খুলনা, বাংলাদেশ | ২৮ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১৩ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  বরিশাল শেরে ই বাংলা মেডিকেলে আগুন, নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ৭ ইউনিট
  বিসর্জনে আজ শেষ হচ্ছে দুর্গোৎসব

কয়রার ট্রিপল মার্ডার মামলার তদন্তভার পরিবর্তনের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

কয়রায় আলোচিত ট্রিপল মার্ডার মামলায় প্রকৃত আসামিদের গ্রেপ্তার এবং সঠিক ও নিরপেক্ষ তদন্তে গতি ফেরাতে তদন্তভার পরিবর্তনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নিহতের পরিবার।

রোববার (২১ আগস্ট) খুলনা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নিহতের মা মোছা: কহিনুর খানমের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ছেলে মফিজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, নিহত হাবিবুল্লাহ তার ছোট ভাই। গেল বছরের ২৫ অক্টোবর রাতে হাবিবুল্লাহ, তার স্ত্রী বিউটি বেগম ও মেয়ে হাবিবা সুলতানা টুনিকে দুর্বৃত্তরা নির্মমভাবে হত্যা করে। পরেরদিন পার্শ্ববর্তী একটি পুকুর থেকে তাদের তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই দিন এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।

এ বছরের ১০ জানুয়ারি পুলিশ নিরীহ গ্রামবাসির কয়েকজনকে আটক করে তাড়াহুড়ো ভাবে সংবাদ সম্মেলন করে। সেখানে উল্লেখ করা হয়, বিকৃত যৌনলালসা, প্রতারণামূলক আর্থিক লেনদেন ও পরকীয়া সম্পর্কের জেরে তারা খুন হয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে তি‌নি জানান, পুলিশের দাবি অনুযা‌য়ি আলাদা-আলাদা ঘটনায় ক্ষিপ্ত ১৪-১৫ জন মানুষ একত্রিত হয়ে ওই রাতে ভাইয়ের (নিহত প‌রিবার) বাড়িতে যায়। সেখানে হাবিবুল্লাহ, তার স্ত্রী ও ভাইজিকে ধর্ষণের পর কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ময়নাতদন্তে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি। এছাড়া ওই রাতে এতগুলো মানুষ তাদের বাড়িতে গিয়ে হত্যা ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটালো তা নিশ্চয়ই কারও চোখে পড়ত। অথচ ঘটনার কোন প্রত‌্যক্ষ স্বাক্ষী নেই। পুলিশ তাদের বক্তব্য প্রমাণ করার জন্য গ্রেপ্তার হওয়া কয়েকজনকে দিয়ে জোরপূর্বক ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি করিয়েছে। তাদের মধ্যে একজন স্বীকারোক্তি প্রত্যাহারের জন্য আদালতে আবেদন করেছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উজ্জ্বল কুমার দত্ত বদলী হওয়ায় সাময়িকভাবে জেলা গোয়েন্দা শাখার এসআই সৌরভ কুমারকে তদন্তভার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু চূড়ান্তভাবে দায়িত্ব না দেওয়ায় তদন্ত কাজ থমকে আছে। দায়সারা গোছের তদন্ত তিনি চান না। সঠিক তদন্তে প্রকৃত ঘটনা সকলের সামনে উন্মোচিত হোক, এটা তার দাবি।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও দাবি করে বলেন, ট্রিপল মার্ডরের পেছনে সীমান পিলার ও তক্ষক সাপের ব্যবসা রয়েছে। এর আগে এ বিষয়টি নিয়েও খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। কিন্তু পুলিশ তদন্তে এ বিষয়টি সামনে আনছে না। মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া আসামি আব্দুর রশিদ সীমানা পিলার ও তক্ষক সাপ ব্যবসায় সরাসরি জাড়িত ছিল। হাবিবুল্লাহ এ ব্যবসার সাথে জাড়িয়ে পড়েছিল যা তিনি ভাইয়ের শ্বাশুড়ি ও শালিকার মাধ্যমে শুনেছেন।

হত্যাকাণ্ডের আগের দিন গ্রেপ্তার হওয়া আসামি বেল্লালের সাথে হাবিবুল্লার তক্ষক সাপ বেচাকেনা নিয়ে কথা হয়। যা আদালতে বেল্লাল স্বীকার করেছে। তাছাড়া ২৭ জুলাই পাইকগাছা থেকে সীমানা পিলার, তক্ষক সাপ ও প্রাইভেটকারসহ ৫ জন গ্রেপ্তার হয়। এদের মধ্যে সাকিল ওরফে জুয়েল ও বাবু ওরফে বাদশা বিভিন্ন সময়ে হাবিবুল্লার বাড়িতে এসেছে, যা এলাকার অনেকে দেখেছে। তার ধারণা উদ্ধার হওয়া ওই পিলারকে কেন্দ্র করে ভাই, ভাইয়ের স্ত্রী ও তার কন্যাকে হত্যা করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন হতে পারে।

মামলার তদন্তে গতি ফেরাতে তিনি সিআইডি অথবা পিবিআইয়ের কাছে প্রেরণের জন্য আদালতে আবেদন করেছেন। আগামী ৩১ আগস্ট মামলার ধার্য‌ দিনে আদালত সিদ্ধান্ত এ বিষ‌য়ে সিদ্ধান্ত দিবেন।

ট্রিপল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩ জন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। ১৪ জন আসামির মধ্যে ৫ জন জামিন পেয়েছেন। বাকীরা কারাগারে রয়েছেন।

খুলনা গেজেট/এমএনএস




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!