সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আরো প্রায় ৪৬ মেট্রিকটন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ৩টি ট্রাকযোগে এসব পেঁয়াজ ভোমরা বন্দরে প্রবেশ করে। এনিয়ে গত ৪ দিনে ৯৭১ মেট্রিকটন ভারতীয় পেঁয়াজ ভোমরা স্থল বন্দর দিয়ে আমদানি হলো।
এদিকে গত চারদিনে ৯৭১ মেট্রিকটন ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি হলেও সাতক্ষীরায় পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশিল রয়েছে। বর্তমানে ভারতীয় আমদানি করা পেঁয়াজ পাইকারি বাজারে ৬০ টাকা এবং খুচরা বাজারে ৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সম্প্রতি আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের অধিকাংশ পচে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বাজারে দামের উপর কোন প্রভাব ফেলতে পারেনি। হঠাৎ করে রফতানি বন্ধ করে দেয়ায় ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে এসব পেঁয়াজ ভর্তি ট্রাক ভারতের ঘোজাডাঙ্গা বন্দরে আটকে থাকায় অধিকাংশ পেঁয়াজে পচন ধরে। এতে করে বাংলাদেশী আমদানিকারকরা ব্যাপকভাবে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন।
ভোমরা বন্দর সূত্রে জানাগেছে, এর আগে গত ১৯ সেপ্টেম্বর শনিবার ৩১টি ট্রাকযোগে ৭২১ মেট্রিক টন, ২০ সেপ্টম্বর ৫টি ট্রাকযোগে ১০৮ মেট্রিক টন এবং ২১ সেপ্টেম্বর ৪টি ট্রাকযোগে ৯৬ মেট্রিকটন এবং সব শেষ ২২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ৩ট্রাকে আরো ৪৬ মেট্রিকটন ভারতীয় পেঁয়াজ ভারতের ঘোজাডাঙ্গা স্থল বন্দর দিয়ে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরে প্রবেশ করে। তবে, এসব পেঁয়াজের বেশীরভাগই নষ্ট হয়ে গেছে।
সাতক্ষীরার ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম জানান, মঙ্গলবার সর্বশেষ আরো ৩ ট্রাক পেঁয়াজ ছাড় করানো রয়েছে। আজ বুধবার আরও কিছু পেঁয়াজ আসতে পারে। শতাধিক পেঁয়াজ বাহি ট্রাক ভারতে আটকে রয়েছে। যার অধিকাংশই কোন ছাড়পত্র দেয়া হয়নি। এরমধ্যে কিছু পেঁয়াজ ফিরে যাচ্ছে আর কিছু পেঁয়াজ সেখানে আনলোড করে স্থানীয়ভাবে বিক্রি করে ফেলছে ব্যবসায়ীরা। তবে, ভারতীয় পারে অপেক্ষমাণ এসব পেঁয়াজ রপ্তানির জন্য প্রস্তুতি থাকলেও তা প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে না দেশটির সরকার।
ভোমরা স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা মহসিন হোসেন জানান, গত ৪ দিনে ভোমরা বন্দর দিয়ে মোট ৯৭১ মেট্রিকটন পেঁয়াজ দেশে প্রবেশ করেছে। আরো কিছু পেঁয়াজের ট্রাক ভারত থেকে ভোমরা বন্দরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে না আসা পর্যন্ত নিশ্চিত করে বলা যাবে না।
সাতক্ষীরা শহর সুলতানপুর বড়বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সাতক্ষীরা চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক কামরুজ্জামান মুকুল জানান, অফসিজেনে দেশের বাজারে পেঁয়াজের মূল্য স্থিতিশিল রাখতে এককভাবে ভারত থেকে আমদানি নির্ভরতা কমাতে হবে। শুধুমাত্র ভারতের উপর নির্ভর না করে একই সাথে একাধিক দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে হবে। তাহালে কোন পূর্ব ঘোষনা ছাড়াই ভারত হঠাৎ করে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দিলেও দেশের বাজারে এর কোন প্রভাব পড়বে না।
তিনি আরো বলেন, এক বছর বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রাখতে হবে। এতে করে সাময়িক অসুবিধা হলেও দেশে পেঁয়াজ উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। নায্য মূল্য পেলে দেশের কৃষকরা অধিকহারে পেঁয়াজ উৎপাদনে আগ্রহী হবে। এতে করে দেশে পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশিল থাকবে। আমদানি নির্ভরতা কমালে দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়বে বলে তিনি জানান।
খুলনা গেজেট /এমএম