খুলনা, বাংলাদেশ | ৪ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ১৮ মে, ২০২৪

Breaking News

  করোনায় একজনের মৃত্যু, শনাক্ত ১১
  তিন জেলায় বজ্রপাতে প্রাণ গেল ৭ জনের
  রাঙামাটিতে সশস্ত্র হামলায় ইউপিডিএফ সদস্যসহ নিহত ২
  সাতক্ষীরার তালায় ধানের ট্রাক উল্টে ২ শ্রমিক নিহত, আহত আরও ১১ জন

মাসুদ আর ভাল হলো না !

গেজেট ডেস্ক

এক কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে পুলিশ পরিদর্শক মঞ্জুরুল হাসান মাসুদের বিরুদ্ধে। বর্তমানে তিনি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) খুলনা কার্যালয়ে সংযুক্ত আছেন।

এর আগে মাসুদ কর্মরত ছিলেন সাতক্ষীরা জেলার তালা থানার তদন্ত পরিদর্শক পদে। তার আগে ছিলেন খুলনার তেরখাদা থানার এসআই হিসেবে। এই দুই থানায় কর্মরত থাকা অবস্থায়ও তার বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ ছিল। এসব অভিযোগে ওই দুই থানা থেকে তাকে প্রত্যাহারও করা হয়েছিল।

খুলনা সদর থানার ওসি হাসান আল মামুন বলেন, কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে রোববার রাতে তার বাবা একটি মামলা করেছেন। পুলিশ মাসুদকে গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

মামলার বরাতে তিনি বলেন, গত ১০ মে মাসুদের সঙ্গে ওই কলেজছাত্রীর ফেসবুকে পরিচয় হয়। তখন মেয়েটি তার ছবি অন্য একটি আইডি থেকে ফেসবুকে প্রকাশ হয়েছে বলে, মাসুদের কাছে ফেসবুকের নিরাপত্তা বিষয়ে জানতে চায়। পরে তার সাথে মাসুদ নিয়মিত কথা বলত।

একপর্যায়ে রোববার দুপুরে ওই ছাত্রীকে ফেসবুকে নিরাপত্তা শেখাতে ডেকে নিয়ে এসে মাসুদ ধর্ষণ করে। পরে মেয়েটিকে হুমকি-ধমকি দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। তখন মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পড়লে তার পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হয়।

ওসি হাসান আল-মামুন জানান, ঘটনাটি জানার পর তাৎক্ষণিকভাবেই মাসুদকে গ্রেপ্তারের অভিযান শুরু করে পুলিশ। একই সঙ্গে মেয়েটিকে চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করা হয়।

ওসি বলেন, ধর্ষণ মামলাটির পর মাসুদের অতীত সম্পর্কে জেনেছি। তার বিরুদ্ধে আগেও নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে।

মাসুদের আগের কর্মস্থল খুলনার তেরখাদা থানার সদর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জাহাঙ্গীর মুন্সি সাংবাদিকদের বলেন, প্রায় এক যুগ আগে মঞ্জুরুল হাসান মাসুদ তেরখাদায় কর্মরত ছিলেন। তখন সদরের দক্ষিণ পাড়ায় রাজা মুন্সির বিবাহিত মেয়ে রুনাকে তিনি উত্ত্যক্ত করতে শুরু করেন। পরে রুনার সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ঘটনাটি জানাজানি হলে রুনাকে তার স্বামী রনি ডিভোর্স দেয়। পরে এক সন্তানসহ রুনাকে বিয়ে করেন মাসুদ। সেই স্ত্রী এখন তার ঘরে আছেন।

জাহাঙ্গীর মুন্সি জানান, সে সময় ওই ঘটনাটি তেরখাদায় বেশ আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয় এবং পুলিশের প্রতি মানুষের অবিশ্বাস বেড়ে যায়। চারদিক থেকে পুলিশের নিন্দা শুরু হয়। পরে বাধ্য হয়ে ওই থানা থেকে মাসুদকে প্রত্যাহার করা হয়।

১৩ বছর আগের সেই বিষয়টি নিয়ে জাহাঙ্গীর মন্তব্য করেন, আমাদের এলাকায় চাকরি করতে এসে আমাদের নিরাপদে রাখা তো দূরের কথা, সে পরের বউ ভাগিয়ে নিয়ে যায়। একজন পুলিশ কর্মকর্তার কাছ থেকে আমরা এটা আশা করি না।

এদিকে তালা থানার তদন্ত পরিদর্শক থাকার সময়ও মাসুদের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছিল।

তালা উপজেলার শাহাপুর গ্রামের মো. সেলিম জানান, তাদের একটি জমি সংক্রান্ত আদালতের মামলা ২০১৭ সালে তালা থানার অধীনে তদন্ত হচ্ছিল। তখন তাদের প্রতিপক্ষের বাড়িতে তদন্তে গিয়ে মাসুদ একটি মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। পরে সেই প্রেমের সূত্রেই প্রতিপক্ষের পক্ষ নিয়ে জমি দখল করিয়ে দেন মাসুদ।

সেলিম বলেন, বিষয়টি আমরা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাই। তখন খুলনা রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয় থেকে মাসুদের বিরুদ্ধে তদন্ত হয়। এতে সে দোষী প্রমাণিত হলে তালা থানা থেকে তাকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।

পিবিআই খুলনার পুলিশ সুপার সৈয়দ মুসফিকুর রহমান বলেন, মাসুদের পোস্টিং ছিল পিবিআই হেডকোয়ার্টারে। তাকে খুলনা কার্যালয়ে সংযুক্ত রাখা হয়েছিল। ধর্ষণ মামলার পর তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পিবিআইয়ের হেডকোয়ার্টারে চিঠি দেয়া হয়েছে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!