আগামী ২৫ জানুয়ারি পর্দা উঠছে যশোরের ঐতিহ্যবাহী মধুমেলার। এ উপলক্ষে বর্ণিল সাজে সাজানো হচ্ছে কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়ির মেলা প্রাঙ্গণ। বাংলা সাহিত্যের অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ২০১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী এ মেলার আয়োজন করা হচ্ছে।
কবির জন্মভূমির স্মৃতিবিজড়িত কপোতাক্ষ নদ পাড়ের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের লাখো মধুভক্তের উপস্থিতি শুরু হয়েছে। মেলা প্রাঙ্গণে ইতিমধ্যে আসতে শুরু করেছে বিভিন্ন প্রকার স্টল মালিকরা। মধুমেলা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। মেলা উপলক্ষে এলাকার মানুষের ভেতর দেখা দিয়েছে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা।
আগামী ২৫ জানুয়ারি মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ২০১তম জন্মবার্ষিকী। এ উপলক্ষে যশোর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সাগরদাঁড়িতে ২৪ জানুয়ারি থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী মধুমেলার আয়োজন করা হয়েছে। ২৪ জানুয়ারি (শুক্রবার) বিকেলে প্রধান অতিথি হিসেবে মধুমেলার উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী। মেলার উদ্বোধকের কাছে এবারও সাগরদাঁড়িতে মহাকবির নামে সংস্কৃতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিষয়টি জানানো হবে।
মহাকবির জন্মবার্ষিকী ঘিরে এবারের মেলায় সকলের ভেতর উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। মেলা প্রাঙ্গণের বিভিন্ন প্যান্ডেলসহ শিশুদের বিনোদনের সরঞ্জাম প্রস্তুত করা হয়েছে। স্থানীয় দোকানদারদের পাশাপাশি দূর-দূরান্ত থেকে আসা ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়েছেন। এছাড়া, যশোর শহরসহ কেশবপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মধুমেলার ফেস্টুন টাঙানোসহ প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত রয়েছে। দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য সপ্তাহব্যাপী সাগরদাঁড়ির মধুমঞ্চে আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের পাশাপাশি প্যান্ডেলে সার্কাস, যাদু প্রদর্শনী ও মৃত্যুকূপ থাকছে। রয়েছে শিশুদের জন্য নাগরদোলাসহ বিভিন্ন আয়োজন। এছাড়া, কুটির শিল্পসহ গ্রামীণ পসরা ও কৃষিমেলাও থাকছে। মধুপল্লী সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে। দর্শনার্থীরা মধুপল্লীতে কবির ভাস্কর্য, প্রসূতিস্থল, কাছারিবাড়ি, স্মৃতি বিজড়িত আসবাবপত্র ও ব্যবহার্য জিনিসপত্র দেখতে পারবেন।
মধুমেলা উপভোগ করার জন্য ইতিমধ্যে সাগরদাঁড়িসহ চারপাশের গ্রামগুলোতে আত্মীয়-স্বজন আসতে শুরু করেছে। অনেকেই মেয়ে-জামাই, বন্ধু-বান্ধবসহ অতিথিদের দাওয়াতও দিয়েছেন। প্রত্যেকটি বাড়িতে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। এবারের মেলায় কয়েক লাখ দর্শনার্থী ও মধুপ্রেমীদের সমাগম ঘটবে বলে স্থানীয়রা আশা প্রকাশ করেছে।
এ ব্যাপারে কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, সাগরদাঁড়িতে মধুমেলা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। মধুমঞ্চে সপ্তাহব্যাপী কেশবপুর ও যশোরের শিল্পীদের পাশাপাশি দেশবরেণ্য কবি, সাহিত্যিক ও শিল্পীরা অংশ নেবেন। এবারও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকেল মধুসূদন পদক প্রদান করা হবে। মেলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের পাশাপাশি প্রশাসন ব্যাপক তৎপর থাকবে। দর্শনার্থীদের মধুমেলা উপভোগ করতে যাতে কোন অসুবিধা না হয় তার সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এএজে