‘আমার মেয়ে বৃষ্টিকে ফিরিয়ে দিন। এক বছর আগে প্রতিবেশী রানা মোল্যা ও তার মামাতো ভাই সোয়ায়েব বিশ্বাস ফুসলিয়ে ভারতে নিয়ে যায় মেয়েকে। তখন থেকে বৃষ্টির আর কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। ২১ আগস্ট রবিবার ‘তপন বিশ্বাস’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ভারতের কোলকাতা মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অসুস্থ বৃষ্টির ছবি ও দেশে ফিরিয়ে নেয়ার পোস্ট করা হয়। সেটি দেখে মা তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য ব্যকুল হয়ে ওঠেন। প্রধানমন্ত্রীর নিকট আবেদন জানিয়েছেন মেয়েকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য।
বৃষ্টির মা বলেন, তার ৩ বছর বয়সি ছেলে আছে। সে আমাদের কাছে রয়েছে। আমার মেয়েকে রানা ও সোয়ায়েব ফুসলিয়ে ভারতে পাচার করে বিক্রি করেছে। তাদের আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখী করাতে হবে। শনিবার প্রতিবেদকের সঙ্গে একান্ত স্বাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন বৃষ্টির মা ওবাইদা বেগম।’
যশোরের অভয়নগর উপজেলার সিদ্ধিপাশা ইউনিয়নের নাউলী গ্রামের চাঁন মিয়া ফকিরের মেয়ে বৃষ্টি ফকির (১৫) তার স্বামী রানা মোল্যা ও তার মামাতো ভাই সোয়ায়েব বিশ্বাস কর্তৃক ভারতে পাচার হয়েছে বলে বৃষ্টির পরিবার দাবি করেছে। রানা মোল্যা উপজেলার শুভরাড়া ইউনিয়নের ইছামতি গ্রামের মিজানুর মোল্যার ছেলে এবং সোয়ায়েব বিশ্বাস একই গ্রামের শহিদুল বিশ্বাসের ছেলে।
গত ২১ আগস্ট রবিবার ‘তপন বিশ্বাস’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ভারতের কোলকাতা মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অসুস্থ বৃষ্টির ছবি ও দেশে ফিরিয়ে নেয়ার পোস্ট করা হয়। ফেসবুকের ওই পোস্টে লেখা রয়েছে- মেয়েটিকে আন্তর্জাতিক নারী পাচারকারীরা বাংলাদেশ থেকে ভারতে নিয়ে আসে। পরবর্তীতে মেয়েটি পাচারকারীদের কাছ থেকে পালাতে সক্ষম হয় । গত ১৮ আগস্ট মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পর তার জ্ঞান ফেরে। বর্তমানে মেয়েটি মালদা চাইল্ড কেয়ারে রয়েছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত রানা মোল্যার সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, ‘এক বছর পূর্বে বৃষ্টি তার আগের ঘরের এক ছেলেকে (তামিম) নিয়ে আমার ও সোয়ায়েবের সঙ্গে ভারতে যায়। সেখানে গিয়ে বৃষ্টির সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। কিছুৃদিন সংসার করার পর ছেলে তামিমকে ফেলে রেখে বৃষ্টি হারিয়ে যায়। পরবর্তীতে তাকে খুঁজে না পেয়ে তামিমকে নিয়ে আমি দেশে ফিরে আসি। স্ত্রীকে পাচার করার বিষয়ে জানতে চাইলে রানা বলেন, আমি এসব কাজের সঙ্গে জড়িত না। বৃষ্টি নিজেই হারিযে গেছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দীন বলেন, ‘ঘটনার সত্যতা পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অবশ্যই পাচার হওয়া মেয়েটিকে দেশে ফিরিয়ে আনার সব ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’