দায়িত্ব পালনে কারো প্রতি বৈষম্য না করেই স্বচ্ছতার ভিত্তিতে সকল কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। শিক্ষার্থীসহ সকল নারী শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারির মিলবে সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা। বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁদের নিরাপত্তার বিষয়ে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম নারী উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা খুলনা গেজেটকে দেয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে একথা বলেছেন।
দীর্ঘ ৮ বছর ৯ মাস পর গত ১২ অক্টোবর উপ-উপাচার্য হিসেবে যোগদান করেন খুবি’র রসায়ন ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা। মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৯০ এর ১৩ (১) ধারা অনুসারে তাঁকে চার বছর মেয়াদে নিয়োগ দেয়া হয়। নবনিযুক্ত উপ-উপাচার্য তাঁর এই নিয়োগের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য হিসেবে প্রথম একজন নারী নিযুক্ত হওয়ায় নারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও একটু বেশি উচ্ছ্বসিত। তাদের আনন্দ ও আবেগের বহি:প্রকাশ ঘটে ২১ অক্টোবর তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছা জ্ঞাপনের মধ্য দিয়ে। এসময় নারী কর্মকর্তারা বলেন, “খুবিতে নারী উপ-উপাচার্যের যোগদান আমাদেরকে প্রেরণা যুগিয়েছে।” জবাবে নবনিযুক্ত উপ-উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী কর্মকর্তা-কর্মচারিদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে সমৃদ্ধির সোপানে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাদেরকে নিষ্ঠার সাথে কাজ করার আহ্বান জানান।
উপ-উপাচার্য এ প্রতিবেদককে জানান, সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে চিন্তা করেই ইতিমধ্যে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সিসি ক্যামেরা বৃদ্ধি ও নিরাপত্তায় কর্মরত গার্ডের সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। যেহেতু দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ, সীমিত আকারে অফিসিয়াল ও অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে, তাই ক্যাম্পাস খুললে নারীসহ সকলের নিরাপত্তার বিষয়টি অবশ্যই নিশ্চিত করা হবে। প্রসঙ্গত, তিনি ২০১৪ সাল থেকে খুবিতে যৌন নিপীড়ন নিরোধ কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা ১৯৭০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি গোপালগঞ্জ সদরে জন্মগ্রহণ করেন। যশোর বোর্ড থেকে মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পাসের পরে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে বিএসসি (অনার্স), এমএসসি এবং পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ১৯৯৮ সালের ১৯ অক্টোবর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এফএমআরটি ডিসিপ্লিনে রসায়নের প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন এবং পরে রসায়ন ডিসিপ্লিন চালু হলে তাঁর পদটি সেখানে স্থানান্তরিত হয়। ২০১০ সালের ২৯ ডিসেম্বর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা প্রফেসর পদে যোগদান করেন। তিনি রসায়ন ডিসিপ্লিন প্রধান। এছাড়া গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের ভারপ্রাপ্ত প্রধানও ছিলেন।
নব-নিযুক্ত উপ-উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় এমন একটি প্রতিষ্ঠান যেখানে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয়। বিগত দিনে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় অনেকটা এগিয়েছে। এই অর্জনকে সুসংহত করতে শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে আরও প্রচেষ্টার দরকার। বিরাজমান সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশের ধারা বজায় রেখে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বিশ্ববিদ্যালয়কে আমরা সামনে এগিয়ে নিতে চাই। তিনি সততা ও নিষ্ঠার সাথে তাঁর উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে শিক্ষক-কর্মকর্তাসহ সকল মহলের সহযোগিতা কামনা করেন।
খুলনা গেজেট/এনএম