ভরণপোষণ না দিয়ে খুলনার পাইকগাছায় বৃদ্ধ পিতা-মাতাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয় সন্তানেরা। এ ঘটনায় তিন ছেলেকে আটক করেছে পুলিশ। আর পিতা-মাতার ভরণপোষণের দায়িত্ব নিল উপজেলা প্রশাসন।
এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে পাইকগাছা উপজেলার গদাইপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে। পিতা মেছের আলী গাজীর বয়স (৯৮) এবং মাতা সোনাভান বিবির বয়স (৮৬)। তাদের ৪ ছেলে ও ৫ কণ্যা সন্তান রয়েছে। পিতা-মাতার জায়গা জমি কয়েক বছর পূর্বে ৪ ছেলে লিখে নেয়। এরপর থেকে বড় ছেলে রওশন আলী গাজী মাকে খেতে দেয় এবং বাকি তিন ছেলে পালাক্রমে পিতা মেছের আলীকে খেতে দেয়। ঘটনার দিন সোমবার ২ আগষ্ট নিয়ম অনুযায়ী মেজ ছেলের পর ছোট ছেলের খেতে দেওয়া পালা। কিন্তু ছোট ছেলে পিতাকে খেতে না দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। অগত্য স্বামীর সাথে স্ত্রীও বাড়ি থেকে বের হয়ে এসে মানিকতলা বাজারে একটি দোকানে আশ্রয় নেয়।
খবর পেয়ে রাত ১০ টার দিকে মানিকতলা বাজারে আসেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ বি এম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী। ঘটনার সত্যতা যাচাই পূর্বক খুঁজে বের করেন চার ছেলেকে। গদাইপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গাজী জুনায়েদুর রহমান ও স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে চার ছেলেকে ডেকে ঘটনার বিস্তারিত শোনেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী। পরে বড় ছেলে রওশন গাজীর জিম্মায় বৃদ্ধ পিতা মেছের আলী গাজী ও মাতা সোনাভান বিবিকে রেখে বাকি তিন ছেলে মতলেব গাজী, মশিয়ার গাজী ও মোশাররফ গাজীকে থানা পুলিশে সোপর্দ করেন।
এদিকে বৃদ্ধ পিতা মাতার জন্য বালতি, জগ, মগ, গামছাসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের একটি সেট এবং একমাসের খাবার দিয়ে আসেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী জানান, এই বৃদ্ধ পিতা মাতার খাদ্য, চিকিৎসা, পোশাকসহ যাবতীয় ব্যয়ভার এখন থেকে উপজেল প্রশাসন স্থানীয় চেয়ারম্যান এর মাধ্যমে বহন করবে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গাজী জুনায়েদুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি সার্বক্ষণিক তাদের খোঁজ খবর নিচ্ছি। বর্তমানে তারা ভালো আছেন। কোন অসুবিধা হচ্ছেনা।
থানার ওসি মোঃ এজাজ শফি জানিয়েছেন, আটককৃতরা তাদের বৃদ্ধ পিতামাতাকে দেখাশুনা ও ভরণপোষণ করেনা। সামাজিকচাপে ভরণপোষণের দায়িত্ব নিলেও তারা ঠিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করেনা। এমনকি বাবা-মাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। ওসি জানান, আটকৃতদেরকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। বিষয়টি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
খুলনা গেজেট/ টি আই