বিশ্ব ভালোবাসা দিবস আজ। দিবসকে কেন্দ্র করে নগরীর ফারাজী পাড়া ফুল মার্কেটে সাজ সাজ রব। গতকাল দুপুরের পর নানা স্থান থেকে ফুল আসতে শুরু করেছে। তারমধ্যে পরিমাণে বেশি লাল গোলাপের। তরুণ তরুণীদের পছন্দ এ রং। প্রতিটি ফুলের দাম নির্ধারণ হয়েছে ৫০ টাকা করে।
বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে ঢাকার আগারগাঁও, ঝিনাইদহের কালিগঞ্জ ও যশোরের গদখালী থেকে নানা নামের নানা রংয়ের ফুল এসেছে। সাথে আছে রজনীগন্ধার ষ্টিকার। তোড়া ও মালার চেয়ে বেশি চাহিদা গোলাপের। সেটাও লাল রংয়ের। দ্বিতীয় ধাপের পছন্দ সাদা, বেগুনি ও হলুদ রংয়ের গোলাপ। সাদা, বেগুনি ও হলুদ রংয়ের প্রতিটি গোলাপের দাম একশ’ টাকা। গাঁদা ও গ্লাডিয়াস এসেছে গদখালী থেকে। তবে পরিমাণে কম। এই দিনটির অপেক্ষায় ছিল ফুল মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। ২০১৯ থেকে ২০২২ পর্যন্ত ভালো ব্যবসা হয়নি, এ দিবসে। করোনা, ডেঙ্গু ও নিপাহ ভাইরাস কৃষি অর্থনীতি তছনছ করে দিয়েছে।
চাষী, মধ্যসত্বভোগী ও ব্যবসায়ীরা চার বছরে ঋণী হয়ে পড়েছে। মার্কেটে প্রতিটি দোকানের শ্রমিকদের মজুরীও গড়ে দৈনিক ৫০ টাকা করে বেড়েছে। ফুল মার্কেট জুড়ে আলোক সজ্জা। ৭ নং ঘাট, প্রেমকানন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, পীর খানজাহান আলী (রহঃ) ব্রীজ ও ভূতের আড্ডায় তরুণ-তরুণীরা মঙ্গলবার সকাল থেকে ভীড় করতে শুরু করবে। দুপুরের পর থেকে নাইট কুইন, বিয়ের ফুল , বিসমিল্লাহ ফুল ঘর, বেলি গার্ডেন, করবী পুষ্পালয়, ফুলের বাসর, পুষ্পমালা, জুঁই চামেলী, স্বপ্নের ঠিকানা, রজনীগন্ধা, ভ্যালেনটাইন্স ফ্লাওয়ার্স, দোলন চাপা, ফুলের মেলা, রোজ গার্ডেন নানা ফুল নিয়ে প্রস্তুত ভালোবাসা দিবসকে স্বাগত জানাতে। সিঙ্গেল গোলাপের সাথেও প্রস্তুত করা হয়েছে তরুণীদের মাথার ব্যন্ড। এটি সজ্জিত তাজা ও কৃত্রিম ফুল দিয়ে।
কথা হয় ভ্যালেন্টাইন্স ফ্লাওয়ার্সে সত্বাধিকারী নাজমুল হোসেন ও বিয়ের ফুলের মোঃ নাসিম কচি’র সাথে। তারা বলেন, বসন্ত বরণে খুব বেশি ফুলের চাহিদা ছিল না। বিশ্ব ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে বিগত দিনের লোকসান কাটাতে এবারে বড় আয়োজন। এখানকার প্রতিটি দোকানে গড়ে দুই হাজার করে লাল গোলাপ আনা হয়েছে। সাথে কিছু সাদা, হলুদ ও বেগুনী রংয়ের গোলাপও আমদানি হয়েছে। উৎপাদন কমের কারণে গোলাপের দাম বেড়েছে। বিনিয়োগ অনুযায়ী লাভ হবে বলে মনে হচ্ছে না। অনেক ফুল নষ্ট হয়ে যায়। এদিন প্রতিটি খাতে খরচও বাড়ে।
তারা আরও বলেন, লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসার সাথে জাড়িত ও কৃত্রিম ফুল ব্যবসায়ীরা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের নামে ক্ষতি করছে। হোটেলগুলোতে কাঁচা ফুল ব্যবহার করলে আমরা বাঁচতে পারবো।
ফুল মার্কেটের ব্যবসায়ীরা তাকিয়ে আছে একুশে ফেব্রুয়ারি, ১৭ মার্চ, ২৬ মার্চ, নববর্ষ ও ঈদুল ফিতরের দিকে। তাদের বিশ্বাস পরিবেশ ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনূকুলে থাকলে লোকসান কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে। এই সাথেই জোড়ালো আকুতি দক্ষিণ জনপদের কৃষি অর্থনীতি গদখালীর তাজা ফুল বাঁচাতে কৃত্রিম ফুল আমদানি বন্ধ করতে হবে।
উল্লেখ্য, এবারে খুলনার ফুল মার্কেটের দোকানগুলো আট লাখ টাকা বিক্রয় লক্ষ্যমাত্রা। ২০১৮ সালে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ লাখ টাকা।
খুলনা গেজেট/এইচ এইচ