গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর ভারত থেকে ৬টি চালানে ৮৪টি ভারতীয় ট্রাকে ২ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন চিনি বেনাপোল বন্দরে আসে। এর মধ্য তিনটি চালানে এক হাজার ২৫০ মেট্রিক টন (৪২ ট্রাক) চিনি সরকার নির্ধারিত ট্যারিফ মূল্যে শুল্কয়ন করার পর খালাস দেয়া হয়। পরে বাংলাদেশ সুগার রিফাইনারি অ্যাসোসিয়েশন কম মূল্যে শুল্কায়নের অভিযোগ তুলে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানালে বাকি তিন চালান বন্দরে আটকা পড়ে যায়। সেই থেকে এখনো আমদানিকৃত চিনি বোঝাই ভারতীয় ট্রাকগুলো বন্দরের ভারতীয় ট্রাক টার্মিনালে দাঁড়িয়ে আছে। এসব ট্রাকের চালক ও হেলপাররা বন্দরের মধ্যে ট্রাকের মধ্যে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
চিনির আমদানিকারক সেতু এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধি সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী আবদুল লতিফ বলেন, ৬টি চালানের মধ্যে তিনটি চালান সরকার নির্ধারিত ট্যারিফ মূল্য পরিশোধ করে খালাস করেছি। কিন্তু সুগার রিফাইনারি অ্যাসোসিয়েশন হঠাৎ আমদানি মূল্য কম দেখানোর অভিযোগ তোলায় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ট্যারিফ মূল্য বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে বাকি তিনটি চালানের চিনি খালাস করতে পারছি না। প্রতিদিন ভারতীয় ট্রাক প্রতি ২ হাজার টাকা করে ডেমারেজ দিতে হচ্ছে। এছাড়াও বন্দরের চার্জ রয়েছে। দ্রুত সমাধান না হলে আমদানিকারক লাখ লাখ টাকা ক্ষতির মধ্যে পড়বেন।
তিনি আরো জানান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) প্রতি মেট্রিক টন চিনি ৪৩০ মার্কিন ডলারে শুল্কায়ন মূল্য নির্ধারণ (ট্যারিফ মূল্য) করে দিয়েছে চলতি বাজেটে। কিন্থু বাংলাদেশ সুগার রিফাইনারি অ্যাসোসিয়েশনের অভিযোগের পর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ প্রতি মেট্রিক টন ৫৭০ ডলারে শুল্ক পরিশোধের নির্দেশ দেয়। যার ফলে এই চিনি খালাস করে বাজারে বিক্রি করা সম্ভব নয়। বর্ধিত মূল্যে চিনি খালাস করলে কয়েক লাখ টাকা আর্থিক লোকসান হবে বলে আমদানিকারক চিনি খালাস করছে না।
ভারতীয় ট্রাকচালক আশিষ সরকার বলেন, আমদানি জটিলতায় ২৮ দিন ধরে চিনি নিয়ে বেনাপোল বন্দরে আটকে আছি। কবে খালাস হবে কিছুই জানি না। এই প্রচন্ড শীতে রাতে ট্রাকের মধ্যে থাকতে হচ্ছে। গোসল খাওয়া নিয়ে খুব কস্টের মধ্যে আছি।
এ বিষয়ে বেনাপোল কাস্টম হাউজের যুগ্ম কমিশনার মোঃ শাফায়েত হোসেন বলেন, চিনির তিনটি চালান বৈধ পন্থায় বন্দর থেকে খালাস হয়েছে। তবে যেহেতু আমদানি মূল্য বাড়ানোর বিষয়ে একটি অভিযোগপত্র এসেছে। বিষয়টি কাস্টমসের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন।
খুলনা গেজেট/কেডি