যশোরের অভয়নগর উপজেলার ভবদহ এলাকার সুড়িরডাঙ্গা বিল ও কমলার বিলের বোরো আবাদ শুরু হয়েছে, স্বস্তি ফিরেছে কৃষকের মনে। নিজেদের উদ্যোগে এবং সেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে শুড়িরডাঙ্গা বিল ও কমলার বিলের পার্শবর্তী খালগুলোর কালভার্টে বাঁধ ও সেচ দিয়ে বোরো চাষের চেষ্টা করে যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলার সুন্দলী ইউনিয়নের শুড়িরডাঙ্গা ও কমলার বিলের পার্শবর্তী ৯টি গ্রামের জনগণ।
জনগণের উদ্যোগে এই প্রকল্পের কাজ হাতে নিয়ে প্রত্যেকটি কৃষকের কাছ থেকে সামান্য পরিমাণ অর্থ নিয়ে সেচ কার্যক্রম কাজটি করে সেচ প্রকল্প কমিটি। ২টি বিলে ভবদহের কারনে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় হার না মেনে সেচ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে বোরো মৌসুমে ফসল ফলাতে বিল দু’টিতে প্রায় ১২’শ বিঘা জমি চাষের আওতায় আনা হয়।
সরেজমিনে, সুড়িরডাঙ্গা ও কমলার বিলের বোরো আবাদে ব্যাস্ত কৃষকেরা। এলাকার চাষীরা জমির কুচুরিপনা পরিষ্কার করছে, বীজতলা তৈরী করছে, মই দিয়ে জমির মাটি লেভেল করছে, অনেকেই বীজতলায় সার ও বীজ বপন করছে। কথা হয় চাষী রাজাপুর গ্রামের হরেকৃষ্ণ রায়, রামসরা বিকাশ মন্ডল, আড়পাড়া বিরাট মন্ডল, হরিশপুরের মানিক মন্ডল, গোবিন্দপুরের অলোক মল্লিক, সুন্দলীর অশোক বিশ্বাস, ফুলেরগাতীর উজ্জল সরকার, আড়পাড়া গ্রামের প্রনব বিশ্বাস, হরিশপুর গ্রামের সুজিত মন্ডল ও প্রকাশ বিশ্বাসের সাথে। তারা বলেন, প্রায় ১মাস আগে বিলের চারিধারে অবস্থিত ৯টি গ্রামের জনগণ স্বেচ্ছাশ্রমে কালভার্টের নিচে বাঁধ তৈরী করে সেচ প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। শুরুতে পাম্প কম থাকলেও বোরো ধানের মৌসুম কাছাকাছি থাকায় দ্রুত বীজতলা তৈরী করছি, বীজ বপন ও চারা তৈরী করতে ভবদহের কারনে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা থেকে কৃত্রিমভাবে সেচ প্রক্রিয়া করে আমরা অনেক এগিয়ে নিয়েছি। আশা করছি ভবদহের এই অঞ্চলে বোরো আবাদ করে আমরা দু’বেলা দু’মুঠো খেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে বাঁচতে পারবো। অর্ধশত পাম্প দ্বারা এই সেচ প্রকল্প না হলে বোরো আবাদ করতে পারতাম না।
তারা আরও জানান, ভবদহ এলাকায় সুইচ গেট দিয়ে জল না সরায় আমরা আমডাঙ্গা খালের সাথে সংযুক্ত বিল সেচ কার্যক্রম করে বোরো আবাদের চাষ করছি। বোরো আবাদ করে কিছুটা হলেও এই অঞ্চলের মানুষ আশানুরূপ ফল পাবে। কমলার বিলের সেচ প্রকল্পের সভাপতি স্বপন সরকার বলেন, ৬ফুট জলের গভীরতা নিয়ে আমরা সেচ প্রকল্প শুরু করি। জলের পরিমান বেশি থাকায় আমাদের খরচ বেশি হয়েছে। তাতে করে আমরা ঘাটতিতে আছি। এই বিলে এখন প্রায় দু’শ বিঘা জমিতে কৃষকেরা বোরো আবাদ করতে পারবে।
অপরদিকে ২নং সুন্দলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সেচ প্রকল্পের সভাপতি বিকাশ রায় কপিল বলেন, এই অঞ্চলের কৃষকেরা অত্যন্ত গরীব, তাদের প্রচেষ্টায় আমরা সেচ প্রকল্প কার্যক্রম শুরু করি। যাতে করে এই অঞ্চলের কৃষকেরা বোরো আবাদ করে দু’বেলা দু’মুঠো ভাত খেতে পারে। উভয় প্রকল্প থেকে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সহযোগিতা কামনা করেন।
এব্যপারে সুন্দলী ব্লকের সুপার ভাইজার মো: সিদ্দিকুর রহমানের মোঠোফোনে জানান, এই এলাকার কৃষকেরা সেচ প্রকল্পের মাধ্যমে বোরো আবাদ করছে। এটি একটি ভালো উদ্যোগ। ভবদহের অঞ্চলের কিছু এলাকা অন্তত বোরো আবাদ করে ফসল ঘরে তুলতে পারবে।
খুলনা গেজেট / কেএম