সাতক্ষীরার ভোমরায় ফলের গাড়ী থেকে ঘোষণা বহির্ভুত ভাবে আনা বিপুল পরিমান ভারতীয় অবৈধ থ্রি পিচ এবং ইমিটেশনের গহনা উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার (৪ এপ্রিল) বিকালে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা ও বিশেষ গোয়েন্দা শাখার দেওয়া গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বন্দর এবং কাস্টম কর্তৃপক্ষ এসব মালমাল উদ্ধার করে।
ভোমরা কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বগুড়ার মের্সাস অনি এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারী অনি নাথ সোমবার ভোমরা বন্দর দিয়ে ১২ টন কমলা লেবু আমদানি করে। সিএন্ডএফ ভোমরার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলামের রাফি এন্টারপ্রাইজের লাইসেন্স ভাড়া নিয়ে ওই মাল সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে কাস্টমস ছাড় করায় (বিল অফ এন্ট্রি) জনৈক মাসুদ হোসেন। ওই মাল সরকারি পার্কিং এ ভারতীয় ট্রাক-(পিবি-০৩-বিজি-৯৯৭৮) থেকে বাংলাদেশী দু’টি ট্রাক যশোর-ট-১১-৪৬৪৩ ও সাতক্ষীরা-ট-১১-০৪৫১ এ নামানোর প্রস্তুুতি নেয়া হচ্ছিল। এসময় বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার কাছে থাকা তথ্যের ভিত্তিতে বন্দর এবং কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ওই গাড়ীটিকে চ্যালেঞ্জ করে। পরে ওই লেবুর ট্রাকে বিশেষ কায়দায় লুকিয়ে রাখা মোট ১০২৯ টি কার্টুন উদ্ধার করে। কার্টুন গুলোর মধ্যে ৯১ টি কার্টুনে ভারতীয় থ্রি পিচ এবং ইমিটেশনে গহনা ছিলো। এর মধ্যে ১০৫৩ টি ভারতীয় উচ্চ মূল্যের থ্রি পিচ রয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য ৫৫ লক্ষ টাকা।
জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার ভোমরা বন্দরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ হাবিবুর রহমান জানান, কমলা লেবুর ক্যারেটের মধ্যে কয়েকটিতে ঘোষণা বহির্ভুত ভারতীয় থ্রি-পিচ ও শাড়ি পাচার করা হচ্ছে এমন গোপন খবরের ভিত্তিতে সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে ভারতীয় ওই ট্রাক আটক করা হয়। এসময় ভারতীয় ওই ট্রাকে থাকা ৯১টি লেবুর ক্যারেটের মধ্যে বিপুল পরিমান ভারতীয় ত্রি-পিচ দেখতে পাওয়া যায়।
ভোমরা কাস্টমস সুপার আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিশেষ গোয়েন্দা শাখার তথ্যের ভিত্তিতে রফি এন্টারপ্রাইজের ফলের গাড়ীতে অভিযান চালিয়ে এসব মালামাল জব্দ করা হয়েছে। রাতভর যাচাই-বাছাই শেষে মঙ্গলবার সকালে জব্দকৃত মালামালের সংখ্যা ও পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে ১০৫৩ টি ভারতীয় থ্রি পিচ ও ১শ’৫৪ কেজি ইমিটেশনের গহনা রয়েছে। যার মূল্য প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা।
ভোমরা শুল্ক স্টেশনের সহকারি কমিশনার আমির মামুন জানান, ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে থ্রিপিচ ও ইমিটেশনের গহনা আমদানি অবৈধ নয়। তবে ফলের ঘোষণায় থ্রিপিচ ও গহনা আনায় সেগুলোকে জব্দ করা হয়েছে। পণ্যগুলো শুল্কবিভাগের খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে পাঠানো হচ্ছে। সেখানে নিলামের ব্যবস্থা করা হবে ।
তিনি আরো জানান, ভোমরা স্থলবন্দর ইয়ার্ড থেকে মালামাল গুলো জব্দ করার সময় কাষ্টমস সদস্যসহ ওই দুটি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। কাগজ পত্র যাচাই বাছাই শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।
খুলনা গেজেট/ এস আই