খুলনা, বাংলাদেশ | ৩০ কার্তিক, ১৪৩১ | ১৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  রাজশাহীতে বাসচাপায় দুই মোটরসাইকেল আরোহীর নিহত
  ফ্যাসিবাদের শেকড় অনেক দূর ছড়িয়ে গেছে : আইন উপদেষ্টা
ব্রিগেড সমাবেশে নরেন্দ্র মোদি

‘জোরসে ছাপ, তৃণমূল সাফ’

মোহাম্মদ সাদউদ্দিন, কলকাতা

কলকাতার ব্রিগেড সমাবেশ থেকে শুধু বিজেপিকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানালেন না প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, এদিন তিনি পশ্চিমবঙ্গকে `সোনার বাংলা’ করার ডাক দিলেন। তিনি বলেন, একটানা ২০ বছর কংগেস, ৩৪ বছর বামফ্রন্ট সরকার, আর ১০ বছর তৃণমূল ক্ষমতায়। তারা পশ্চিমবঙ্গকে ধ্বংস করেছে। অথচ এই বাংলা ছিল জ্ঞান-বিজ্ঞানের, আলো জ্বালিয়েছিল। তাই বিজেপিকে ভোট দিন। আমার সবার বিকাশ ঘটাবো। এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সামনেই সুপারস্টার অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী বিজেপিতে যোগ দেন । ছিলেন তার সঙ্গে অসংখ্য টলিউড ও বলিউডের অভিনেতা-অভিনেত্রীরা।

নরেন্দ্র মোদি বলেন, এই ব্রিগেডের গ্রাউন্ডে আশেপাশে একদিকে স্বামী বিবেকানন্দ, নেতাজির জন্মস্থান, ঋষি অরবিন্দ এর জন্মস্থান তো অন্যদিকে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির জন্মভূমি। বিগত বছরগুলোতে অনেক বার এই স্লোগান উঠেছে ব্রিগেড চলো। এখানে রাজনৈতিক মানুষরা মিলে বাংলার যে হাল বানিয়েছে তা প্রজন্মের পর প্রজন্মের মানুষ সহ্য করেছে। এটা মানুষের ইচ্ছা শক্তি যে তাঁরা পরিবর্তনের আশা ছাড়েননি। কিন্তু মমতা দিদি মানুষের আশা ভঙ্গ করেছেন। এরা বাংলার মানুষের আশা ভঙ্গ করেছে। মা মেয়েদের উপর অত্যাচার করেছেন। কিন্তু মানুষের সাহসকে দমাতে পারেনি। এই ভিড় তার প্রমাণ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলা চায় উন্নতি, শান্তি। বাংলা চায় সোনার বাংলা। আমি দেখতে পাচ্ছি এইবার বিধানসভা নির্বাচনের একদিকে তৃণমূল আছে, বাম-কংগ্রেস আছে। অন্যদিকে বাংলার জনতা কোমর বেঁধে তৈরি হয়েছে। আজ বিজেপিকে আশীর্বাদ দেয়ার জন্য লক্ষ লক্ষ লোকের আগমন হয়েছে। সাধারণ মানুষ, বৌদ্ধিক লোক, শিল্পী সবাই নিজেদের আশীর্বাদ দিচ্ছে। সবার মনে একটাই ইচ্ছে। আমাদের বাংলা উপরে উঠুক। আজ আমাদের বাংলার ছেলে মিঠুন চক্রবর্তী ও উপস্থিত আছেন। তিনি তাঁর কর্মকান্ড লোকনাথ বাবার আশীর্বাদে লোকের কাছে পৌঁছাচ্ছেন।

