নতুন করে আইপি (আমদানির অনুমতি) না দেওয়ায় দেশের সব স্থলবন্দরের পাশাপাশি বেনাপোল বন্দর দিয়েও বন্ধ হয়ে গেছে ভারত থেকে আলু আমদানি। এর প্রভাবে বেনাপোলের বাজার গুলোতে ৫ টাকা বৃদ্ধিতে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে আলু।
গত শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) থেকে আলু আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে ভারত। আজ সোমবার সকালে সরেজমিনে স্থলবন্দরের বেনাপোল বাজারে গিয়ে জানা যায়, পুরনো আলু ৬৫ টাকা এবং নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। তিন দিন আগে বিক্রি হচ্ছিল ৬০-৭০ টাকায়।
বিক্রেতা রাশেদ আলী জানান, আলু আমদানি করলেও কি আর না করলেও কি। শীতের ভরা মৌসুমে ও আলুর বাজারে কমার কোন লক্ষণ দেখছি না। বিগত দুইমাস আলুর বাজার দর উর্ধ্বমুখি। খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি পুরান আলু ৬৫ টাকা ও নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়। আর পাইকারি পর্যায়ে প্রতি পাল্লা (৫ কেজি) পুরান আলু ৩১ থেকে ৩১৫ টাকা ও নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায়।
নাভারন বাজারের আড়ৎদার ইসমাইল হোসেন জানান, এখন চলছে আলুর পুরো মৌসুম। নতুন কোনও কারসাজি না হলে আলুর দাম আরও কমবে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণ আলু মজুত আছে। কারসাজি না করলে দাম বাড়ার কোনো শঙ্কা নেই।
বেনাপোল বাজারের বিক্রেতা শুকুর ব্যাপারী জানান, বাজারে আলুর পর্যাপ্ত যোগান রয়েছে। নতুন করে দাম বাড়বে না। ভারতের আলুর দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে সেটি সাময়িক। আমদানি শুরু হলে সেটির দামও কমবে।
এদিকে, বেনাপোল আমদানি-রফতানিকারক সমিতির সভাপতি মহসিন মিলন জানান, ভারত আলু রফতানি বন্ধ করেনি। বাংলাদেশই নতুন করে কোন আইপি (আমদানির অনুমতি) ইস্যু করেনি। বর্তমান আইপির মেয়াদ ছিল গত শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) পর্যন্ত। দু’একদিনের মধ্যে নতুন আইপির অনুমোদন হতে পারে।
একই সঙ্গে তিনি জানান, সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) নতুন ও পুরান মিলে বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে আলু আমদানি হয়েছে, যেগুলো পর্যায়ক্রমে খালাস হয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে যাচ্ছে। এসব আলু দেশের বাজারে এলে দাম আরও কমে যাবে বলে আশা করা যায়।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার বিভিন্ন বন্দর দিয়ে বিপুল পরিমাণ আলু আমদানি হয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই খালাস হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে যাচ্ছে। এর প্রভাবে আলুর বাজার অনেকাংশে কমে আসবে।
এর আগে, দেশের বাজারে আলুর বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে গত ৩০ অক্টোবর সরকার আলু আমদানির অনুমতিপত্র বা ইমপোর্ট পারমিট (আইপি) দেয়। সেই আইপির মেয়াদ ছিল গত ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। এরপর ব্যবসায়ীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমদানির সময়সীমা বাড়িয়ে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়। সে নির্দেশনা মোতাবেক গত বৃহস্পতিবার সর্বশেষ আলু আমদানি হয়েছে। নতুন করে আইপি ইস্যু না করলে আর আলু আমদানি হবে না।
বেনাপোল বন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধের উপসহকারী কর্মকর্তা হেমন্ত কুমার সরকার জানান, ভারত থেকে আলু আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে। সরকার আলু আমদানির নতুন করে নির্দেশনা না দিলে আলু আমদানি বন্ধ থাকবে।
খুলনা গেজেট/এনএম