে দুশ্চিন্তায় আছি আমার এই ছোট ব্যবসায় উপার্জিত অর্থ দিয়ে তার লেখাপড়ার খরচ জোগাতে পারবো কিনা। তিনি মেয়ের ভবিষ্যতের জন্য সকলের কাছে দোয়া কামনা করেন। তিনি সচ্ছল ব্যক্তিদের কাছে সম্ভব হলে সহযোগিতা কামনা করেছেন।

খুলনা গেজেট/ টিএ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!