খুলনা, বাংলাদেশ | ২৯শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৩ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  ৬ষ্ঠ বছরে পদার্পণে খুলনা গেজেট’র সকল পাঠক, লেখক, সংবাদকর্মী, বিজ্ঞাপনদাতা ও শুভানুধ্যায়ীকে আন্ত‌রিক শুভেচ্ছা

মরিয়ম খেজুর চাষে সাফল্য কালিগঞ্জের কৃষক শোকর আলীর

রুহুল কুদ্দুস, সাতক্ষীরা

সা।তক্ষীরায় মরিয়ম খেজুর চাষে সাফল্য পেয়েছেন কালিগঞ্জের কৃষক শোকর আলী। ফলে দেশের মাটিতে মরিয়ম খেজুর চাষে খুলতে পারে সম্ভাবনার দ্বার। এক্ষেত্রে পথ দেখাচ্ছেন বিদেশের মাটিতে খেজুর চাষে অভিজ্ঞতা অর্জনকারি সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের কৃষক শোকর আলী। তার মাধ্যমে এলাকায় এখন মরিয়ম খেজুর চাষের সম্প্রসারণ হচ্ছে।

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার মৌতলা ইউনিয়নের নরহরকাটি গ্রামের এই কৃষক বাহরাইনে খেজুর বাগানে শ্রম দিয়ে অর্জন করেন বাস্তব জ্ঞান। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই দেশে ফিরে নিজের এলাকায় গড়ে তুলেছেন উন্নত জাতের খেজুরের নার্সারি। যা এখন দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলের কৃষিতে এক নতুন সম্ভাবনার নাম।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৮ সালে জীবিকার তাগিদে বাহরাইন যান শোকর আলী। সেখানে খেজুর বাগানে কাজ করতেন তিনি। ২০২১ সালে দেশে ফেরার সময় সঙ্গে এনেছিলেন উন্নত জাতের প্রায় ৫০টি খেজুরের বীজ।

নিজের বাড়ির আঙিনায় সেই বীজ রোপণ করেন তিনি। তা থেকে বের হয় চারা। পরে তার দুই ছেলের একজনকে পাঠান বাহরাইন ও অন্যজনকে সৌদি আরবে। পরে তাদের মাধ্যমে আরও উচ্চফলনশীল জাতের বীজ সংগ্র্রহ করে নার্সারি পরিপূর্ণ করে তোলেন। বর্তমানে তার নার্সারিতে ১০-১২ হাজার খেজুর চারা রয়েছে। এর মধ্যে বেশ কিছু গাছে ফল আসতে শুরু করেছে। গাছে গাছে ঝুলছে থোকায় থোকায় খেজুর।

কালিগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওয়াসিম উদ্দিন জানান, শোকর আলীর নার্সারিতে ইতিমধ্যে উন্নত জাতের কিছু গাছে ফলন দেখা দিয়েছে। এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। উপকূলীয় মাটি ও জলবায়ু বিবেচনায় পরীক্ষামূলক চাষ সফল হলে বড় পরিসরে সম্প্রসারণ করা সম্ভব। একই উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের শফিউল্লাহও সৌদি খেজুরের বীজ থেকে নিজের চিংড়িঘেরের বাঁধে খেজুর চাষ করে সফলতা পেয়েছেন।

সাতক্ষীরা হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক কৃষিবিদ আমজাদ হোসেন বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলের মাটি ও পানির বৈশিষ্ট্য স্থানভেদে ভিন্ন। তবে খেজুর একটি তুলনামূলকভাবে খরা ও লবণাক্ততা সহনশীল ফসল। তাই পরীক্ষামূলকভাবে ছোট পরিসরে বিভিন্ন এলাকায় খেজুর চাষ করে উপযোগিতা যাচাই করা যেতে পারে। যদি এসব পরীক্ষায় ইতিবাচক ফল পাওয়া যায়, তবে পরিকল্পিতভাবে বড় পরিসরে খেজুর চাষ সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব।
বাংলাদেশে প্রতিবছর রমজানসহ অন্যান্য সময়ে কয়েক হাজার মেট্রিক টন খেজুর আমদানি করতে হয়। দেশেই উন্নত জাতের খেজুর উৎপাদন শুরু হলে আমদানি নির্ভরতা কমে আসবে, বাড়বে কৃষকের আয়। বিশেষ করে দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলের লবনাক্ত জমিতে খরা সহনশীল খেজুর চাষ নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলতে পারে। একজন প্রবাসী শ্রমিকের দূরদর্শী চিন্তা আর সাহসী প্রয়াস এখন দেশের কৃষি উন্নয়নে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে। প্রয়োজন শুধু গবেষণা প্রতিষ্ঠান, কৃষি বিভাগ ও সরকারের যথাযথ সহায়তা। শোকর আলীর এই সবুজ স্বপ্ন বদলে দিতে পাওে উপকূলীয় কৃষির ভবিষ্যৎ।

খুলনা গেজেট/এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!