তিনি বলেন, উপস্থিত সমস্ত মানুষ, মা, মেয়ে, যুবকরা আজ বাংলায় আসল পরিবর্তনের জন্য এসেছে। আমি আজ ব্রিগেডে আপনাদের আসল পরিবর্তনের বিশ্বাস দিতে এসেছি। বাংলায় উদ্যোগ বাড়ানো, বাংলার পুনর্নির্মাণ, সংস্কৃতি ঐতিহ্য রক্ষার বিশ্বাস দিতে এসেছি আমি। এখানে কৃষক, উদ্যোগী, মা, মেয়ে, যুবকদের জন্য আমরা ২৪ ঘন্টা দিন রাত কাজ করব। আমরা প্রত্যেক মুহূর্ত আপনাদের জন্য বাঁচব। আপনাদের সেবা করব। আপনাদের আশীর্বাদ নিয়ে শুধু নির্বাচন নয়, সব সময় আপনাদের হৃদয় জিতব আমাদের কাজ, পরিশ্রম দিয়ে। এখানে যে বিজেপি সরকার আসবে তাতে বাংলার লোকই প্রাধান্য পাবে। এখানে বিজেপি সরকারের মূল মন্ত্র হবে আসল পরিবর্তন। আসল পরিবর্তনের অর্থ হল এমন বাংলা যেখানে যুবকদের শিক্ষা, কাজের পর্যাপ্ত সুযোগ মিলবে, মানুষকে অন্য জায়গায় যেতে না হয়, ব্যবসার শ্রীবৃদ্ধি, ইনফ্রাস্ট্রাকচার হবে, যেখানে গরিবদেরও এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ হবে। উত্তরবঙ্গ হোক বা দক্ষিণবঙ্গ, শোষিত, আদিবাসী, শরণার্থী সবাইকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। যেখানে সবার সাথ, সবার বিকাশ হবে। তুষ্টিকরন হবে না। অবৈধ অনুপ্রবেশ হবে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার ৭৫ বছরে বাংলা যা হারিয়েছে, ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে সেটা আমার থেকে আপনারা বেশি ভালো জানেন। আমি আজ এই সঙ্কল্প করছি যা ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে তা ফিরিয়ে দেওয়া হবে। একটি নতুন সঙ্কল্প নিয়ে এগিয়ে যাবে। দেশের মতই আগামী ২৫ বছর বাংলার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। আগামী ৫ বছরের বিকাশ ২৫ বছরের সোপান তৈরি করবে। ২৫ বছর পর দেশ যখন স্বাধীনতার ১০০ বছর উদযাপন করবে তখন বাংলাই আবার দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। বাংলায় জীবনযাপনের জন্য সব রসদ মজবুত। কলকাতা হল সিটি অফ জয়। এখানে ভবিষ্যতের অনেক সম্ভবনা। কলকাতার ঐতিহ্য ধরে রেখে সিটি অফ ফিউচার বানানো সব। কিছুদিন আগেই একটি লিস্ট বেরিয়েছে উন্নত শহরের। এখানের মানুষের ইচ্ছে সেই লিস্টে কলকাতার নাম থাকবে। তার জন্য যা করা দরকার আমরা করব।

তিনি বলেন, কংগ্রেসের কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও এই স্লোগান দিয়ে বাম ক্ষমতায় এসেছে। আজ আমি জিজ্ঞেস করতে চাই সেই হাত আজ হাত সাদা কিকরে হয়ে গেল। যে হাত গুঁড়িয়ে দেওয়ার কথা বলতেন সেই হাত ধরেছে। মমতা দিদি মা মাটি মানুষের স্লোগান দিয়েছেন। বাংলার মানুষ যে আশা করেছিলেন সেই পরিবর্তন আসেনি। শ্রমিক, কৃষকদের জীবনে কোনো পরিবর্তন আসেনি। গরিব আরো গরিব হোক এইটাই হয়েছে। এখানে হাসপাতালে, স্কুলে, বেকারদের জীবনে, খুন খারাপের রাজনীতিতে কোনো পরিবর্তন আসেনি। আজ বাংলায় মা মাটি মানুষের যা পরিস্থিতি তা আপনারা জানেন। মায়েদের উপর হামলা হচ্ছে। ৮০ বছরের মায়ের উপর যে হামলা হয়েছে গোটা দেশ দেখেছে। বাংলায় খুব কম মা, মেয়ে আছেন যাঁরা কাঁদেন নি।

মোদি বলেন, বিজেপির ভিত্তি ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির তৈরি। বিজেপি সেই দল যার প্রতি বাংলার ঋণ অনেক। যা মেটানো সম্ভব নয়। দেশের সবচেয়ে বড় রাজ্য থেকে ছোট রাজ্যে বিজেপি শাসন করছে। পদ্মফুলে বাংলার মাটির গন্ধ লেগে আছে। তাই এইবার তৃণমূল পুরো সাফ। আপনারা বাংলার জন্য যে লড়াই ত্যাগ করেছেন আমি তাকে প্রণাম করি। বিজেপির কার্যকর্তাদের পরিবারের প্রতি আমরা সঙ্গে আছি। বাংলায় ভয়ের পরিস্থিতি ২ মের পর আর থাকবে না। সরকারি কর্মচারীদের বলছি কোনো রাজনৈতিক দলের কথায় কাজ করবেন না। ২০১৮ সালে মন্ত্র ছিল চুপচাপ পদ্মে ছাপ। এবার মন্ত্র জোরসে ছাপ, তৃণমূল সাফ।

খুলনা গেজেট/কেএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!