যশোর জেলা পরিষদ এবং সড়ক ও জনপদ বিভাগের রশি টানাটানির কারণে ৩৬৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের ওপর মণিরামপুর অংশের গাছ অপসারণ না করায় অনেকটা মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। মহাসড়কের ঝুঁকিপূর্ণ বাকে (মোড়) প্রায় মাঝ বরাবর বড় বড় গাছ থাকায় যে কোন সময় প্রাণহানির মত দূর্ঘটনার আশংকা করছেন স্থানীয়রা। সর্বমহলের দাবি উঠেছে মহাসড়কের উপর থেকে ঝুঁকিপূর্ণ গাছ কর্তন করে সড়ক নির্মাণের।
সংশ্লিষ্ট অফিস সূত্র জানায়, যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের রাজাহারহাট থেকে মণিরামপুর-কেশবপুর-চুকনগর পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৩৬৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ কাজ চলছে। মহাসড়কের ম্যাকাডমের কাজ প্রায় সম্পন্ন হওয়ার পথে রয়েছে। এ মহাসড়কের মণিরামপুর পৌর এলাকার খইতলা, বেলতলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনেসহ বিভিন্ন স্থানে সড়কের প্রায় মাঝ বরাবর প্রায় শত বছরের একাধিক মেহগনি গাছ রয়েছে। ওই স্থানগুলোতে ইতিপূর্বে একাধিক সড়ক দূর্ঘটনায় ট্রাকের চালকসহ অনেকের প্রাণহানি ঘটেছে। মহাসড়কের উপর থেকে সর্বশেষ গাছ অপসারণ না করার কারণ হিসেবে যশোর জেলা পরিষদ এবং সড়ক ও জনপদ বিভাগ নিজেদের দাবি করে বিরোধে জড়িয়েছেন।
এক পর্যায় জেলা পরিষদ নিজেদের গাছ দাবি করায় সড়ক ও জনপদ বিভাগ আইন জটিলতায় গাছ অপসারণ করতে পারেনি। মেগা প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করতে এক পর্যায় নিরুপায় হয়ে গাছ অপসারণ না করেই ওই গাছের গোড়া খুড়ে ম্যাকাডমের কাজ প্রায় শেষ পর্যায় রয়েছে। এতে করে যে কোন সময় ওই স্থানগুলোতে ঘটতে পারে বড় ধরনের দূর্ঘটনা।
স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর আইয়ুব পাটোয়ারী জানান, মহাসড়ক আগের চেয়ে চওড়া হচ্ছে। গাছগুলো মহাসড়কের প্রায় মাঝ বরাবর থাকায় দ্রুতগামী যানবাহন গাছের সাথে সংঘর্ষে প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে। তিনি দ্রুত গাছ অপসারণের দাবি করেন।
মণিরামপুর ফায়ার সার্ভিস ইউনিটের ইনচার্জ প্রনব কুমার বিশ্বাস বলেন, শীতের কুয়াশায় গাছ দেখতে না পাওয়ায় অগ্নিকান্ড ও সড়ক দূর্ঘটনার খবরে ঘটনাস্থলে যেতে চরম অসুবিধায় পড়তে হয়। তিনিও সড়কের উপর থেকে ওই গাছ দ্রুত অপসারণের দাবি করেছেন।
জানতে চাইলে বিষয়টি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে সড়ক ও জনপদ বিভাগের যশোর জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, তারা গাছ অপসারণের জন্য একাধিকবার জেলা পরিষদকে অবহিত করেছেন। তারপরও গাছ অপসারণ করা হয়নি। শীর্ষ প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করতেই বাধ্য হয়ে গাছ অপসারণ না করেই কাজ শুরু করতে হয়েছে।
মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ জাকির হাসান বলেন, ইতোমধ্যে জেলা সমন্বয় কমিটিতে গাছ অপসারণের বিষয়টি উত্থাপন করা হয়েছে।
জানতে চাইলে যশোর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল সাংবাদিকদের বলেন, সড়ক ও জনপদ বিভাগের পক্ষ থেকে চিঠি দিলেই টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গাছ অপসারণ করা হবে।
খুলনা গেজেট/এনএম