খুলনা, বাংলাদেশ | ২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৭ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক গ্রেপ্তার

ভাষা মতিনের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

গেজেট ডেস্ক

আজ ৮ অক্টোবর, মহান ভাষা আন্দোলনের অন্যতম রূপকার ও ভাষা সংগ্রামী আব্দুল মতিনের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী। ভাষা আন্দোলনে অসামান্য অবদানের জন্য জাতির কাছে তিনি ‘ভাষা মতিন’ নামে পরিচিত ছিলেন।

ভাষা মতিনের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় নয়াপল্টনের যাদু মিয়া মিলনায়তনে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ তার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।

একুশে পদকপ্রাপ্ত মহান ভাষা আন্দোলনের অন্যতম প্রধান নেতা আবদুল মতিন ১৯২৬ সালের ৩ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের চৌহালি উপজেলার ধুবালীয়া গ্রামে এক মধ্যবিত্ত কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আব্দুল জলিল এবং মায়ের নাম আমেনা খাতুন। তিনি ছিলেন পরিবারের প্রথম সন্তান। জন্মের পর তার ডাক নাম ছিল গেদু। পরবর্তীতে সারা দেশে তিনি ভাষা মতিন নামে পরিচয় লাভ করেন।

১৯৩০ সালে গ্রামের বাড়ি যমুনায় ভেঙে গেলে আবদুল জলিল জীবিকার সন্ধানে ভারতের দার্জিলিংয়ে চলে যান। সেখানে জালাপাহার ক্যান্টনমেন্টে সুপারভাইস স্টাফ হিসেবে চাকরি নেন। ১৯৩২ সালে আব্দুল মতিন শিশু শ্রেণিতে দার্জিলিংয়ের মহারাণী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষা জীবন শুরু করেন।

১৯৩৩ সালে মাত্র ৮ বছর বয়সে আব্দুল মতিনের মা অ্যাকলেমশিয়া রোগে মারা যান। ১৯৩৬ সালে দার্জিলিং গভর্মেন্ট হাই স্কুলে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তি হন। তিনি ১৯৪৩ সালে এনট্রান্স (মাধ্যমিক সার্টিফিকেট পরীক্ষা) পরীক্ষায় ৩য় বিভাগ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে রাজশাহী গবর্মেন্ট কলেজে ইন্টারমিডিয়েটে ভর্তি হন। ১৯৪৫ সালে তিনি এইচ এস সি পরীক্ষায় তৃতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হন। আব্দুল মতিন ১৯৪৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাচেলর অব আর্টসে (পাশ কোর্স) ভর্তি হন। ১৯৪৭ সালে গ্রাজুয়েশন কোর্স শেষ করেন এবং পরে মাস্টার্স করেন ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন বিভাগ থেকে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষের দিকে আব্দুল মতিন ব্রিটিশ আর্মির কমিশন র‍্যাংকে ভর্তি পরীক্ষা দেন। দৈহিক আকৃতি, উচ্চতা, আত্মবিশ্বাস আর সাহসিকতার বলে তিনি ফোর্ট উইলিয়াম থেকে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে কমিশন পান।

১৯৫২ সালে বাংলাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার প্রথম যারা দাবি জানিয়েছিলেন আবদুল মতিন তাদের অন্যতম। সে বছর ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের ছাত্রসভায় সভাপতিত্ব করেছিলেন তিনি। শিক্ষার্থীদের সংগঠন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়কও তিনিই ছিলেন। তার সভাপতিত্বে কলাভবনের জনসভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ১৪৪ ধারা ভাঙার। তারই নেতৃত্বে একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলনের নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।

ভাষা আন্দোলনের পর তিনি ছাত্র ইউনিয়ন গঠনে ভূমিকা রাখেন এবং পরে সংগঠনটির সভাপতি হন। এরপর সক্রিয় হন কমিউনিস্ট আন্দোলনে। মওলানা ভাসানী ন্যাপ গঠন করলে তিনি ১৯৫৭ সালে তাতে যোগ দেন। ১৯৯২ সালে তিনি বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি গঠনে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন এবং ২০০৬ সালে ওই দল থেকে পদত্যাগ করেন।

ভাষা আন্দোলনে অবদান রাখায় ২০০১ সালে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় এবং সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার একুশে পদক লাভ করেন। আবদুল মতিন ২০১৪ সালের ৮ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। তিনি মরণোত্তর চক্ষু ও দেহদান করে গেছেন।

খুলনা গেজেট/ টি আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!